ভারত ও ইসরায়েল আগামী দুই হাজার ছাব্বিশ সালকে সামনে রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর ও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে সমর্থন করে নয়াদিল্লি এবং এই পরিকল্পনা স্থায়ী সমাধানের পথ খুলে দেবে বলেই ভারতের আশা।
জেরুজালেমে বৈঠক ও কূটনৈতিক বার্তা
সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শেষে জয়শঙ্কর ইসরায়েলে পৌঁছে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। জেরুজালেমে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সা’র সঙ্গে সাক্ষাতে দুই দেশের সম্পর্কের সার্বিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে জয়শঙ্কর জানান, কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও এগিয়ে নিতে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন রূপরেখা
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সা’র মতে, দুই দেশ দুই হাজার ছাব্বিশ সালের জন্য যে যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার মাধ্যমে কূটনীতি, নিরাপত্তা, অর্থনীতি, উদ্যোগ ও প্রযুক্তি, সাইবার খাত, কৃষি ও পানি ব্যবস্থাপনা, সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। তাঁর ভাষায়, ভারতের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই ভবিষ্যতের অংশীদার হতে চায় ইসরায়েল।
কৌশলগত অংশীদারত্বের মূল্যায়ন
জয়শঙ্কর উল্লেখ করেন, গত এক দশকে ভারত ও ইসরায়েলের কৌশলগত সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতাকে সামনে রেখে দুই দেশ সম্পর্ককে নতুনভাবে সাজাচ্ছে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।

গাজা পরিস্থিতি ও ভারতের অবস্থান
বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুর পাশাপাশি গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। জয়শঙ্কর বলেন, ভারত গাজা শান্তি পরিকল্পনার পক্ষে রয়েছে এবং এই উদ্যোগ দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই সমাধান আনবে বলেই ভারতের প্রত্যাশা।
আমিরাত সফর ও আঞ্চলিক সহযোগিতা
ইসরায়েল সফরের আগে আবুধাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদের সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠক হয়। সেখানে দুই দেশের যৌথ কমিশনের বৈঠক এবং কৌশলগত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, উন্নয়ন সহযোগিতা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

নতুন উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি
ভারত ও আমিরাত উভয় পক্ষই তাদের বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারত্বের গভীরতায় সন্তোষ প্রকাশ করে। আগামী বছরে অগ্রাধিকার খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে নতুন উদ্যোগ ও কার্যকর কর্মসূচিতে একমত হয় দুই দেশ।
আঞ্চলিক শান্তি ও বৈশ্বিক দায়বদ্ধতা
পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন জয়শঙ্কর ও শেখ আবদুল্লাহ। তারা আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় যৌথ স্বার্থের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর বাস্তবায়ন এবং গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনরায় দেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















