ইউক্রেন দাবি করেছে, জলের নিচে চলাচলকারী ড্রোন ব্যবহার করে তারা রাশিয়ার একটি সাবমেরিনে আঘাত হেনেছে এবং সেটিকে গুরুতরভাবে অকার্যকর করে দিয়েছে। প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধে এটিকে নৌযুদ্ধের এক নতুন অধ্যায় হিসেবে তুলে ধরছে কিয়েভ। রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে এমন আঘাত ইউক্রেনের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও নতুন কৌশলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কালো সাগরের বন্দরে বিস্ফোরণ
ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, রাশিয়ার কালো সাগর উপকূলের নভোরোসিস্ক নৌবন্দরে নোঙর করা একটি রুশ সাবমেরিন কার্যত নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। সংস্থাটির প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যস্ত নৌঘাঁটির ভেতরে সাবমেরিনের কাছেই একটি বিস্ফোরণ ঘটে। ইউক্রেনের ভাষ্য অনুযায়ী, এই অভিযানে জলের নিচের বিশেষ ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
নতুন কৌশলে রাশিয়ার ভেতরে আঘাত
এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধ শেষ করতে একটি সমঝোতায় যেতে চাপ দিচ্ছে। সেই প্রস্তাব ইউক্রেনের জন্য অনুকূল নয় বলে কিয়েভের আশঙ্কা। ইউক্রেন বলছে, এই আক্রমণ প্রমাণ করছে যে তারা নতুন পদ্ধতিতে রাশিয়ার নিজের ভূখণ্ডেও আঘাত হানতে সক্ষম।
নৌযুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা
এই ঘটনার সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব না হলেও, বিশ্লেষকেরা মনে করছেন এটি নৌযুদ্ধে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। ইতিমধ্যেই ছোট নৌযান ও ড্রোন দিয়ে বড় জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন দেশ ও প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন জলের নিচের ড্রোন প্রযুক্তি উন্নয়নে জোর দিচ্ছে, যেমন আকাশে ড্রোন যুদ্ধের ধরণ বদলে দিয়েছে।

সাবমেরিনে ড্রোন হামলার গুরুত্ব
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, সাবমেরিন একটি দেশের সবচেয়ে কৌশলগত সম্পদের মধ্যে পড়ে। জলের নিচের ড্রোন দিয়ে একটি সাবমেরিনে আঘাত লাগার দাবি নৌযুদ্ধের পরবর্তী ধাপের ইঙ্গিত দেয়। তবে ইউক্রেনের দাবি যাচাই করতে আরও সময় লাগবে বলেও তারা সতর্ক করেছেন।
ইউক্রেনের আগের সাফল্য
ইউক্রেন আগেও বিস্ফোরকভর্তি নৌড্রোন ব্যবহার করে প্রায় দুই ডজন রুশ জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত বা ডুবিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে। এর ফলে রাশিয়ার কালো সাগর নৌবহরকে অধিকৃত ক্রিমিয়া ছেড়ে মূল ভূখণ্ডের বন্দরে সরে যেতে হয়। অতীতে ছোট আকারের জলের নিচের যান মূলত মাইন পরিষ্কার বা বিশেষ কাজে ব্যবহৃত হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে সেগুলোর সামরিক ব্যবহার বেড়েছে।
ড্রোনের লক্ষ্য ও চাপের রাজনীতি
ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা জানায়, সাব সি বেবি নামের ড্রোনটি চারটি ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম একটি কিলো শ্রেণির রুশ সাবমেরিনে আঘাত হানে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ইউক্রেনকে বছরের শেষের আগেই শান্তিচুক্তিতে যেতে চাপ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ছে, যদিও ইউক্রেন বলছে তারা এখনও রাশিয়াকে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে পারছে।
#ইউক্রেনরাশিয়াযুদ্ধ #নৌযুদ্ধ #সাবমেরিন #ড্রোনযুদ্ধ #কালোসাগর #আধুনিকযুদ্ধ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















