০৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে আগুন ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ১২ ধরনের উপহার—উদ্দেশ্য একটাই, যাত্রা একটু আরামদায়ক করা কেন্ড্রিকের সঙ্গে এবার স্পিল্ট মিল্কে জেনেসিস ওউসু ও লটে গ্যালাগারও পঞ্চাশের পর হঠাৎ বাড়ছে অটোইমিউন রোগ: ‘স্বাভাবিক বার্ধক্য’ ভেবে ঝুঁকি নিচ্ছেন অনেকে ভিয়েতনাম–থাইল্যান্ডে ভয়াবহ বন্যা: টানা বর্ষণে ডুবে যাচ্ছে গ্রাম–শহর নেক্সপেরিয়া চিপ সংকটে আবার কাঁপছে বিশ্ব গাড়ি শিল্প জার্মানিকে পাশে টেনে বিরল খনিজে নতুন সমীকরণ গড়তে চাইছে চীন রাশিয়ার পুনর্গঠন বদলে দিচ্ছে দখলে নেওয়া মারিউপোল ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুতে শোক—নিখিল সিদ্ধার্থের আবেগঘন স্মৃতিচারণ ধর্মেন্দ্র: বলিউডের সর্বাধিক সফল অভিনেতা কেন কখনো ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি

পারমাণবিক বিদ্যুতে ‘র‍্যাডিকাল রিসেট’ চায় যুক্তরাজ্য, খরচ–বিলম্বে ক্ষুব্ধ বিশেষজ্ঞরা

নিয়ন্ত্রক জটিলতা কাটিয়ে অগ্রগতি চান নীতিনির্ধারকেরা
যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাতে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া দেশটির জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে—এমন কঠোর ভাষার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সরকার–নিযুক্ত এক স্বাধীন পর্যালোচনা প্যানেল। পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, একাধিক সংস্থার দ্বৈত নজরদারি, দীর্ঘসূত্রতা ও অতিরিক্ত আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে ব্রিটেন এখন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক প্রকল্প–গন্তব্যগুলোর একটি। এই বাস্তবতায় রিপোর্টে ৪৭ দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে; যার মধ্যে আছে সব অনুমোদন সমন্বয়ের জন্য “ওয়ান–স্টপ শপ” ধরনের নতুন সংস্থা গঠন, পরিবেশ ও নিরাপত্তা মূল্যায়নের ধাপগুলো কার্যকরভাবে একীভূত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া। সরকার আশা করছে, এ ধরনের পরিবর্তন পূর্ব ইংল্যান্ডে নির্মাণাধীন সাইজওয়েল সি–এর মতো বৃহৎ প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ায় গতি আনবে, যেখানে ইতোমধ্যে প্রায় ১৪ বিলিয়ন পাউন্ড সরকারি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্পষ্ট ও পূর্বানুমেয় নীতিমালা থাকলে ব্যক্তিখাতের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন সহজ হবে এবং শেষ পর্যন্ত করদাতা ও সাধারণ ভোক্তার ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমতে পারে।

নেট–জিরো লক্ষ্য, নিরাপত্তা ও খরচের টানাপোড়েন
লেবার সরকার এই পর্যালোচনাকে তাদের ঘোষিত “নতুন পারমাণবিক যুগ” গড়ার ভিত্তি দলিল হিসেবে তুলে ধরছে, যেটি কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ধীরে ধীরে বন্ধের প্রক্রিয়ায় গ্রিড স্থিতিশীল রাখার জন্য জরুরি বলে দাবি করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বড় কেন্দ্রের পাশাপাশি তুলনামূলক ছোট ও মডুলার রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করে শিল্পাঞ্চলগুলোর কাছাকাছি কম–কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো হবে। সমর্থকদের যুক্তি, আধুনিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অনিয়মিত বাতাস ও সূর্যনির্ভর জ্বালানির পাশে বেসলোড সরবরাহ করে গ্রিডকে স্থিতিশীল রাখবে এবং বৈশ্বিক গ্যাস বাজারের ধাক্কা থেকে ভোক্তাকে কিছুটা সুরক্ষা দেবে। কিন্তু সমালোচকেরা আশঙ্কা করছেন, নিয়ম সহজ বা দ্রুত করার নামে নিরাপত্তা মান শিথিল হয়ে যেতে পারে এবং প্রস্তাবিত কেন্দ্রের আশপাশের মানুষের মতামত উপেক্ষিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। রিপোর্ট অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে, “র‍্যাডিকাল রিসেট” মানে নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা ডিকমিশনিংয়ে ছাড় দেওয়া নয়; বরং এমন সব অপ্রয়োজনীয় ধাপ কমানো, যেগুলো প্রকল্প ব্যয়কে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। আগামী কয়েক বছর সরকার কীভাবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করে, তা–ই নির্ধারণ করবে—পারমাণবিক শক্তি সত্যিই সস্তা, নির্ভরযোগ্য কম–কার্বন বিদ্যুৎ দিতে পারবে, নাকি আগের মতোই বিলম্ব আর ব্যয়ের ফাঁদে আটকে থাকবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে আগুন

পারমাণবিক বিদ্যুতে ‘র‍্যাডিকাল রিসেট’ চায় যুক্তরাজ্য, খরচ–বিলম্বে ক্ষুব্ধ বিশেষজ্ঞরা

০৬:১৯:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

নিয়ন্ত্রক জটিলতা কাটিয়ে অগ্রগতি চান নীতিনির্ধারকেরা
যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাতে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া দেশটির জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে—এমন কঠোর ভাষার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সরকার–নিযুক্ত এক স্বাধীন পর্যালোচনা প্যানেল। পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, একাধিক সংস্থার দ্বৈত নজরদারি, দীর্ঘসূত্রতা ও অতিরিক্ত আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে ব্রিটেন এখন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক প্রকল্প–গন্তব্যগুলোর একটি। এই বাস্তবতায় রিপোর্টে ৪৭ দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে; যার মধ্যে আছে সব অনুমোদন সমন্বয়ের জন্য “ওয়ান–স্টপ শপ” ধরনের নতুন সংস্থা গঠন, পরিবেশ ও নিরাপত্তা মূল্যায়নের ধাপগুলো কার্যকরভাবে একীভূত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া। সরকার আশা করছে, এ ধরনের পরিবর্তন পূর্ব ইংল্যান্ডে নির্মাণাধীন সাইজওয়েল সি–এর মতো বৃহৎ প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ায় গতি আনবে, যেখানে ইতোমধ্যে প্রায় ১৪ বিলিয়ন পাউন্ড সরকারি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্পষ্ট ও পূর্বানুমেয় নীতিমালা থাকলে ব্যক্তিখাতের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন সহজ হবে এবং শেষ পর্যন্ত করদাতা ও সাধারণ ভোক্তার ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমতে পারে।

নেট–জিরো লক্ষ্য, নিরাপত্তা ও খরচের টানাপোড়েন
লেবার সরকার এই পর্যালোচনাকে তাদের ঘোষিত “নতুন পারমাণবিক যুগ” গড়ার ভিত্তি দলিল হিসেবে তুলে ধরছে, যেটি কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ধীরে ধীরে বন্ধের প্রক্রিয়ায় গ্রিড স্থিতিশীল রাখার জন্য জরুরি বলে দাবি করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বড় কেন্দ্রের পাশাপাশি তুলনামূলক ছোট ও মডুলার রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করে শিল্পাঞ্চলগুলোর কাছাকাছি কম–কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো হবে। সমর্থকদের যুক্তি, আধুনিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অনিয়মিত বাতাস ও সূর্যনির্ভর জ্বালানির পাশে বেসলোড সরবরাহ করে গ্রিডকে স্থিতিশীল রাখবে এবং বৈশ্বিক গ্যাস বাজারের ধাক্কা থেকে ভোক্তাকে কিছুটা সুরক্ষা দেবে। কিন্তু সমালোচকেরা আশঙ্কা করছেন, নিয়ম সহজ বা দ্রুত করার নামে নিরাপত্তা মান শিথিল হয়ে যেতে পারে এবং প্রস্তাবিত কেন্দ্রের আশপাশের মানুষের মতামত উপেক্ষিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। রিপোর্ট অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে, “র‍্যাডিকাল রিসেট” মানে নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা ডিকমিশনিংয়ে ছাড় দেওয়া নয়; বরং এমন সব অপ্রয়োজনীয় ধাপ কমানো, যেগুলো প্রকল্প ব্যয়কে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। আগামী কয়েক বছর সরকার কীভাবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করে, তা–ই নির্ধারণ করবে—পারমাণবিক শক্তি সত্যিই সস্তা, নির্ভরযোগ্য কম–কার্বন বিদ্যুৎ দিতে পারবে, নাকি আগের মতোই বিলম্ব আর ব্যয়ের ফাঁদে আটকে থাকবে।