সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা ও জীবিত থাকার বিষয়ে টানা তিন সপ্তাহ কোনো তথ্য না পাওয়ায় তার পরিবার গভীর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে। আদালতের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও সাক্ষাৎ না হওয়া, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকা এবং নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সমর্থকদের বিক্ষোভ আহ্বানকে ঘিরে রাওয়ালপিন্ডিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পরিস্থিতি সংক্ষেপ
ইমরান খানের দুই ছেলে জানিয়েছেন, দীর্ঘ তিন সপ্তাহ ধরে তার জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি। আদালত-নির্দেশিত সাপ্তাহিক সাক্ষাৎও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা তাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে ইমরান খানের মৃত্যু নিয়ে নানা গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে, যা সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় রাওয়ালপিন্ডিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ডেপুটি কমিশনার ড. হাসান ওয়াকার চীমা জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা হুমকির কারণে শহরে তিন দিনের জন্য সকল ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে—
পাঁচ বা তার বেশি ব্যক্তির জমায়েত
সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ, শোভাযাত্রা
অস্ত্র বা সহিংসতায় ব্যবহারযোগ্য বস্তু বহন
উত্তেজনামূলক বক্তব্য
মোটরসাইকেলের পেছনে আরোহী বহন
লাউডস্পিকার ব্যবহার
প্রশাসনের দাবি, এসব ব্যবস্থা জননিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে জরুরি।
গোয়েন্দা তথ্য: সহিংসতার সম্ভাব্য ইঙ্গিত
ডিস্ট্রিক্ট ইন্টেলিজেন্স কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু গোষ্ঠী বড় ধরনের বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পনা করছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা নরম লক্ষ্যবস্তুতে হামলার চেষ্টা করতে পারে, যা গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ইমরান খানের জীবিত থাকা নিয়ে পরিবারের উদ্বেগ
ইমরান খানের দুই ছেলে অভিযোগ করেছেন, সরকার তার স্বাস্থ্যের সঠিক তথ্য গোপন করছে। দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষাৎ বন্ধ থাকায় তারা বাবার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
কাসিম খান বলেন,
“বাবা সুস্থ আছেন কিনা, আহত কিনা, বা আদৌ জীবিত আছেন কিনা—এই অনিশ্চয়তা আমাদের জন্য মানসিক নির্যাতনের মতো।”
পরিবার আরও জানিয়েছে, ইমরানের ব্যক্তিগত চিকিৎসককে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।

জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
এক জেল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে উচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পরিবার ও সমর্থকদের আশঙ্কা এখনো কাটছে না।
ইমরান খানের মামলা ও কারাবাসের পটভূমি
তিনি ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দি।
২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়, যা তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন।
তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গোপন কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের মামলায় ১০ বছরের সাজা এবং আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও ১৪ বছরের কারাদণ্ড যোগ হয়।
সমাপনী মন্তব্যইমরান খানের জীবিত থাকা নিয়ে পরিবার ও সমর্থকদের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। দীর্ঘ নীরবতা, সাক্ষাৎ না হওয়া ও গুজব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। নিরাপত্তা ঝুঁকি মাথায় রেখে রাওয়ালপিন্ডিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
#ImranKhan #Pakistan #Rawalpindi #PTI #SarakhonReport
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















