ইশান মোটেই দায়ি নয়।
তবু দোষটা নির্দোষ ইশানের ঘাড়েই ভূত হয়ে চেপে বসে থাকে সারাক্ষণ। কেননা, ওর গায়ের রংটা অসহ্য রকমের কালো। বাঙালি এ সমাজে ঠিক যায় না। ফর্সা হতে পারা, সে নারী কিংবা পুরুষই হউক, খুব চলে এখানে। মুখে বলবে, ‘পোলার গায়ের রং দেখছো? এক্কেরে রাজপুত্র।’ বলার সময় বুকের ছাতি ইঞ্চিখানেক তো বাড়েই। অর্থাৎ রাজপুত্র-রাজা-জমিদার এরা সবাই ঝিনুকের মতো ঝকঝকে গায়ের রং নিয়ে জন্মাবে। লোকজন যত তাকাবে তত মুগ্ধ হবে: সিনেমায় দেখা উজ্জ্বল নায়ক-নায়িকার মতো করে তত বলবে,’ পোলা তো নয়। মনে অয় সায়েবের বাইচ্চা। হের দাদাও আছিল এইরহম সুপুরুষ। বুঝলা?’
অথচ ইশানের সুঠাম দেহ, চিতানো বুক, ঘন কালো চুল কিংবা পাঁচ ফুট সাতের উচ্চতা কোনকিছুই গায়ের রং-এর এ বজ্জাতটাকে হারাতে পারেনি। এ যেন মুগ্ধ হবার একমাত্র ধাপ। এখানে হোঁচট খেলে মুগ্ধতা অর্জনের আর কোন সুযোগই যেন অবশিষ্ট থাকে না জীবনে। হিংসুটে আত্মীয়-পরিজনের মুখ থেকে তখন হয়তো বেরোবে, পোলাডারে কি যে লাগে, মনে অয় য্যান আফ্রিকার জঙ্গলে জন্মাইছে।’ ইশান খন্দকারের বাবা জাফরুল্লাহ আইন-ব্যবসায়ী। মা বেসরকারী ব্যাংকের নটা-পাঁচটার চাকরিজীবী।
ঢাকার কলাবাগানে ছয়তলা পৈতৃক বাড়ি। একটাই বোন ইশানের, উম্মে কুলসুম তার নাম। ভাই যে-স্কুলে পড়তো এককালে, সে-ও ধানমন্ডির ইংরেজি মিডিয়ামের একই স্কুলের ছাত্রী। এ্যাডভান্সড লেভেল। ইচ্ছে রয়েছে, সে-ও বড় ভাইর মতো অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাবে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে। ইশান এখন অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করে। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনো ওর।
চাকরিটাও সেরকম এক জুৎসই সফটওয়্যার কোম্পানিতে পেয়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই সে বেশ ফিট-ফাট জীবন-যাপনে অভ্যন্ত। নিজস্ব গাড়ি আর থাকার মতো সুসজ্জিত ফ্ল্যাট নিয়ে সিডনির সদাহাস্যময় জীবন ওর। কিন্তু ছেলেটা প্রেম-পরিণয়ের ব্যাপারে একেবারেই কাঁচা। অস্ট্রেলিয়ার উদার সমাজে থেকেও কোন মেয়েকে পটাতে পারেনি এপর্যন্ত। সে এখনও শিশুর মতো ম্যা-ম্যা ব্যা-ব্যা করা এক সফল যুবক। মুখে বলল, দেশের মেয়ে বিয়ে করবো। পাত্রী দেখো আম্মা।’ সঙ্গে সঙ্গে আবা-আম্মা প্রচণ্ড গর্ব ও অহংকারে আপ্লুত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাত্রী শিকারে। ব্যাংকার নাসরিনের বেশ খানিকটা আত্মবিশ্বাস ছিল ছেলের মা হিসাবে। ধারণা ছিল, মুখ থেকে বেরোলেই বুঝি একশ আটটা পাত্রী নামের রাজকন্যা জড়ো হবে ওর ফ্ল্যাটের নিচে।
কাতর কণ্ঠে বলবে, ‘আমাকে আপনাদের পরিবারে ঠাই দিন প্লিজ। পুত্রবধু বানিয়ে আমার জীবন ধন্য করুন দয়া করে।’ আশা ছিল এ জাতীয় সকাতর অনুরোধে-মিনতিতে সে হয়ে উঠবে অস্থির-চঞ্চল। একটা ধুন্ধুমার ব্যাপার ঘটে যাবে বলে তিনি বড় ভীত ছিলেন অনেকদিন থেকে। অথচ বাস্তবে ন্যূনতম একটা আলাপও প্রস্ফুটিত হতে পারেনি আজ পর্যন্ত। ঘটক পাখিভাই থেকে শুরু করে শুক্রবারের দৈনিক পত্রিকার বিজ্ঞাপন পাতা কোনকিছু বাদ রাখেননি। কিন্তু ফল হল না। প্রথমে প্রচণ্ড কৌতূহল পাত্রীপক্ষের।
কিন্তু যেইমাত্র পাত্রের ছবিটি চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠল এবং ফেইসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করে আরও কিছু তথ্য হাতের মুঠোয় এসে গেল, ওমনি নেমে এল কবরস্থানের নীরবতা। রিং দিয়েও পাত্রীপক্ষের সাড়াশব্দ আর মিলে না। লেগে থাকলে একসময় উত্তর পাওয়া যায়, তবে সবার একইরকম উত্তর, ‘আপা, একটাই মেয়ে তো। পড়াশুনো চালিয়ে যেতে চায়। মেয়ের উপর তো কথা বলতে পারি না।’
প্রথমে বুঝতে পারেননি নাসরিন। এ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহই হাঁড়ি ভাঙলো প্রথমে, আরে, এটাও বোঝ না? এইটা বিয়ে না দেবার অসম্মতি।’ ‘কেনো? আমার ছেলে কোন দিক দিয়ে মন্দ বলো?’
‘তোমার ছেলের সব ভালো। কিন্তু একটাই দোষ। গায়ের রঙ অসহ্য রকমের কাল। বাঙালির গড়পরতা রুচির সঙ্গে যায় না। বুঝলা? এখন একটু চুপ থাকো।’ ‘ওর ছুটি তো শেষ।’ ‘পরের ছুটিতে হবে। নইলে ইশানকে বলো আস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত অভিবাসী কাউকে বেছে নিতে। আমরা আপত্তি করব না। বলে দাও।”
ছেলের চিন্তায় প্রতিটি রাত বিনিদ্র কাটে নাসরিনের। যে অহংকার আর আভিজাত্যের বড়াই নিয়ে ছেলের সব মজাদার গল্প সবাইকে শোনাত, সেই জায়গাটা উঁই পোকার দল ফোকলা করে দিচ্ছে দিন-দিন। নাসরিন হেরে যাচ্ছেন, পরাজিত হচ্ছে তার অন্ধ স্নেহ ও ভালোবাসা। ইশানের শৈশব-কৈশোর বায়োস্কোপের মতো ভেসে ওঠে নিদ্রাহীন নাসরিনের চোখের তারায়।
কোনকালেই ইশান মেয়েদের সঙ্গে মিশতে পারত না। ওদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কেমন যেন সিঁটিয়ে যেত। একধরনের জড়তা জবরদস্তি করে ওর সমস্ত সম্ভার অধিকার দখল করে নিত। এডভান্সড লেভেলে পড়ার কালে মারিয়া নামের একটি মেয়ে বেশ কদিন ওর পিছু নিয়েছিল। ইশানের ক্লাসমেট। ওদের বাড়ি পর্যন্ত হানা দিত নিজের আম্মাকে সঙ্গে নিয়ে।
কিন্তু ইশান এতো ঠাণ্ডা যে কোন কথা রঙ-ঢং করে শুরুই করতে জানত না। অগত্যা ক্লান্ত-বিরক্ত হয়ে মারিয়া কেটে পড়ল। ওর জীবনে হয়তো ওই একটাই মেয়ে যে নিজে থেকে ওর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেছিল। তারপর ওর জীবনে, নাসরিনের ধারণা, আর কখনও কেউ আসেনি। অন্তত মা হিসাবে ওর জানা নেই। মারিয়া চলে যাওয়ায় নাসরিন তখন খুব খুশি হয়েছিলেন ছেলের উপর।
ইশানের আব্বা এডভোকেট জাফরুল্লাকে জানালেন, মারিয়া মেয়েটা খুবই গায়ে পড়া, বুজলা? ওর মায়ের স্বভাবটাও তেমনি। চক্ষুলজ্জার খাতিরে কিছু বলতে পারি না। কেমন নির্লজ্জ চিন্তা করে দেখো। মেয়েকে নিয়ে দিব্যি উপস্থিত হল আমাদের বাসায়। ইশান একটাও কথা বলেনি। সারাক্ষণ মুখ ঘুরিয়ে থেকেছে। ব্যস, কেটে পড়েছে। আবার কোন পোলার মাথা খাবে। অসভ্য মা, আর অসভ্য মেয়ে।’ ঝাল ঝাড়ে স্বামীর কাছে। জাফরুল্লাহ পিরিচ থেকে ডিমের পোচ মুখে পুরতে পুরতে উত্তর দিলেন,’ কার পোলা কইতে হবে না?’
জাফরুল্লার চোখে-মুখে উল্লাসমুখর হাসি ভাসে। পোচের খানিকটা সাদা অংশ কাঁচাপাকা গোঁফে ছড়িয়ে পড়ে। তবু ঝাঁঝালো আত্মগর্বের ছোঁয়া মুখাবয়ব ছেড়ে যায় না। সেই ইশানের জন্য হাজার খুঁজেও এখন জাফরুল্লাহ আর নাসরিন পছন্দসই পাত্রী খুঁজে পাচ্ছেন না এদেশে। ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পড়তে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা।
নিজেদের সাধ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে দুজন মিলে খরচের সেই দৈত্যকে সামলেছে বছরের পর বছর। পড়ালেখা শেষ করে ছেলে এখন চাকরি করছে এক আইটি কোম্পানিতে। বয়স চৌত্রিশের মাঝখানে হামাগুড়ি খাচ্ছে। প্রতিদিন আম্মাকে টেলিফোন করে সুখ-দুখের গল্প বলে। নাসরিনও সুযোগ পেলেই ছেলেকে ফোন দিয়ে আব্বা-আব্বা করে সময় কাটায়।
জাফরুল্লাহ পাশ থেকে বলেন, পোলাডা তোমারে ছাড়া কিছু আর বোঝে না।’ ‘আমার বেটা আমারে বুঝব না তো কারে বুঝবো? আমাদের মাঝে কাঁটা বিছাতে আইসো না। নিজের কাজে যাও।” কিন্তু যে কাজটা হচ্ছে না তা হল একটি রূপসী শিক্ষিতা পাত্রী যোগাড় করে ছেলের বিয়ে দিতে পারছেন না তাঁরা। যত দিন গড়াচ্ছে তত জাফরুল্লাহ নাসরিন বুঝতে পারছেন, ছেলের এখন বউ দরকার।
আত্মীর-পরিজনও এ নিয়ে খোঁচাখুঁচি করে বেড়ায়, কিগো আর কত? পোলা বিয়া করাইয়া নাতির মুখ দেখতা না?’ এসব কথায় আরও কাবু হয়ে পড়েন দুজন। ছেলের বিয়ে দেবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন দুজন।
কিন্তু পাত্রীপক্ষ ছেলেকে দেখার পরই চুপ হয়ে পড়ে। কোন রা শব্দ নেই। প্রথমদিকে বুঝতে না পারলেও ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে পড়ে সবকিছু। ইশানের গায়ের এই কুচকুচে কালোটাকে কোন বাঙালি তরুণী ঠিক আপন করে নিতে পারছে না। নাসরিনের অফিস-বান্ধবী ঠোঁটকাটা শারমিন তো বলেই ফেলল,’ তোর পোলার গায়ের রং বীভৎস রকমের কালো। কালোর তো একটা মাত্রা আছে।’
‘আমার হাবিটাও তো কালো। কোনখানের ইংরেজ ক? আমিও তো কালো।’ ‘তোরা তো অত কালো নস। চেহারাও শিম্পাঞ্জিমার্কা নয়। তোদের ছেলেটা তো সেরকম। তাকালেই শরীর শিউরে ওঠে। একটা বাঙালি মেয়ের কাছে স্বপ্নের পুরুষ হল তার বর। জানোয়ারের মতো এরকম মিশমিশে কালো কি যায় স্বপ্নের সঙ্গে বল?’ ‘নিগ্রোরা তো এর চেয়েও কালো হয়। তাই না?’
‘ওদের সমাজ আর রুচি ভিন্ন। আমরা শংকর জাতি। রুচিও তেমনি। কালো রঙটাকে আমরা ঘৃণাই করি তলে তলে। মেয়েরা এ-ব্যাপারে বেশি ভুক্তভোগী। এদেশে চামড়া সাদা করার কত ব্যবসা চলে, জানিস না? পুরুষদের বেলায় এরকম কমই হয়। পুরুষালি নানা ছলা-কলায় ওরা উতরে যায় সমাজে। ইশান আটকে গেছে। এই আর কি।’ ‘আমরার একটাই ছেলে, বিয়ে হবে না শারমিন?’ ‘আরে বাবা, অত সিরিয়াস হচ্ছিস ক্যান?
বাংলাদেশে না হলেও অস্ট্রেলিয়ায় ঠিকই হবে। সাহেবদের দেশে এসব কমপ্লেক্স কমই চলে। শারমিনের কথা শুনে রাতে ঘুম আসেনি নাসরিনের। টেনশনে আধমরা হয়ে পড়ে থাকে নির্ঘুম বিছানায়। একসময় ইচ্ছে করে জাফরুল্লাহর ভেতর ঢুকিয়ে দেয় সেই অসহ্য অপ্রকাশিত টেনশন। জাফরুল্লাহ এককালে বাংলা সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। এখন অবশ্য এর ধারে-কাছে নেই তিনি।
ধর্ম-কর্ম আর আয়-রোজগার নিয়ে পুরো উথাল-পাতাল করছে সংসার সমূদ্রে। তবু মনে পড়ে গেল শ্রীকৃষ্ণের কথা। চট করে উত্তর দিলেন, কৃষ্ণ কি ছিল কও? তিনি তো লীলা করে বেড়িয়েছেন। রাধার কুঞ্জে যেতে গিয়ে সখীর কুঞ্জে রাত কাটিয়েছেন। সেই নিয়ে কত পদাবলি, কত বিরহ-বিচ্ছেদের ছড়াছড়ি। আর আমার পোলা একটা বউ পাইবো না এই জমানায়?’ বলে জাফরুল্লাহ মোবাইলের ইউটিউব খুলে শ্রীকৃষ্ণের ত্রিভঙ্গমুরারি বংশীধারী একখানা ছবি দেখিয়ে দিল স্ত্রীকে।
নাসরিন মুখঝামটা দিয়ে বলে ওঠেন, ফাজলামো করতেছো? পোলার বয়স কত অইলো জানো?’ ‘আমার চেয়ে কবছরের ছোট, তাই না? তুমি চিন্তা কইরো না। এবার ছেলে ছুটি কাটাতে এলে নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা হবে।’
নাসরিনকে নিশ্চিন্ত করতে চান তিনি। নাসরিন একথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপচাপ পাশ ফিরে শুয়ে থাকে। বড় কান্না পাচ্ছে ওর। চোখ বেয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় অশ্রু গড়াতে পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই নাসরিন ছেলেকে মোবাইলে রিং দিলেন। ভেতরকার চাপা টেনশন ছেলের কাছে মেলে না ধরে লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে বলে উঠলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় কি কোন একটা মেয়েকে পটাতে পারিস না বাপ?’
ইশান কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। একটু বাদে উত্তর দিল, তোমরাই তো আমাকে মিশতে দাও নাই কারো সঙ্গে, দিছ?
সবসময় জোঁকের মতন লেগে থাকতা পিছনে। তুমি না হলে আব্বু। আব্বু না হলে তুমি। বিদেশ আসার সময় না আমাকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করালে এয়ারপোর্টে, যেন তোমাদের পছন্দমতো দেশে এসে বিয়ে করি। তো এখন এসব কি বলছো?’
‘মারিয়া মেয়েটার সঙ্গে দেখা হয় বাপ?’
‘মারিয়া আমাকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলে গালি দিছে তখন। সব তোমাদের জন্য। এখন তোমরাই আমার জন্য বউ জোগাড় করে দিবা। আমি কিছু জানি না। ব্যস।’ ছেলের উত্তর শুনে হতবাক হয়ে যান নাসরিন। কথা শেষ হবার পর থ হয়ে বসে থাকেন কিছুক্ষণ। তাহলে ছেলের এই নিষ্ক্রিয়তার জন্য নাসরিন-জাফরুল্লাহই দায়ি?
ছেলেকে বুকের সঙ্গে আগলে রাখা কি মা-বাবার অপরাধ? বুকটা টনটন করে ওঠে অজানা ব্যথায়। তবু নাসরিন স্বপ্ন দেখেন, ওর বড় আদরের ইশান ফুটফুটে পরীর মতো দেখতে একটি মেয়েকে নিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে বলছে, আম্মা, এই দেখো তোমাদের পুত্রবধু। হইছে তোমাদের সাধ পূরণ?’
আধো ঘুম আর আধো জাগরণের ভেতর সেই দৃশ্য নাসরিনের ভেজা চোখদুটোয় হাসিতে ভরিয়ে দেয়। পাশে নাক-ডাকা জাফরুল্লা মোটেই টের পান না, নাসরিনের মনের ভেতর কী ঝড় বইছে!
মণীশ রায় 


















