অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্ম উৎসবে স্থানীয় তারকার ঝলক
অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে বেড়ানো গ্রীষ্মকালীন ফেস্টিভ্যাল স্পিল্ট মিল্ক ২০২৫–এর লাইনআপ আরও শক্তিশালী হলো নতুন দুই সংযোজনে। ঘরানা ভেঙে গান করা শিল্পী জেনেসিস ওউসু এবং তরুণ গায়ক-গীতিকার লটে গ্যালাগারকে এই সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে আয়োজকরা। বলারাট, পার্থ, ক্যানবেরা ও গোল্ড কোস্টে ডিসেম্বরজুড়ে চলা এই উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিলেন আগেই ঘোষিত হেডলাইনার কেন্ড্রিক লামার; সঙ্গে ডোইচি, ডমিনিক ফাইক, স্কুলবয় কিউয়ের মতো নাম। নতুন দুই অস্ট্রেলিয়ান তারকা যোগ হওয়ায় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীর ভারসাম্য আরও মজবুত হলো।
জেনেসিস ওউসু ইতিমধ্যেই দেশের সবচেয়ে উদ্ভাবনী পারফর্মারদের একজন হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রথম অ্যালবাম “স্মাইলিং উইথ নো টিথ” অস্ট্রেলিয়ান সমালোচকদের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে—হিপ-হপ, ফাঙ্ক, জ্যাজ ও সোল ঘরানাকে মিলিয়ে ভিন্ন রকম সাউন্ড তৈরি করেন তিনি। পরের অ্যালবাম “স্ট্রাগলার” তাঁকে বড় মাপের ফেস্টিভ্যাল মঞ্চেও স্বচ্ছন্দ করে তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সিডনি ও মেলবোর্নে ছোট পরিসরের ঘনিষ্ঠ লাইভ শোতে তাঁর থিয়েট্রিক্যাল, কোরিওগ্রাফ করা সেট দেখার ভিড় লেগেছে; সেই অভিজ্ঞতাকে এবার খোলা আকাশের বড় মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা।
অন্যদিকে লটে গ্যালাগার এখনো ক্যারিয়ারের ওঠার পথে। গিটারঘেঁষা ইন্ডি পপ গান দিয়ে তিনি ধীরে ধীরে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও সাপোর্ট শোয়ের মাধ্যমে শ্রোতা গড়ছেন। স্পিল্ট মিল্কের মতো উৎসবে জায়গা পাওয়া মানে বহু গুণ বেশি শ্রোতার সামনে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ। প্লেলিস্টে ভাইরাল হওয়া নতুন মুখ থেকে শুরু করে পরিচিত তারকা—একই লাইনআপে সবাইকে রাখাটা এই ফেস্টিভ্যালের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে, যা অনেক তরুণ শিল্পীর জন্য বড় ব্রেকও তৈরি করে।
শুধু সংগীত নয়, আয়োজনটি আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বড় শহরের বাইরে বলারাট বা গোল্ড কোস্টে যখন স্পিল্ট মিল্ক আসে, তখন স্থানীয় হোটেল, রেস্তোরাঁ, বারের বুকিং এক লাফে বেড়ে যায়। মহামারির ধাক্কা ও খরচ বাড়ার চাপে ভুগতে থাকা ছোট ব্যবসার জন্য কয়েক দিনের এই উৎসব অনেক সময় পুরো মৌসুমের আয় বাঁচিয়ে দেয়। তাই স্থানীয় সরকার ও ব্যবসায়ীরা ফেস্টিভ্যালকে স্বাগত জানিয়ে নানা সহযোগী ইভেন্টও সাজিয়ে রাখে।
বৈশ্বিক দৃষ্টিতে দেখলে, স্পিল্ট মিল্ক ২০২৫ আবারও দেখাচ্ছে কীভাবে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সঙ্গীতধারা মিলেমিশে যাচ্ছে। একদিকে গ্র্যামিজয়ী র্যাপার কেন্ড্রিক লামার, অন্যদিকে একই মঞ্চে উঠে আসা অস্ট্রেলিয়ান শিল্পী জেনেসিস ওউসু—এই মিশেলে বোঝা যায়, হিপ-হপ ও আরঅ্যান্ডবি এখন দেশটির মূল স্রোতের অংশ। সঙ্গে যোগ হচ্ছে ইন্ডি পপ, ইলেকট্রনিক বিট ও সমকালীন ক্লাব সাউন্ড। সেট টাইম শিগগিরই প্রকাশ পাবে, কিছু শহরে টিকিট ইতিমধ্যে শেষের দিকে; সব মিলিয়ে স্পিল্ট মিল্ক এবারও অস্ট্রেলিয়ার ব্যস্ত ফেস্টিভ্যাল ক্যালেন্ডারে শীর্ষে থাকার লড়াইয়ে নাম লিখিয়ে ফেলেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















