শান্তির ইঙ্গিত, কিন্তু অনিশ্চিত জ্বালানি সরবরাহ
সপ্তাহের শুরুর দিনেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আবারও কিছুটা নেমে এসেছে। কয়েক দিনের ওঠানামা আর জোরালো র্যালির পর এখন বিনিয়োগকারীরা ধরে রাখতে চাইছেন সতর্ক অবস্থান। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে নতুন করে আলোচনার ইঙ্গিত মেলে, বাজারে ধারণা তৈরি হয়েছে যে দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়ান জ্বালানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি কমতে পারে। তবে এখনই কোন বড় পরিবর্তন হয়নি; রপ্তানি রুট, নিষেধাজ্ঞা ও মূল্যসীমা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো বিদ্যমান। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শেল উৎপাদন, ওপেক প্লাস জোটের কোটার শৃঙ্খলা আর শীত মৌসুমে এশিয়ার বড় ক্রেতাদের চাহিদা–সব মিলিয়ে তেলের দাম একদিকে টানছে আবার অন্যদিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে বাজার থাকে অস্বস্তিকর এক দোলাচলে, যেখানে ছোট খবরও বড় দামের ঝড় তুলতে পারে।
অন্যদিকে মুদ্রাবাজার ও সুদহারের প্রত্যাশাও তেলের দামে প্রভাব ফেলছে। ডলার শক্তিশালী হলে অনেক দেশের জন্যই আমদানি করা জ্বালানি আরও ব্যয়বহুল হয়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে চাহিদায়। মার্কিন কেন্দ্রিয় ব্যাংক কত দ্রুত সুদ কমাতে পারে—এ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় হেজ ফান্ডসহ বড় বিনিয়োগকারীরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কিছুটা লাভ তুলে নিয়েছেন। তবু বিশ্লেষকদের মতে, উন্নত দেশগুলোর মজুত এখনো খুব বেশি সান্ত্বনা দেয় না; যে কোনো সময় উৎপাদন ব্যাহত হলে বা বড় পরিবহন রুটে সংকট দেখা দিলে বাজার দ্রুত উত্তপ্ত হতে পারে। রিফাইনারি, এয়ারলাইন এবং লজিস্টিক কোম্পানিগুলো তাই একই সঙ্গে নজর রাখছে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েনে। এর মাঝেই পরিষ্কার হচ্ছে, শান্তি আলোচনা এগোলেও জ্বালানি নিরাপত্তা আর দামের অস্থিরতা থেকে বিশ্ব অর্থনীতি সহজে মুক্তি পাচ্ছে না।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















