বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এবার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হলো আমাজন, ইবে’র মতো বৈশ্বিক অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সরাসরি পণ্য বিক্রির সুযোগের সঙ্গে। সহজ করা হলো নথিপত্র জমা ও বৈদেশিক আয় সংগ্রহের প্রক্রিয়া, যা রপ্তানিকারকদের জন্য খুলে দিচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক বাজার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতি
বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে ২৪ নভেম্বর (সোমবার) একটি সার্কুলার জারি করে জানিয়েছে—এখন থেকে দেশের রপ্তানিকারকরা আমাজন, ইবে, আলিবাবা, এট্টসি কিংবা যেকোনো আন্তর্জাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস বা বিদেশি গুদামের মাধ্যমে সরাসরি পণ্য পাঠাতে পারবেন।
এই নীতির মাধ্যমে দেশকে বৈশ্বিক অনলাইন বাজারে আরও সক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য রপ্তানি কার্যক্রমকে ‘বিজনেস-টু-বিজনেস-টু-কনজিউমার’ (B2B2C) কাঠামোর অধীনে পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন কাঠামোয় কী থাকছে
সার্কুলার অনুযায়ী, অনুমোদিত ডিলার (AD) ব্যাংক এখন এমন রপ্তানি লেনদেন প্রক্রিয়া করতে পারবে যেখানে বিদেশি কনসাইনি চূড়ান্ত ক্রেতা নয়; বরং তারা হবে মধ্যবর্তী প্ল্যাটফর্ম বা মার্কেটপ্লেস। ফলে বাংলাদেশি পণ্য এখন সরাসরি এসব আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিদেশে বিক্রি করা যাবে।
সহজীকৃত নথিপত্র
• রেজিস্ট্রেশন প্রমাণ: রপ্তানিকারকদের সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম বা গুদামে তাদের নিবন্ধনের প্রমাণ AD ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
• মূল্য ঘোষণা: যেহেতু B2B2C মডেলে সাধারণ বিক্রয়চুক্তি থাকে না, তাই পণ্যের ন্যায্য মূল্য ‘প্রোফর্মা ইনভয়েস’-এর ভিত্তিতে ঘোষণা করা যাবে।
• শিপমেন্ট ডকুমেন্ট: যদি কনসাইনি কেবল সেবা প্রদানকারী হয়, তাহলে তাদের নামে প্রস্তুতকৃত শিপমেন্ট ডকুমেন্টও ব্যাংক গ্রহণ করতে পারবে।

বৈদেশিক আয়ের নিয়মে ছাড়
রপ্তানির আয় গ্রহণে আরও সহজীকরণ আনা হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরের মাধ্যমেও রপ্তানি আয় গ্রহণ করা যাবে। প্ল্যাটফর্মভিত্তিক রপ্তানিতে একাধিক চালানের অর্থ একসঙ্গে আসতে পারে—এ বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যাংককে ‘ফার্স্ট-ইন, ফার্স্ট-আউট’ (FIFO) নীতিতে আয় মিলিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খাতে নতুন সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে ক্রস-বর্ডার ই-কমার্সে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (BKMEA)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “এই নীতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকদের নতুন বাজার দেবে এবং বৈশ্বিক অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে।”
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ডিজিটাল খুচরা চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য ও পরিমাণ বাড়াতে নতুন এই কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
#tags ব্যবসা বাংলাদেশ_ব্যাংক রপ্তানি ইকমার্স অনলাইন_মার্কেটপ্লেস
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















