যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণের ঘটনার পর তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে ধরার অভিযান। দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও নয়জন আহত হওয়ার এই ঘটনায় তদন্ত জোরদার করতে নতুন ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে এফবিআই ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নতুন ভিডিও প্রকাশ ও তদন্তের অগ্রগতি
রোড আইল্যান্ডের প্রভিডেন্স শহরে সোমবার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এফবিআইয়ের দল। কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তির চলাচলের কিছু নতুন ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি ফুটপাথ ধরে হেঁটে যাচ্ছেন এবং একটি সড়ক পার হচ্ছেন। তার মাথায় গাঢ় রঙের টুপি এবং মুখে মাস্ক ছিল। তবে ভিডিওগুলোর মান কম হওয়ায় মুখ স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
একক হামলাকারীর ধারণা
পুলিশের ধারণা, এই হামলা একজন একক বন্দুকধারীই চালিয়েছে। প্রভিডেন্স পুলিশ প্রধান অস্কার পেরেজ জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তি নয় মিলিমিটার আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই ওই এলাকায় তার উপস্থিতি ছিল। তিনি বলেন, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে এবং জনগণের সহায়তা জরুরি।
পুরস্কার ঘোষণা ও জনসাধারণের প্রতি আহ্বান
এফবিআই জানিয়েছে, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার ও দোষী সাব্যস্ত করতে সহায়ক তথ্য দিলে পঞ্চাশ হাজার ডলার পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ওই ব্যক্তি সশস্ত্র ও বিপজ্জনক হতে পারে। পুলিশ ও এফবিআই নাগরিকদের অনুরোধ করেছে, কেউ তাকে চিনতে পারলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
আগের সন্দেহভাজন ও প্রমাণের ঘাটতি
রবিবার সকালে একজন আগ্রহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোড আইল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেল পিটার নেরনহা জানান, নতুন প্রমাণ অন্য দিক নির্দেশ করায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা স্বীকার করেছেন, ঘটনার স্থলে পর্যাপ্ত নজরদারি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাস্থলে এফবিআইয়ের তৎপরতা
সোমবার বিকেলে এক ডজনের বেশি এফবিআই এজেন্ট ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন। তারা ভবনের বাইরে থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলার দৃশ্য পুনর্গঠন ও প্রমাণ বিশ্লেষণের কাজ চলছে।
নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণ
কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, নিহত দুই শিক্ষার্থী হলেন এলা কুক এবং মুখাম্মাদ আজিজ উমুরজোকভ। এলা কুক ছিলেন আলাবামার বার্মিংহামের বাসিন্দা ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সহকর্মীরা তাকে শান্ত স্বভাবের, মেধাবী ও নম্র তরুণী হিসেবে স্মরণ করেছেন। অন্যদিকে উমুরজোকভের বন্ধুরা জানান, তিনি ছিলেন হাসিখুশি ও সহানুভূতিশীল মানুষ, যার স্বপ্ন ছিল নিউরোসার্জন হওয়ার।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















