ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি: বাজারের অস্থিরতা এবং নতুন সঙ্কট
এই সপ্তাহে মিয়ামি বিচে শুরু হওয়া আর্ট বেসেল মিয়ামি ২০২৫ এর ২৩ তম সংস্করণটি এক আশঙ্কিত পরিবেশে শুরু হয়েছে, যেখানে বেশ কিছু গ্যালারি তাদের অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করেছে। ২০২৫ সালে আর্ট বাজারে ক্রমাগত স্লথ বিক্রি এবং আর্থিক সমস্যার কারণে বহু গ্যালারি সঙ্কটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, যদিও নিউ ইয়র্কের নভেম্বর মাসের $২.২ বিলিয়ন আর্ট অকশন মার্কেট কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখিয়েছে, তবে এটি মিয়ামির গ্যালারিগুলোর জন্য সান্ত্বনার কিছু নয়। বেশ কিছু প্রখ্যাত গ্যালারি ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে এবং বাকি গ্যালারিগুলোর জন্য অস্থির বাজারের শিকার হতে হয়েছে।
বেসেল গ্যালারির অংশগ্রহণে বিশাল পরিবর্তন
আর্ট বেসেল মিয়ামি ২০২৫-এ ১৪টি গ্যালারি তাদের প্রথমে ঘোষিত অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করেছে, যা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। অনেক গ্যালারি তাদের স্থায়ী বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে, আবার কিছু গ্যালারি তাদের অংশগ্রহণের খরচের তুলনায় বাজারের অনিশ্চয়তার কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছে না অংশগ্রহণ করতে। নিউ ইয়র্কের মিগুয়েল আব্রেউ গ্যালারি, যার আগে বেসেল প্যারিস এবং ফ্রিজে অংশগ্রহণ করেছে, জানিয়েছে, “তিনটি ফেয়ার একসাথে পরিচালনা করা আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল।”

নতুন গ্যালারির শক্তি
তবে, এই পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু নতুন গ্যালারি বাজারে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করছে। কেটিয়া ডেভিড রোসেনথাল, কেডিআর গ্যালারির পরিচালক, বলেন, “যখন অনেকেই সতর্ক থাকে, তখন সৃজনশীলভাবে কিছু নতুন করতে অনেক ভালো সুযোগ থাকে।” কেডিআর গ্যালারি বর্তমানে মিয়ামি শিল্পী সুসান কিম আলভারেজের কাজ প্রদর্শন করছে, যার অত্যন্ত উজ্জ্বল পোর্ট্রেটগুলো বিষণ্ণতার এবং মজার মধ্যে একটি অনন্য মিশ্রণ সৃষ্টি করে।
মিয়ামির স্থানীয় শিল্পীদের বাজারে উত্থান
মিয়ামির স্থানীয় শিল্পীরা সম্প্রতি সফলতার দেখা পাচ্ছেন। যেমন, ফ্রেডরিক স্নিটজার গ্যালারি গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ামির আর্ট বেসেলে স্থানীয় শিল্পী এমা রির চিত্রকর্ম বিক্রি করেছে, এবং গ্যালারি মালিক স্নিটজার এর মধ্যে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলেন, “এই সময়ে, শিল্প বাজারে যে গুণগত পরিবর্তন আসছে তা আসলেই প্রাকৃতিক।”
গ্যালারি বন্ধ এবং নতুন শুরু
মিয়ামির নতুন গ্যালারিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল হোমওয়ার্ক গ্যালারি, যা আগে বিভিন্ন ফেয়ার অংশগ্রহণ করে পরিচিতি লাভ করেছিল এবং এবার একটি স্থায়ী স্থান নিয়েছে। হোমওয়ার্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, অরেলিও আগুইলো বলেন, “আমরা যদি স্থানীয় শিল্পীদের কাজ প্রদর্শন করি, তবে বাজারের অস্থিরতা আমাদের সঙ্গেই থাকবে। কিন্তু আমরা যখন এটি অতিক্রম করব, তখনও আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”

অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও আশার আলো
এদিকে, নিনা জনসন, যিনি ২০০৭ সালে তার নিজস্ব গ্যালারি খুলেছিলেন, এবার আর্ট বেসেলে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি বলেছেন, “যখন অনেকেই ভীত থাকে, তখন সাহসী হওয়ার সুযোগ আসে।” জনসন তার গ্যালারির প্রদর্শনীর মাধ্যমে একাধিক অপ্রমাণিত শিল্পীকে তুলে ধরছেন, এবং তার বিশ্বাস, অর্থনৈতিক চিন্তা ছাড়াও, এই ধরনের প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পীদের জন্য একটি শক্তিশালী মঞ্চ তৈরি করা সম্ভব।
সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যত আশাবাদ
বেসেল মিয়ামি ২০২৫-এ অংশগ্রহণকারী গ্যালারির সংখ্যায় কমতি হলেও, শিল্পের প্রতি আগ্রহ এবং নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে অস্থির বাজারের মাঝে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে অনেক গ্যালারি। এটি প্রমাণ করে যে, যদিও বাজারের অবস্থা অনিশ্চিত, তবে সৃজনশীলতা এবং সাহসিকতা এখনো শিল্পী এবং গ্যালারি মালিকদের জন্য একটি বড় শক্তি হিসেবে কাজ করছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















