ডিমকে সাধারণত সুপারফুড বলা হয়, কারণ এতে প্রোটিনসহ নানা প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ থাকে। ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, সেলেনিয়াম, কোলিনসহ অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিডে ভরপুর এই খাদ্য শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে, হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ডিমের প্রোটিন সহজপাচ্য, উচ্চমানের অ্যামিনো অ্যাসিডসমৃদ্ধ এবং অপুষ্টি প্রতিরোধে কার্যকর। এটি শিশুদের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে, কোয়াশিওরকর থেকে সুরক্ষা দেয়, ক্ষুধা কমিয়ে পরবর্তী খাবারের ক্যালোরি গ্রহণও কমাতে সহায়তা করে।
ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ডিম দিয়ে তৈরি বহু স্থানীয় পদ রয়েছে। নিচে দশটি জনপ্রিয় আঞ্চলিক ডিমের পদ তুলে ধরা হলো।
![]()
বাঙালি ডিমের দালনা – পশ্চিমবঙ্গ
এটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি ডিমের তরকারি। সেদ্ধ ডিম ও আলু হালকা করে সরিষের তেলে ভেজে পেঁয়াজ, টমেটো, আদা-রসুন বাটা এবং বাঙালি গরম মসলার মিশ্রণে তৈরি নরম ঝোলের মধ্যে রান্না করা হয়। এটি ভাত বা লুচির সঙ্গে খুবই জনপ্রিয়।
![]()
মুট্টা রোস্ট – কেরালা
কেরালার এই ডিমের পদটি ক্যারামেলাইজড টেক্সচারের জন্য বিখ্যাত। সেদ্ধ ডিম নারকেল তেলে পেঁয়াজ, আদা-রসুন, টমেটো, কারি পাতা, কাঁচা মরিচ এবং কালো গোলমরিচ দিয়ে ধীরে ধীরে ভেজে তৈরি করা হয়। এটি আপ্পাম, নীর দোসা, কেরালা পরোটা বা ভাতের সঙ্গে খেতে দারুণ।
![]()
এগ চেট্টিনাড – তামিলনাড়ু
এটি ভারতের অন্যতম ঝাল ডিমের কারি। এতে ভাজা নারকেল, মৌরি, গোলমরিচ, কারি পাতা, লাল মরিচ এবং বিভিন্ন মসলার মিশ্রণে তৈরি ঘন ঝাল গ্রেভি ব্যবহৃত হয়। ইডিয়াপ্পম, পরোটা বা ভাতের সঙ্গে এটি সবচেয়ে ভালো খেতে লাগে।
![]()
এগ ভুর্জি – মহারাষ্ট্র
মুম্বাই-স্টাইল এগ ভুর্জি মূলত পেঁয়াজ, টমেটো, কাঁচা মরিচ, আদা-রসুন, হলুদ এবং ধনেপাতা দিয়ে তৈরি ঝাল স্ক্র্যাম্বল্ড এগ। এটি সাধারণত পাভের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
![]()
আন্ধ্রা এগ পুলুসু – অন্ধ্র প্রদেশ
এটি টক-ঝাল স্বাদের একটি ডিমের তরকারি, যেখানে সেদ্ধ ডিম তেঁতুলের ঝোলের মধ্যে লাল মরিচ, কারি পাতা, সরিষার দানা এবং সামান্য গুড় দিয়ে রান্না করা হয়। ভাত বা রুটির সঙ্গে এটি খুবই জনপ্রিয়।
![]()
নার্গিসি কোফতা – লখনউ, উত্তর প্রদেশ
মুঘলাই ঐতিহ্যের এই পদে সেদ্ধ ডিমকে কিমা মাংসের আবরণে মুড়ে হালকা ভেজে পেঁয়াজ, টমেটো, দই এবং এলাচ, লবঙ্গ ও জায়ফলের মতো মসলায় তৈরি সমৃদ্ধ গ্রেভিতে রান্না করা হয়। নান, রুমালি রুটি বা ভাতের সঙ্গে এটি পরিবেশন করা হয়।
![]()
এগ রাসা – ওড়িশা
ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী এগ রাসা হলো নরম মসলা ডিমের ঝোল। সরষে, জিরা, রসুন, পেঁয়াজ এবং স্থানীয় হালকা মসলার মিশ্রণে এটি রান্না করা হয়। ভাতের সঙ্গে খেতে দারুণ।
![]()
এগ পাউচ – বিহার
বিহারের জনপ্রিয় স্ট্রিট-স্টাইল ডিমের পদ, যেখানে লাডেল বা ছোট ফ্রাইপ্যানে ডিম ভেজে তার সঙ্গে পেঁয়াজ, টমেটো, ক্যাপসিকাম এবং মসলার মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়। এটি স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া হয়, আবার ভাত বা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
![]()
এগ ঘোটালা – গুজরাট
এই পদে সেদ্ধ ডিম হালকা ভেঙে বা স্ক্র্যাম্বল করে পেঁয়াজ, টমেটো, কাঁচা মরিচ, আদা-রসুন এবং বিশেষ গুজরাটি মসলার সঙ্গে রান্না করা হয়। এটি পাভ বা রুটির সঙ্গে দারুণ লাগে।
![]()
এগ আপ্পাম – কেরালা ও তামিলনাড়ু
দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় প্রাতঃরাশ ও রাতের খাবারের এই পদে বিশেষ প্যানে রান্না করা চালের আপ্পামের মাঝখানে কাঁচা ডিম ভেঙে দিয়ে হালকা ভাপে রান্না করা হয়। লবণ ও গোলমরিচ ছিটিয়ে এটি পরিবেশন করা হয়। সবজি বা মাংসের নারকেল স্টুর সঙ্গে এটি খেতে সবচেয়ে ভালো।
#ডিমের_পদ #ভারতীয়_রান্না #রেসিপি #ফুডকালচার #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















