ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থ জোগান বন্ধে এবার রাশিয়ার তেল বাণিজ্য নেটওয়ার্কে সরাসরি আঘাত হানল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গোপন পথে রুশ জ্বালানি রপ্তানিতে সহায়তার অভিযোগে দুই প্রভাবশালী তেল ব্যবসায়ীর ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রাসেলস। এই পদক্ষেপকে মস্কোর যুদ্ধ অর্থনীতির বিরুদ্ধে বড় ধরনের চাপ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় কারা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রকাশিত নথি অনুযায়ী আজারবাইজানের নাগরিক এতিবার আইয়ুব এবং পাকিস্তানের নাগরিক মুরতাজা লাখানিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ জাহাজ ব্যবহার করে তেল ও পরিশোধিত জ্বালানি পরিবহনের মাধ্যমে তারা রাশিয়ার জন্য বিপুল আয়ের উৎস তৈরি করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরে তাদের সব সম্পদ জব্দ হবে, প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে এবং ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক কঠোরভাবে সীমিত হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা জোরদার হয়েছে এবং ইউরোপীয় নেতারাও সেই আলোচনায় নিজেদের ভূমিকা নিশ্চিত করতে চাইছেন। বার্লিনে সাম্প্রতিক বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের আলোচনার মধ্যেই ব্রাসেলস এই কড়া অবস্থান নিল।
অভিযোগ ও অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়া
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাবি, আইয়ুব ও লাখানি তেলের প্রকৃত উৎস গোপন রেখে পরিবহন নিশ্চিত করেছেন এবং তথাকথিত ছায়া নৌবহরের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করেছেন। আইয়ুব এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বেআইনি বলে দাবি করেছেন। লাখানি বলেছেন, তিনি অভিযোগের সঙ্গে একমত নন এবং নিজের মালিকানাধীন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
রাশিয়ার তেল অর্থনীতি কতটা ঝুঁকিতে
তেল ও গ্যাস রপ্তানি রাশিয়ার ফেডারেল বাজেটের বড় অংশ জোগায়। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রুশ তেল বিশ্ববাজারে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ইউক্রেনের হামলায় কিছু ট্যাংকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দাম আরও চাপে পড়েছে। তবু বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ প্রায় চার বছরের যুদ্ধে মস্কো সমান্তরাল পরিবহন ও লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা এই নতুন নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা সামাল দিতে পারে।
পশ্চিমা কৌশল ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
দশকের পর দশক পশ্চিমা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করলেও ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। শুরুতে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পশ্চিমা দেশগুলো তুলনামূলক নরম নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই সুযোগে গড়ে ওঠা নেটওয়ার্ক ভাঙতেই এখন আরও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপ।
#ইউক্রেনযুদ্ধ #রাশিয়ারতেল #ইইউনিষেধাজ্ঞা #বিশ্বরাজনীতি #জ্বালানিবাজার #মস্কো #ইউরোপ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















