যুক্তরাজ্য সরকার ২০০ বছরের পুরোনো হিন্দু ধর্মীয় কাহিনিনির্ভর এক বিরল চিত্রকর্ম-সিরিজের রপ্তানি সাময়িকভাবে আটকে দিয়েছে। দেশের ভেতরেই নতুন ক্রেতা খুঁজে সংরক্ষণ নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য।
চিত্রকর্ম-সিরিজের মূল্য ও গুরুত্ব
এই বিশেষ সিরিজে মোট ৫৬টি চিত্র রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২৮০,০০০ পাউন্ড ধরা হয়েছে। চিত্রগুলোতে দেবীর উত্পত্তি থেকে তাঁর বিভিন্ন বিজয়ের ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি ছবিতে সোনালি ও রুপালি রঙের ব্যবহার চিত্রগুলোকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে। এতে নির্জন পূজা থেকে শুরু করে তীব্র যুদ্ধ— উভয় ধরনের দৃশ্যই চিত্রিত হয়েছে।

সরকারি প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ব্যারোনেস ফিয়োনা টুইক্রস বলেন,
“এই সিরিজটি শুধু সৌন্দর্যের জন্যই অনন্য নয়, বরং যুক্তরাজ্যে এমন সম্পূর্ণ ধারাবাহিক কোনো হিন্দু চিত্রকর্ম নেই। তাই এগুলো দেশেই রাখা জরুরি, যাতে গবেষকেরা এর ঐতিহাসিক তথ্য উন্মোচনের সময় পান।”
ইতিহাস ও উৎপত্তি
চিত্রগুলো মূলত ৫৯টির একটি সম্পূর্ণ সেটের অংশ, যার মধ্যে ৫৬টি এখনো অক্ষত রয়েছে। প্রতিটি চিত্রের বিষয়বস্তু সংস্কৃত ও হিন্দিতে লেখা পাতায় উল্লেখ আছে। এগুলোর সময়কাল আনুমানিক ১৮১০ সালের, এবং ভারতের পাঞ্জাবের কাংড়া অঞ্চলে আঁকা হয়েছিল। শিল্পীর নাম এখনো নির্ধারণ করা যায়নি।
একটি বিশেষ চিত্রে বিষ্ণু ও শিবকে সাহায্যের জন্য আবেদন করতে দেখা যায়— যা গবেষকদের মতে এই সিরিজের একেবারেই অনন্য বৈশিষ্ট্য।
গবেষণার সম্ভাবনা

যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া দফতর জানিয়েছে,
“এ ধরনের সমগ্র ধারাবাহিক চিত্রসিরিজ যুক্তরাজ্যে আর নেই। রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা গবেষণার জন্য বিরল সুযোগ সৃষ্টি করেছে— এর নির্মাণশৈলী ও ঐতিহাসিক বিকাশ বোঝার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
পূর্ববর্তী মালিকানা
এই চিত্রগুলো ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে লন্ডনের স্পিঙ্ক অ্যান্ড সন সংস্থার কাছে রয়েছে। এর আগে এগুলো ছিল ড. আলমা কামরুদ্দিন লতিফির
পারিবারিক সংগ্রহে। তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে যুক্তরাজ্য ও ভারতের বিভিন্ন প্রশাসনিক, বিচারিক ও রাজনৈতিক দায়িত্বে ছিলেন।
যুক্তরাজ্যের মন্তব্য
যুক্তরাজ্য সরকারের মতে, এই চিত্রকর্মগুলো ভারত ও পাঞ্জাবের সঙ্গে দীর্ঘকালীন সাংস্কৃতিক সম্পর্কের একটি জোরালো স্মারক।
# হিন্দু_চিত্রকলা সাংস্কৃতিক_ঐতিহ্য যুক্তরাজ্য কাংড়া_চিত্রশৈলী
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















