সৌদি সাহিত্যে এক গভীর শূন্যতা রেখে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও লেখক আহমেদ আবু দাহমান ইন্তেকাল করেছেন। রোববার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ছিয়াত্তর বছর। তাঁর প্রয়াণে সৌদি আরবসহ আরব বিশ্বের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিশ্বজুড়ে পরিচিত এক সাহিত্যিক কণ্ঠ
আহমেদ আবু দাহমান আন্তর্জাতিক পাঠকের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন তাঁর আলোচিত উপন্যাস ‘আল হিজাম’ বা ‘বেল্ট’-এর মাধ্যমে। দুই হাজার সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসটি পরবর্তীতে ফরাসিসহ একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়। গ্রামীণ জীবন, স্মৃতি ও মানবিক অনুভূতির গভীর মেলবন্ধনে লেখা এই উপন্যাস সৌদি কথাসাহিত্যে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
শৈশব, শিক্ষা ও ফ্রান্সের অধ্যায়
উনিশশো ঊনপঞ্চাশ সালে সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় আসির প্রদেশের সারাত আবিদাহ এলাকার আল খালাফ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আবহায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষে রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ফ্রান্সে গিয়ে সাহিত্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আহমেদ আবু দাহমান।
শিক্ষকতা থেকে সাংবাদিকতা
পেশাগত জীবনের শুরুতে শিক্ষকতা করলেও পরে তিনি সাংবাদিকতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। ফ্রান্সে অবস্থানকালে সৌদি দৈনিক ‘আল রিয়াদ’-এর প্যারিস ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৌদি সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
গ্রামের স্মৃতি ও লেখার স্বর
নিজ গ্রাম আল খালাফের স্মৃতি তাঁর লেখার ভেতরে বারবার ফিরে এসেছে। সৌদি সমাজের পরিবর্তন, মানুষের অনুভূতি ও আত্মপরিচয়ের টানাপোড়েন তিনি তুলে ধরেছেন নস্টালজিয়া ও কাব্যিক ভাষার মিশেলে। এই স্বতন্ত্র বর্ণনাভঙ্গিই তাঁকে পাঠক ও সমালোচকদের কাছে আলাদা করে তুলে ধরেছে।
সাহিত্যিক উত্তরাধিকার
আহমেদ আবু দাহমানের মৃত্যুতে সৌদি ও আরব সাহিত্য এক নিবেদিতপ্রাণ কথাসাহিত্যিককে হারাল। তাঁর লেখা শুধু স্থানীয় সংস্কৃতির দলিল নয়, বরং সৌদি সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত করার এক শক্তিশালী সেতু হিসেবেও বিবেচিত।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















