০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ভারতীয় কর্মীদের রাশিয়ায় চলাচল সহজ করা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করার ব্যাপারে সম্মতি ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’: একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার কষ্ট না হলে বিশ্বাস জন্মায় না: এক্রিভিয়া প্রতিষ্ঠাতা রেক্সহেপ রেক্সহেপির পথচলার গল্প ইউক্রেনজুড়ে রুশ ড্রোন–মিসাইলের নজিরবিহীন হামলা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সঙ্গে অসদাচরণের জেরে এমএমসিএইচ চিকিৎসক সাময়িক বরখাস্ত ট্রাম্প প্রশাসনের নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ায় চীনের প্রভাব ঠেকাতে কঠোর অবস্থান  মৈত্রী দিবসে প্রণয় ভার্মা ‘সাবসিডিতে হবে না’—চিনি শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ চাই: উপদেষ্টা আদিলুর  মানিকগঞ্জে কালিগঙ্গা নদীতে দুই শিশুর মৃত্যু যাত্রাবাড়ীতে বিদেশি পিস্তলসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার

ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’: একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার

পরিচিতি ও প্রেক্ষাপট

ব্রাজিলিয়ান পরিচালক ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর নতুন সিনেমা “দ্য সিক্রেট এজেন্ট” একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার, যা দর্শকদের একটি উত্তেজনাপূর্ণ সফরে নিয়ে যায়। সিনেমাটি ১৯৭৭ সালের ব্রাজিলকে ভিত্তি করে, যখন দেশটি সামরিক শাসনে ছিল। ছবির শুরুতেই একটি সতর্কীকরণ বার্তা দেখা যায়: “আমাদের গল্প ১৯৭৭ সালের ব্রাজিলে অবস্থিত”, যেখানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিপর্যয়ের সুর উঠে আসে। তবে, এই থ্রিলারটি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক ড্রামা নয়, বরং একধরণের ধাঁধা, যেখানে রহস্য ও ভিনটেজ নোয়ার অনুভূতি প্রবাহিত হয়।


প্রধান চরিত্র ও প্লট

মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্র, মারসেলো, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণা বিজ্ঞানী, যিনি রিসিফে শহরে আসেন এবং এক রাজনৈতিক আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস শুরু করেন। তিনি রিসিফে শহরের এক পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রে কিছুদিন থাকেন, যেখানে তার সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক শরণার্থী এবং শহরের স্থানীয় মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় শহরে অস্থিরতা বেড়ে যায় এবং মারসেলোর অতীত তাকে ছাড়তে চায় না। তিনি তার ছোট ছেলেকে (ফার্নান্দো) নিয়ে ব্রাজিল ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন, তবে এটি কোনো সহজ কাজ নয়।

মুভির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ তার সূক্ষ্ম রূপক ও সামাজিক সমালোচনা, যা দর্শককে একটি শহরের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরতে সাহায্য করে। স্থানীয় পুলিশ, করাপ্ট শিল্পপতি, এবং ছদ্মবেশী আততায়ীরা মারসেলোর পিছু নেয়, যখন সে তার উদ্দেশ্য সাধন করতে চায়। এই নাটকীয় পরিবেশের মধ্যে “দ্য সিক্রেট এজেন্ট” কেবল একটি রাজনৈতিক থ্রিলারই নয়, বরং একজন মানুষের সংগ্রাম এবং এক শহরের আত্মপরিচয়ের গল্প।


অভিনয়ের দুর্দান্ত প্রদর্শন

মুভির প্রধান চরিত্র মারসেলোর ভূমিকায় ওয়াগনার মুরা অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যা একদিকে কোমল, তীক্ষ্ণ, আর দুঃখময়, অন্যদিকে রহস্যময় এবং গোপনীয়। মুরা চরিত্রটিকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে, তার হৃদয় এবং মানসিক অবস্থা একই সাথে প্রকাশ পায়।

Brazilian political thriller The Secret Agent is a scorching work of  paranoia and resistance - The Globe and Mail

ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক দৃশ্য ও রাজনৈতিক বাস্তবতা

“দ্য সিক্রেট এজেন্ট” শুধু একটি থ্রিলার নয়, এটি ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি সূক্ষ্ম পর্যালোচনা। পরিচালক মেনডোনসা ফিলহো তার শহর রিসিফের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন, যেখানে তার নানা সিনেমার শুটিং হয়েছে এবং এটি তার আবেগের প্রতিফলন। সিনেমাটি বিশেষ করে “বাকুরাউ” (২০১৯) সিনেমার মতো সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কাজ করে।


তথ্যপূর্ণ সিনেমা: ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’

এই সিনেমাটি প্রতিটি দর্শনে নতুন কিছু আবিষ্কার করে: তার আবেগ, প্রতীক, এবং মানে ক্রমশ খুলে যায়। এটি এক ধরনের ধাঁধা, যার প্রতিটি টুকরো একে অপরের সাথে নিখুঁতভাবে মিলছে। ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর এই মাস্টারপিস রাজনৈতিক থ্রিলারটি সেরা সিনেমা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।


আরো সিনেমা ও পুরস্কারের দিক

এছাড়া, ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’-এর সাথে মিল রেখে, ২০২৪ সালের অস্কার বিজয়ী ছবি “আই’ম স্টিল হিয়ার”ও একই সময়কালে সামরিক শাসন এবং নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে, যা ব্রাজিলের সামরিক শাসনের বাস্তবতা এবং তার প্রভাবকে একে অন্যের সাথে মিলিয়ে দেয়। এই দুটি সিনেমা একত্রে দেখলে অতীতের দুঃখ-দুর্দশার একটি পরিষ্কার ছবি উঠে আসে।

“দ্য সিক্রেট এজেন্ট” শুধু একটি থ্রিলার নয়, এটি একটি অনুভূতিপূর্ণ রাজনৈতিক চিত্র, যা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ব্যক্তি জীবনের গভীরে প্রবাহিত হয়। সিনেমাটি মেনডোনসা ফিলহোর এটি সেরা কাজ এবং ২০২৫ সালের সেরা সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতীয় কর্মীদের রাশিয়ায় চলাচল সহজ করা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করার ব্যাপারে সম্মতি

ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’: একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার

১২:০১:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

পরিচিতি ও প্রেক্ষাপট

ব্রাজিলিয়ান পরিচালক ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর নতুন সিনেমা “দ্য সিক্রেট এজেন্ট” একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার, যা দর্শকদের একটি উত্তেজনাপূর্ণ সফরে নিয়ে যায়। সিনেমাটি ১৯৭৭ সালের ব্রাজিলকে ভিত্তি করে, যখন দেশটি সামরিক শাসনে ছিল। ছবির শুরুতেই একটি সতর্কীকরণ বার্তা দেখা যায়: “আমাদের গল্প ১৯৭৭ সালের ব্রাজিলে অবস্থিত”, যেখানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিপর্যয়ের সুর উঠে আসে। তবে, এই থ্রিলারটি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক ড্রামা নয়, বরং একধরণের ধাঁধা, যেখানে রহস্য ও ভিনটেজ নোয়ার অনুভূতি প্রবাহিত হয়।


প্রধান চরিত্র ও প্লট

মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্র, মারসেলো, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণা বিজ্ঞানী, যিনি রিসিফে শহরে আসেন এবং এক রাজনৈতিক আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস শুরু করেন। তিনি রিসিফে শহরের এক পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রে কিছুদিন থাকেন, যেখানে তার সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক শরণার্থী এবং শহরের স্থানীয় মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় শহরে অস্থিরতা বেড়ে যায় এবং মারসেলোর অতীত তাকে ছাড়তে চায় না। তিনি তার ছোট ছেলেকে (ফার্নান্দো) নিয়ে ব্রাজিল ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন, তবে এটি কোনো সহজ কাজ নয়।

মুভির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ তার সূক্ষ্ম রূপক ও সামাজিক সমালোচনা, যা দর্শককে একটি শহরের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরতে সাহায্য করে। স্থানীয় পুলিশ, করাপ্ট শিল্পপতি, এবং ছদ্মবেশী আততায়ীরা মারসেলোর পিছু নেয়, যখন সে তার উদ্দেশ্য সাধন করতে চায়। এই নাটকীয় পরিবেশের মধ্যে “দ্য সিক্রেট এজেন্ট” কেবল একটি রাজনৈতিক থ্রিলারই নয়, বরং একজন মানুষের সংগ্রাম এবং এক শহরের আত্মপরিচয়ের গল্প।


অভিনয়ের দুর্দান্ত প্রদর্শন

মুভির প্রধান চরিত্র মারসেলোর ভূমিকায় ওয়াগনার মুরা অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যা একদিকে কোমল, তীক্ষ্ণ, আর দুঃখময়, অন্যদিকে রহস্যময় এবং গোপনীয়। মুরা চরিত্রটিকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে, তার হৃদয় এবং মানসিক অবস্থা একই সাথে প্রকাশ পায়।

Brazilian political thriller The Secret Agent is a scorching work of  paranoia and resistance - The Globe and Mail

ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক দৃশ্য ও রাজনৈতিক বাস্তবতা

“দ্য সিক্রেট এজেন্ট” শুধু একটি থ্রিলার নয়, এটি ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি সূক্ষ্ম পর্যালোচনা। পরিচালক মেনডোনসা ফিলহো তার শহর রিসিফের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন, যেখানে তার নানা সিনেমার শুটিং হয়েছে এবং এটি তার আবেগের প্রতিফলন। সিনেমাটি বিশেষ করে “বাকুরাউ” (২০১৯) সিনেমার মতো সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কাজ করে।


তথ্যপূর্ণ সিনেমা: ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’

এই সিনেমাটি প্রতিটি দর্শনে নতুন কিছু আবিষ্কার করে: তার আবেগ, প্রতীক, এবং মানে ক্রমশ খুলে যায়। এটি এক ধরনের ধাঁধা, যার প্রতিটি টুকরো একে অপরের সাথে নিখুঁতভাবে মিলছে। ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর এই মাস্টারপিস রাজনৈতিক থ্রিলারটি সেরা সিনেমা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।


আরো সিনেমা ও পুরস্কারের দিক

এছাড়া, ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’-এর সাথে মিল রেখে, ২০২৪ সালের অস্কার বিজয়ী ছবি “আই’ম স্টিল হিয়ার”ও একই সময়কালে সামরিক শাসন এবং নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে, যা ব্রাজিলের সামরিক শাসনের বাস্তবতা এবং তার প্রভাবকে একে অন্যের সাথে মিলিয়ে দেয়। এই দুটি সিনেমা একত্রে দেখলে অতীতের দুঃখ-দুর্দশার একটি পরিষ্কার ছবি উঠে আসে।

“দ্য সিক্রেট এজেন্ট” শুধু একটি থ্রিলার নয়, এটি একটি অনুভূতিপূর্ণ রাজনৈতিক চিত্র, যা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ব্যক্তি জীবনের গভীরে প্রবাহিত হয়। সিনেমাটি মেনডোনসা ফিলহোর এটি সেরা কাজ এবং ২০২৫ সালের সেরা সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।