মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস দাবি করেছেন, দিল্লির লালকেলায় সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের পেছনে পাকিস্তানের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল। তাঁর অভিযোগ— ভারতের বিভিন্ন শহরে ধারাবাহিক বোমা হামলার ছক ছিল পাকিস্তানের।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস বলেছেন, দিল্লির লালকেলায় যে বিস্ফোরণ ঘটেছে তার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, সরাসরি যুদ্ধে পরাজিত হতে জানে পাকিস্তান, তাই তারা সারা দেশে ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিল।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ
ফড়নবীস জানান, পাহালগামে হামলা ও দিল্লির বিস্ফোরণ— দুটোই পাকিস্তান-পরিচালিত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অংশ। তাঁর মতে, ভারতকে যুদ্ধে হারানো সম্ভব নয় বুঝেই পাকিস্তান গুপ্তচর ও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সক্রিয় করেছে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সম্প্রতি ‘হোয়াইট কলার টেরর মডিউল’ ভেঙে দিয়ে ৩,০০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে, যা মুম্বাইসহ দেশের বিভিন্ন শহরে হামলার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত ছিল।
‘পুরো দেশে বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা ছিল’
ফড়নবীস বলেন,
“তাদের পরিকল্পনা ছিল ভারতের প্রতিটি প্রান্তে বোমা ফাটানো। বহু শহর ছিল নিশানায়, মুম্বাইও তার মধ্যে। ভারতীয় সংস্থাগুলো সময়মতো বুঝতে পেরে প্রতিরোধ করায় তারা দিল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে দিল।”
‘সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং সেনাবাহিনীকে স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিশ্ব ভারতীয় সক্ষমতা দেখেছে, এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই এখনও শেষ হয়নি।
২৬/১১ স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য
ফড়নবীস শনিবার মুম্বাইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায় ২৬/১১ হামলার ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন। ‘গ্লোবাল পিস অনার্স: রিমেম্বারিং দ্য হিরোজ অফ 26/11 অ্যান্ড ভিকটিমস অফ পাহালগাম অ্যাটাক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে দিব্যাজ ফাউন্ডেশন, যার নেতৃত্বে আছেন অমৃতা ফড়নবীস।
তিনি বলেন,
“১৭ বছর পরেও আমাদের হৃদয়ের ক্ষত শুকায়নি। পাকিস্তানি জঙ্গিরা ২৬/১১-তে যে নৃশংস হামলা চালিয়েছিল, তা ছিল দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত।”
‘একজোট থাকলে আমরা নিরাপদ’
ফড়নবীস বলেন,
“আমরা শহীদদের সম্মান জানাতে একত্রিত হয়েছি। সন্ত্রাসের হুমকি এখনও আছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে— দেশের চোখ-কান হয়ে। আমরা এক থাকলে দেশ নিরাপদ থাকবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলিউড অভিনেতা রণবীর সিংহ, অভিনেতা শাহরুখ খান, গায়ক শঙ্কর মহাদেবন–সিদ্ধার্থ মহাদেবন, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে, শিল্পপতি নীতা আম্বানি, অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি সহ বহু বিশিষ্টজন।
‘মুম্বাইয়ে হামলা মানে দেশের ওপর আঘাত’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,
“এটি শুধু তাজ বা ট্রাইডেন্ট হোটেলের ওপর হামলা ছিল না। মুম্বাই ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী। মুম্বাইকে লক্ষ্য করে হামলা মানে দেশকে লক্ষ্য করা।”
তিনি আরও দাবি করেন,
“যদি আমরা তখনই ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মতো পদক্ষেপ নিতাম, কেউ আবার ভারতকে আক্রমণের সাহস পেত না।”
২০২৫ সালের মে মাসে ভারত সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসী স্থাপনায় লক্ষ্যভেদী হামলা চালায়, যা করা হয়েছিল একই বছরের এপ্রিলের পাহালগাম হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর।
ফড়নবীসের বক্তব্যে স্পষ্ট— তাঁর মতে পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে সারা দেশে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছে, এবং দেশকে রক্ষা করতে জনগণ থেকে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি— সবাইকে একজোট হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















