একটি চক্র বড় পরিসরে বিএনপিকে নেতিবাচক দল হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে—এসব অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি রুখতে সাইবার স্পেসে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের প্রচার
ফখরুল বলেন, বিএনপিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতিবাচক দল হিসেবে ব্র্যান্ড করার একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এই প্রচার ভাঙতে হবে দলীয় নেতাকর্মীদেরই।
দেশ গড়ার পরিকল্পনা কর্মসূচির উদ্বোধন
ফার্মগেটের কেআইবি মিলনায়তনে বিএনপির ছয় দিনের ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। জানান, তারেক রহমানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে যে বিএনপি অতীতে যেমন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংস্কার এনেছে, ভবিষ্যতেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম।
গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ
তিনি বলেন, ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পর গণতন্ত্রে ফেরার সুযোগ এসেছে। এখন নানা বাধা ও ষড়যন্ত্র সামনে আসছে, তবে সেগুলো অতিক্রম করেই এগোতে হবে। মিথ্যা প্রচার ও ‘ভুল তথ্যের স্রোত’ এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাইবার যুদ্ধে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান
ফখরুল বলেন, এটি একধরনের সাইবার যুদ্ধ। এই যুদ্ধে লড়াই করতে না পারলে পরাজিত হতে হবে। তাই তরুণ প্রজন্মকে অনলাইনে সক্রিয় হয়ে বিভ্রান্তি প্রতিরোধের দায়িত্ব নিতে হবে।
যুবসমাজের ভূমিকা ও জাতীয় নির্বাচন
ছাত্রদলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন—সেখানে প্রমাণ করতে হবে বিএনপিই দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিতে পারে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ধর্মের নামে বিভাজন তৈরির অপচেষ্টা
তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল ধর্মের নামে দেশে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ফখরুল বলেন, বাংলাদেশিরা ধর্মপ্রাণ হলেও তারা ধর্মকে রাষ্ট্র বা সমাজ বিভক্তির উপকরণ হিসেবে মানে না। সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের ভিত্তিতেই দেশ পরিচালিত হওয়া উচিত।
‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানের গুরুত্ব
তারেক রহমানের দেওয়া ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানকে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন এবং এই নীতি ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
কর্মসূচির লক্ষ্য ও ক্ষেত্র
‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির মাধ্যমে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে নতুন ধারণায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের সহায়তা, আইটি ও শিল্পখাত উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কারিগরি প্রশিক্ষণ, উচ্চশিক্ষায় ক্যারিয়ার সহায়তা, বিদেশগামীদের দক্ষতা উন্নয়ন, সবার জন্য ইন্টারনেট, ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
বেকারত্ব সমস্যা ও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি
ফখরুল জানান, দেশে প্রায় তিন কোটি মানুষ বেকার—এই বাস্তবতা মোকাবিলায় তারেক রহমান ১৮ মাসে ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, কৃষি ও শ্রমঘন খাতেও প্রসারিত হবে।
বিএনপির অতীত অবদান
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান গার্মেন্টস শিল্প, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসহ আধুনিক সংস্কারের ভিত্তি গড়ে দেন। খালেদা জিয়া সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেন এবং মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা দেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান কার্যকর রাজস্ব ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ভ্যাট চালু করেন।
ক্যাম্পাসভিত্তিক কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ
ফখরুল বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের উপস্থিতি ও কার্যক্রম কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে তাদের ফলাফলে প্রভাব পড়ছে। তাই আবারও ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়া জরুরি।
Sarakhon Report 



















