১২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
গ্যাবার্ডের ‘হান্টার’ দল কীভাবে সিআইএ-র গোপন গুদামে হানা দিয়ে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি উদ্ধার করল আলঝেইমার চিকিৎসায় সেমাগ্লুটাইড ব্যর্থ, বড় ধাক্কা খেল নোভো নরডিস্ক আলি খামেনির অস্তমিত প্রভাব ইমপ্রেশনিজমের জনক? ক্যামিল পিসারোর নতুন প্রদর্শনীতে পুনর্মূল্যায়ন ২০২৫ সালের সেরা ১২ প্রযুক্তি উপহার সিরিয়ায় আইএস বন্দিদের নিয়ে নতুন সরকারের বড় পরীক্ষা রেস্তোরাঁর শেফদের অভিনব চেষ্টা: থ্যাঙ্কসগিভিং টার্কিকে নানা সংস্কৃতির স্বাদে মানিয়ে নেওয়া চার শীর্ষ অ্যাপল নির্বাহী উত্তরসূরি তালিকার শীর্ষে, যদিও টিম কুক এখনই সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন না অর্থনীতি এখন এআই ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল চীনের শিল্পে রোবটের বিপ্লব: দ্রুত, সস্তা ও স্বয়ংক্রিয় উৎপাদনের নতুন যুগ

অর্থনীতি এখন এআই ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–ভিত্তিক বিনিয়োগে গত সপ্তাহের শেয়ারবাজারের অস্থিরতা মার্কিন অর্থনীতির একটি বড় ঝুঁকি সামনে এনেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন এমনভাবে এআই–সম্পর্কিত ব্যয় ও সম্পদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে, এই খাতে দ্রুত মন্দা দেখা দিলে পুরো অর্থনীতিই ধাক্কা খেতে পারে।

এআই ব্যয় দেশের প্রবৃদ্ধির বড় অংশ
বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেকই এসেছে এআই–মুখী ব্যবসায়িক বিনিয়োগ থেকে। এ সময়ে এআই–ভিত্তিক কোম্পানির শেয়ারমূল্যও দ্রুত বেড়েছে, যা পরিবারগুলোর সম্পদ বাড়িয়ে ভোক্তা ব্যয়ও ত্বরান্বিত করেছে।
বিসিএ রিসার্চের প্রধান গ্লোবাল কৌশলবিদ পিটার বেরেজিন বলেন, এআই বুম না থাকলে অর্থনীতি ইতিমধ্যেই মন্দায় পড়তে পারত।

এআই বাদ দিলে অর্থনীতির দুর্বলতা স্পষ্ট
চাকরির সংখ্যা সেপ্টেম্বর মাসে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি হলেও পুরো বছর জুড়ে চাকরি সৃষ্টি কমেছে এবং বেকারত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে। ডয়চে ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালের পর থেকে এআই–সম্পর্কিত খাত বাদ দিলে বেসরকারি বিনিয়োগ কার্যত স্থির। ডেটা সেন্টার ছাড়া বাণিজ্যিক নির্মাণও কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগের প্রধান অবলম্বন এখন এআই–খাতই।

বড় প্রযুক্তি কোম্পানির রেকর্ড বিনিয়োগ
ব্যাংক অব আমেরিকার হিসাব অনুযায়ী, শুধু মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, অ্যালফাবেট এবং মেটা–এই চারটি প্রতিষ্ঠানই এ বছর ৩৪৪ বিলিয়ন ডলার মূলধনী ব্যয় করছে, যা জিডিপির প্রায় ১.১ শতাংশ। গত বছর তারা ব্যয় করেছিল ২২৮ বিলিয়ন ডলার।

জিডিপি বাড়াতে সফটওয়্যার ও ডেটা সেন্টারের প্রভাব
বার্কলেস জানিয়েছে, সফটওয়্যার, কম্পিউটার সরঞ্জাম ও ডেটা সেন্টারে বিনিয়োগ ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বার্ষিক হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বাড়িয়েছে। এআই–সম্পর্কিত বিনিয়োগই এর বড় অংশের জন্য দায়ী।

যদিও এনভিডিয়ার মতো কোম্পানির চিপ আমদানি করতে হয়, যা মোট বিনিয়োগ থেকে বাদ দিতে হয়, তবুও বার্কলেসের হিসেবে বছরের প্রথমার্ধে এআই ব্যয় দেশের উৎপাদন ০.৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। একই সময়ে জিডিপি বেড়েছে ১.৬ শতাংশ। অর্থাৎ এআই ব্যয় না থাকলে প্রবৃদ্ধি হতো মাত্র ০.৮ শতাংশ।

আগামী বছরও ব্যয় বাড়বে, তবে গতি কমবে
ট্যারিফের আগে কেনার তাগিদে কিছু বিনিয়োগ বাড়লেও বিশ্লেষকদের ধারণা, ব্যয় আগামী বছরও বাড়বে, যদিও ধীরগতিতে। এনভিডিয়া জানিয়েছে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে তাদের বিক্রি হবে ৬৫ বিলিয়ন ডলার—বিশ্লেষকদের অনুমানের চেয়ে বেশি। ব্যাংক অব আমেরিকা বলছে, আগামী বছর একই চার কোম্পানি আরও ৪০৪ বিলিয়ন ডলার মূলধনী ব্যয় করবে।

দীর্ঘমেয়াদে এআই থেকে উৎপাদনশীলতা বাড়ার আশা থাকলেও এখনো প্রভাব সীমিত।

শেয়ারবাজারের সম্পদ প্রভাব
শেয়ারের দাম বাড়লে পরিবারগুলো নিজেদের বাড়তি সম্পদের একটি অংশ খরচ করে। জেপি মরগ্যান হিসাবে এআই–সম্পর্কিত কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় গত এক বছরে ভোক্তা ব্যয় ১৮০ বিলিয়ন ডলার বা ০.৯ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এটি মোট ভোক্তা ব্যয়ের তুলনায় ছোট অংশ, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির দুই–তৃতীয়াংশই আসে ভোক্তাদের খরচ থেকে—তাই এর গুরুত্ব অনেক।

শ্রমবাজারে এআই এর প্রভাব সীমিত
ডেটা সেন্টার তৈরি হলে সেখানে কর্মী প্রয়োজন কম থাকে, আর ২০২২ সালের পর থেকে প্রযুক্তিখাতে মোট কর্মসংস্থান কমেছে—যা ১৯৯০–এর দশকের শেষ দিকের ইন্টারনেট বুমের থেকে আলাদা।
তবে নির্মাণ খাতে এআই সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উচ্চ সুদের হার, দুর্বল রিয়েল–এস্টেট বাজার ও অভিবাসন কঠোর হওয়ায় নির্মাণ খাত চাপের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ডেটা সেন্টার নির্মাণে ১০০ থেকে ৫,০০০ কর্মী দরকার হয়। টার্নার কনস্ট্রাকশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের মোট প্রকল্পের ৩৫ শতাংশই এখন ডেটা সেন্টার, পাঁচ বছর আগে যা ছিল ১৩ শতাংশ। দক্ষ শ্রমিক ও উপকরণ–সংকটের কারণে জেনারেটর, সুইচগিয়ারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পেতে মাসের পর মাস লেগে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী বেন ক্যাপলান বলেন, সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রতিটি অংশই এখন চাপের মুখে।

এআই–নির্ভরতার বড় ঝুঁকি
শেয়ারবাজারে মূল্য–আয় অনুপাত রেকর্ড উচ্চতায়। লাভ প্রত্যাশার চেয়ে না মিললে শেয়ারের দাম পড়ে যেতে পারে, বিনিয়োগ কমে যেতে পারে। গত সপ্তাহে এই আশঙ্কায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমেছে প্রায় ২ শতাংশ।
শেয়ার কমলে বিপরীত ‘সম্পদ–প্রভাব’ দেখা দিতে পারে—মানুষ কম খরচ করবে, ব্যবসার বিক্রি কমবে, কর্মসংস্থান কমতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের অক্টোবর বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এই ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, বিশেষ করে হঠাৎ এআই–সংশ্লিষ্ট সম্ভাবনার পুনর্মূল্যায়ন হলে।

বার্কলেস যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ জনাথন মিলারের মতে, শেয়ার বাজার ২০–৩০ শতাংশ পড়ে গেলে জিডিপি এক বছরে ১ থেকে ১.৫ শতাংশ পয়েন্ট কমে যেতে পারে। এআই বিনিয়োগ বাড়া বন্ধ হয়ে গেলে আরও ০.৫ পয়েন্ট প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে কমে যেতে পারে পুরো ১ পয়েন্ট।

দুর্বল অর্থনীতিতে মন্দার সম্ভাবনা বেশি
বিসিএ রিসার্চের রেজিন জানান, শ্রমবাজার দুর্বল থাকা অবস্থায় যদি মূলধনী ব্যয় হঠাৎ কমে যায়, তাহলে মন্দা অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।

এআই–সংশ্লিষ্ট ঋণের ঝুঁকি
ওরাকল সম্প্রতি বন্ড বিক্রি করে কোম্পানির মোট ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি করেছে, যার একটি অংশ এআই অবকাঠামোতে ব্যয় হতে পারে। কোন উইভের মতো প্রতিষ্ঠান, যারা ডেটা সেন্টার লিজ দিয়ে সার্ভার ভাড়া দেয়, তারা দ্রুত সম্প্রসারণে ব্যাপক ঋণ নিয়েছে।
যদি এই বিনিয়োগ প্রত্যাশিত আয় না এনে দেয়, ঋণদাতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তার প্রভাব ঋণ বাজারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও বেরেজিন মনে করেন এআই–সম্পর্কিত ঋণের পরিমাণ এত বড় নয় যে সরাসরি আর্থিক সংকট তৈরি করবে, তবে আর্থিক বাজার অত্যন্ত জটিল—একটি খাতে সমস্যা দেখা দিলে তা অন্য খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।


জনপ্রিয় সংবাদ

গ্যাবার্ডের ‘হান্টার’ দল কীভাবে সিআইএ-র গোপন গুদামে হানা দিয়ে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি উদ্ধার করল

অর্থনীতি এখন এআই ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল

১১:২০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–ভিত্তিক বিনিয়োগে গত সপ্তাহের শেয়ারবাজারের অস্থিরতা মার্কিন অর্থনীতির একটি বড় ঝুঁকি সামনে এনেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন এমনভাবে এআই–সম্পর্কিত ব্যয় ও সম্পদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে, এই খাতে দ্রুত মন্দা দেখা দিলে পুরো অর্থনীতিই ধাক্কা খেতে পারে।

এআই ব্যয় দেশের প্রবৃদ্ধির বড় অংশ
বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেকই এসেছে এআই–মুখী ব্যবসায়িক বিনিয়োগ থেকে। এ সময়ে এআই–ভিত্তিক কোম্পানির শেয়ারমূল্যও দ্রুত বেড়েছে, যা পরিবারগুলোর সম্পদ বাড়িয়ে ভোক্তা ব্যয়ও ত্বরান্বিত করেছে।
বিসিএ রিসার্চের প্রধান গ্লোবাল কৌশলবিদ পিটার বেরেজিন বলেন, এআই বুম না থাকলে অর্থনীতি ইতিমধ্যেই মন্দায় পড়তে পারত।

এআই বাদ দিলে অর্থনীতির দুর্বলতা স্পষ্ট
চাকরির সংখ্যা সেপ্টেম্বর মাসে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি হলেও পুরো বছর জুড়ে চাকরি সৃষ্টি কমেছে এবং বেকারত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে। ডয়চে ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালের পর থেকে এআই–সম্পর্কিত খাত বাদ দিলে বেসরকারি বিনিয়োগ কার্যত স্থির। ডেটা সেন্টার ছাড়া বাণিজ্যিক নির্মাণও কমে গেছে। ফলে বিনিয়োগের প্রধান অবলম্বন এখন এআই–খাতই।

বড় প্রযুক্তি কোম্পানির রেকর্ড বিনিয়োগ
ব্যাংক অব আমেরিকার হিসাব অনুযায়ী, শুধু মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, অ্যালফাবেট এবং মেটা–এই চারটি প্রতিষ্ঠানই এ বছর ৩৪৪ বিলিয়ন ডলার মূলধনী ব্যয় করছে, যা জিডিপির প্রায় ১.১ শতাংশ। গত বছর তারা ব্যয় করেছিল ২২৮ বিলিয়ন ডলার।

জিডিপি বাড়াতে সফটওয়্যার ও ডেটা সেন্টারের প্রভাব
বার্কলেস জানিয়েছে, সফটওয়্যার, কম্পিউটার সরঞ্জাম ও ডেটা সেন্টারে বিনিয়োগ ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বার্ষিক হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বাড়িয়েছে। এআই–সম্পর্কিত বিনিয়োগই এর বড় অংশের জন্য দায়ী।

যদিও এনভিডিয়ার মতো কোম্পানির চিপ আমদানি করতে হয়, যা মোট বিনিয়োগ থেকে বাদ দিতে হয়, তবুও বার্কলেসের হিসেবে বছরের প্রথমার্ধে এআই ব্যয় দেশের উৎপাদন ০.৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। একই সময়ে জিডিপি বেড়েছে ১.৬ শতাংশ। অর্থাৎ এআই ব্যয় না থাকলে প্রবৃদ্ধি হতো মাত্র ০.৮ শতাংশ।

আগামী বছরও ব্যয় বাড়বে, তবে গতি কমবে
ট্যারিফের আগে কেনার তাগিদে কিছু বিনিয়োগ বাড়লেও বিশ্লেষকদের ধারণা, ব্যয় আগামী বছরও বাড়বে, যদিও ধীরগতিতে। এনভিডিয়া জানিয়েছে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে তাদের বিক্রি হবে ৬৫ বিলিয়ন ডলার—বিশ্লেষকদের অনুমানের চেয়ে বেশি। ব্যাংক অব আমেরিকা বলছে, আগামী বছর একই চার কোম্পানি আরও ৪০৪ বিলিয়ন ডলার মূলধনী ব্যয় করবে।

দীর্ঘমেয়াদে এআই থেকে উৎপাদনশীলতা বাড়ার আশা থাকলেও এখনো প্রভাব সীমিত।

শেয়ারবাজারের সম্পদ প্রভাব
শেয়ারের দাম বাড়লে পরিবারগুলো নিজেদের বাড়তি সম্পদের একটি অংশ খরচ করে। জেপি মরগ্যান হিসাবে এআই–সম্পর্কিত কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় গত এক বছরে ভোক্তা ব্যয় ১৮০ বিলিয়ন ডলার বা ০.৯ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এটি মোট ভোক্তা ব্যয়ের তুলনায় ছোট অংশ, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির দুই–তৃতীয়াংশই আসে ভোক্তাদের খরচ থেকে—তাই এর গুরুত্ব অনেক।

শ্রমবাজারে এআই এর প্রভাব সীমিত
ডেটা সেন্টার তৈরি হলে সেখানে কর্মী প্রয়োজন কম থাকে, আর ২০২২ সালের পর থেকে প্রযুক্তিখাতে মোট কর্মসংস্থান কমেছে—যা ১৯৯০–এর দশকের শেষ দিকের ইন্টারনেট বুমের থেকে আলাদা।
তবে নির্মাণ খাতে এআই সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উচ্চ সুদের হার, দুর্বল রিয়েল–এস্টেট বাজার ও অভিবাসন কঠোর হওয়ায় নির্মাণ খাত চাপের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ডেটা সেন্টার নির্মাণে ১০০ থেকে ৫,০০০ কর্মী দরকার হয়। টার্নার কনস্ট্রাকশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের মোট প্রকল্পের ৩৫ শতাংশই এখন ডেটা সেন্টার, পাঁচ বছর আগে যা ছিল ১৩ শতাংশ। দক্ষ শ্রমিক ও উপকরণ–সংকটের কারণে জেনারেটর, সুইচগিয়ারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পেতে মাসের পর মাস লেগে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী বেন ক্যাপলান বলেন, সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রতিটি অংশই এখন চাপের মুখে।

এআই–নির্ভরতার বড় ঝুঁকি
শেয়ারবাজারে মূল্য–আয় অনুপাত রেকর্ড উচ্চতায়। লাভ প্রত্যাশার চেয়ে না মিললে শেয়ারের দাম পড়ে যেতে পারে, বিনিয়োগ কমে যেতে পারে। গত সপ্তাহে এই আশঙ্কায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমেছে প্রায় ২ শতাংশ।
শেয়ার কমলে বিপরীত ‘সম্পদ–প্রভাব’ দেখা দিতে পারে—মানুষ কম খরচ করবে, ব্যবসার বিক্রি কমবে, কর্মসংস্থান কমতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের অক্টোবর বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এই ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, বিশেষ করে হঠাৎ এআই–সংশ্লিষ্ট সম্ভাবনার পুনর্মূল্যায়ন হলে।

বার্কলেস যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ জনাথন মিলারের মতে, শেয়ার বাজার ২০–৩০ শতাংশ পড়ে গেলে জিডিপি এক বছরে ১ থেকে ১.৫ শতাংশ পয়েন্ট কমে যেতে পারে। এআই বিনিয়োগ বাড়া বন্ধ হয়ে গেলে আরও ০.৫ পয়েন্ট প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে কমে যেতে পারে পুরো ১ পয়েন্ট।

দুর্বল অর্থনীতিতে মন্দার সম্ভাবনা বেশি
বিসিএ রিসার্চের রেজিন জানান, শ্রমবাজার দুর্বল থাকা অবস্থায় যদি মূলধনী ব্যয় হঠাৎ কমে যায়, তাহলে মন্দা অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।

এআই–সংশ্লিষ্ট ঋণের ঝুঁকি
ওরাকল সম্প্রতি বন্ড বিক্রি করে কোম্পানির মোট ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি করেছে, যার একটি অংশ এআই অবকাঠামোতে ব্যয় হতে পারে। কোন উইভের মতো প্রতিষ্ঠান, যারা ডেটা সেন্টার লিজ দিয়ে সার্ভার ভাড়া দেয়, তারা দ্রুত সম্প্রসারণে ব্যাপক ঋণ নিয়েছে।
যদি এই বিনিয়োগ প্রত্যাশিত আয় না এনে দেয়, ঋণদাতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তার প্রভাব ঋণ বাজারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও বেরেজিন মনে করেন এআই–সম্পর্কিত ঋণের পরিমাণ এত বড় নয় যে সরাসরি আর্থিক সংকট তৈরি করবে, তবে আর্থিক বাজার অত্যন্ত জটিল—একটি খাতে সমস্যা দেখা দিলে তা অন্য খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।