প্রিমিয়াম ভ্যাকুয়াম এখন তুলনামূলক হাতের নাগালে
এই বছরের ব্ল্যাক ফ্রাইডে ঘিরে নিজেদের প্রিমিয়াম ইমেজ ধরে রেখেই চমক দেখাচ্ছে ডাইসন। সবচেয়ে দামী রোবট ভ্যাকুয়াম থেকে শুরু করে জনপ্রিয় কর্ডলেস স্টিক মডেল—একাধিক ডিভাইসে এক ঝটকায় ৬০০ ডলার পর্যন্ত মূল্যছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণত উচ্চমূল্য ও ডিজাইনের জন্য পরিচিত এই ব্র্যান্ডের এমন আগ্রাসী অফার দেখিয়ে দিচ্ছে, স্মার্ট–হোম বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি তীব্র। একই সঙ্গে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপে অনেক পরিবার বড় কেনাকাটা ঠেকিয়ে রাখায়, ব্ল্যাক ফ্রাইডে–কেন্দ্রিক ডিসকাউন্টকে ডাইসন ব্যবহার করতে চাচ্ছে “উন্নত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা”য় বিনিয়োগের সুযোগ হিসেবে।

ডিলের আওতায় থাকা রোবট ভ্যাকুয়ামগুলো ঘরের মানচিত্র তৈরি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কক্ষ পরিষ্কার করতে পারে, আর স্টিক ভ্যাকুয়ামগুলো সহজেই গাড়ি কিংবা টাইট কর্নার পরিষ্কারের জন্য হ্যান্ডহেল্ড ইউনিটে রূপ নেয়। বেশ কিছু বান্ডেল অফারে অতিরিক্ত ব্রাশ, ফিল্টার ও ডকিং স্টেশন যোগ করেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রথমবার ডাইসনের ইকো–সিস্টেমে ঢুকতে চাওয়া ব্যবহারকারীরা একবারেই পুরো সেট পেয়ে যান। খুচরা বিক্রেতারা প্রচারণায় জানিয়েছে, অফারগুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য; ফলে ক্রেতাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাপও তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে টেক বিশ্লেষকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই ধরনের উল্লেখযোগ্য ছাড় প্রমাণ করে যে, প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেক পণ্য আগেই খানিকটা বেশি দামে বাজারজাত করা হয়েছিল।

কর্ডলেস যুগ, প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ড ও দীর্ঘমেয়াদি মূল্য
বর্তমানে কর্ডলেস ভ্যাকুয়ামের বাজার এতটাই ভিড়াক্রান্ত যে, নতুন কোনো মডেল নিজেকে আলাদা করে তুলতে না পারলে দ্রুত পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। অনেক ব্র্যান্ডই এখন দীর্ঘ ব্যাটারি ব্যাকআপ, অতিরিক্ত ব্যাটারি বা বেশি শক্তিশালী মোটর দিয়ে ডাইসনের বিকল্প হাজির করছে, প্রারম্ভিক দামে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রেখেই। ডাইসন তাই ব্ল্যাক ফ্রাইডে–কে ব্যবহার করছে এমন এক সময়ে, যখন মধ্য–মেয়াদি দামের মডেল থেকে গ্রাহকদের প্রিমিয়াম সেগমেন্টে টেনে আনার বাড়তি প্রণোদনা দরকার। ডিসকাউন্টের ফলে যারা দীর্ঘদিন ধরেই ব্র্যান্ডটির দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তাদের জন্য এখনই হতে পারে আপগ্রেডের উপযুক্ত সময়।

তবে প্রশ্ন উঠছে, স্বল্পমেয়াদি সাশ্রয় কি দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে সত্যিই লাভজনক হবে? কর্ডলেস ভ্যাকুয়ামে সাধারণত ব্যাটারি–আয়ু, ব্যাটারি বদলানো ও আসল যন্ত্রাংশের দাম—এসব নিয়ে ব্যবহারকারীদের উদ্বেগ বেশি। ভোক্তা–অধিকার সংগঠনগুলো অনেক দিন ধরে প্রস্তুতকারকদের কাছে যন্ত্রাংশ সহজলভ্য ও রিপেয়ার–ফ্রেন্ডলি করার দাবি জানাচ্ছে, যাতে পণ্যটির আয়ু বাড়ে এবং ই–বর্জ্য কমে। কিন্তু প্রচারণা–বার্তায় এখনোও “এখনই কিনুন”, “এত ছাড় আর পাবেন না”—এই পরিচিত ভাষাই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। পোষাপ্রাণী, কার্পেট বা ব্যস্ত সময়সূচির পরিবারগুলোর জন্য, অল্প দামে শীর্ষ মানের একটি ভ্যাকুয়াম কেনার সুযোগ যথেষ্ট প্রলুব্ধকর, যদিও ভবিষ্যতে ব্যাটারি ও ফিল্টার বদলানোর বাড়তি খরচের হিসাব মাথায় রাখতে হবে।