প্রবণতা ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
১৫০ বছর আগে, যখন অ্যাপল আইপ্যাড স্কুলগুলোতে বিক্রি করত, তখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিক শিক্ষক ইভ্যাঞ্জেলিনাস অ্যাপোস্টলিডিস সোফোক্লিস ১৮৫৭ সালে “ব্লু বুক” নামে পরিচিত পরীক্ষার বইগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। এই বইগুলো ছিল মৌখিক পরীক্ষার পরিবর্তে লিখিত পরীক্ষার জন্য। তবে তিনি হেরে গিয়েছিলেন। এই বইগুলো আমেরিকান শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে পীড়া দিত, যার পরবর্তী সময়গুলোতে কম্পিউটারাইজড পরীক্ষা চালু হয়। তবে বর্তমানে ব্লু বুক আবার ফিরে এসেছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এর বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে। এছাড়া মৌখিক পরীক্ষাও নতুন করে জনপ্রিয় হচ্ছে।
ডিজিটাল টুলসের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা
আজকাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা চীটিংয়ের জন্য ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করতে পারে, এই কারণে শিক্ষকেরা এখন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যেমন, রুটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক লরা লোমাস শিক্ষার্থীদের একটি নাটক দেখতে বলতেন, যার সমাপ্তি প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়, যাতে তিনি নিশ্চিত হতে পারেন যে তারা সেখানে ছিল। আরও, কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মৌখিক উপস্থাপনা দিতে বলেন, যাতে তারা AI-সাপোর্টেড পাওয়ারপয়েন্টের বদলে নিজেদের মতামত দিতে পারে। সারা ব্রক, নিউ ইয়র্কের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের হাতে লিখে কাজ করতে বলেন।

চ্যাটজিপিটি এবং শিক্ষার নতুন পথ
২০২৩ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬৬% শিক্ষক চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের কারণে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট পরিবর্তন করেছেন। এর মধ্যে ৭৬% শিক্ষার্থীকে হাতে লিখে কাজ করতে বলেন এবং ৮৭% শিক্ষিকা মৌখিক উপস্থাপনা সংযোজন করার কথা বলেন। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পাইলট প্রোগ্রামে পরীক্ষার সময় প্রোক্টররা শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থেকে পরীক্ষার ওপর নজর রাখেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার রূপান্তর
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক মনে করেন যে শিক্ষার্থীদের অরিজিনাল পরীক্ষার প্রতি ফোকাস করা উচিত। ডেরেক ভায়ান্ট, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, বলেন যে, বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পর্যাপ্ত শিক্ষক সহায়তা প্রদান করে না এবং শিক্ষকেরা যে পরিবর্তন চাচ্ছেন তা বাস্তবায়িত করতে প্রশাসনিক সহায়তা দরকার।

ডিজিটাল ব্যবহারে বৈষম্য
পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২৪ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৮% হিস্পানিক এবং ৫৩% কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরেরা প্রায় প্রতিনিয়ত ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তবে সাদা কিশোরদের মধ্যে এই সংখ্যা ছিল ৩৭%। ডিজিটাল বৈষম্য এখন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
শিক্ষার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
আজকের যুগে, শ্রেণীকক্ষে শান্ত ও অপ্রতিরোধ্য সময় প্রদান করা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিউ ইয়র্কের হান্টার কলেজ হাই স্কুলের এক শিক্ষক হাতে লিখে কোডিং অ্যাসাইনমেন্ট পুনরায় চালু করেছেন, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের মেধা ও চিন্তা শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
আজকের যুগে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রতিরোধ্য সময় দেওয়া, যেখানে তারা শুদ্ধভাবে চিন্তা করতে এবং শিখতে পারে।
#ডিজিটালটুলস #শিক্ষাশাস্ত্র #চ্যাটজিপিটি #মৌখিকপরীক্ষা #লিখিতপরীক্ষা #শিক্ষারপরিবর্তন #অ্যাডভান্সডএআই
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















