দুই হাজার পঁচিশ সাল বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে স্বর্ণের জন্য এক স্মরণীয় বছর হয়ে থাকবে। সুদের হার ওঠানামা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, মুদ্রানীতির অনিশ্চয়তা আর বিনিয়োগকারীদের আস্থার টানাপোড়েনে এই বছর স্বর্ণ আবারও প্রমাণ করেছে কেন তাকে নিরাপদ আশ্রয় বলা হয়। বাজারে ঝুঁকি নতুন করে মূল্যায়িত হয়েছে, আর সেই কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সোনা
বিশ্ববাজারে দামের নাটকীয় উত্থান
বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বর্ণের দামে ছিল রোমাঞ্চকর ওঠানামা। এক পর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম পৌঁছে যায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রায় চার হাজার তিনশ আশি ডলারে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে চব্বিশ ক্যারেট সোনার দাম অক্টোবরের শেষ দিকে প্রতি গ্রামে পাঁচশ পঁচিশ দিরহামের বেশি ছুঁয়ে যায়। এরপর হঠাৎ বড় ধরনের পতন দেখা গেলেও বছর শেষে আবার দাম ঘুরে দাঁড়ায়, যা গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে অন্যতম বড় দোলাচল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে
কেন দুই হাজার পঁচিশ হলো স্বর্ণের বছর
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ভূ রাজনৈতিক টানাপোড়েন একসঙ্গে এসে স্বর্ণকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। কখনো সুদের হার বাড়ার ইঙ্গিত, কখনো কাটছাঁটের সম্ভাবনা, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও পুরোপুরি না যাওয়া—সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা আবারও সোনার দিকে ঝুঁকেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে সাধারণ খুচরা ক্রেতা পর্যন্ত সবাই নিরাপত্তার খোঁজে স্বর্ণে ফিরেছেন

স্বর্ণ বনাম ডিজিটাল সম্পদ
দুই হাজার পঁচিশে স্বর্ণের সঙ্গে ডিজিটাল মুদ্রার তুলনা বারবার উঠে এসেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুই সম্পদের ভূমিকা আলাদা। ডিজিটাল সম্পদ যেখানে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্থির, সেখানে স্বর্ণ তার চিরাচরিত মূল্য সংরক্ষণের শক্ত অবস্থান আবারও প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য স্বর্ণ এখনো সবচেয়ে ভরসার সম্পদ হিসেবেই রয়ে গেছে
দুই হাজার ছাব্বিশের দিকেও আশাবাদ
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, দুই হাজার ছাব্বিশ সালে স্বর্ণের শক্ত অবস্থান বজায় থাকবে। যদিও দুই হাজার পঁচিশের মতো দ্রুতগতির উত্থান নাও দেখা যেতে পারে, তবু বৈশ্বিক ঋণ, সুদের হার কমার সম্ভাবনা ও ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি স্বর্ণকে সমর্থন জোগাবে। অনেক পূর্বাভাসেই আগামী সময়ে সোনার দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী থাকার ইঙ্গিত মিলছে
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















