নীতির জোর বনাম অর্থনৈতিক বাস্তবতা
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি সম্পাদকীয় বলছে, ক্যালিফোর্নিয়ার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখন এক পরিচিত সমস্যায় গিয়ে ঠেকছে—কোনো বড় ‘ক্লিন পাওয়ার’ প্রকল্প যদি সময়ের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে, কিন্তু চুক্তি ও বাধ্যবাধকতা সেটিকে টিকিয়ে রাখে, তখন কী হয়। আলোচনার কেন্দ্রে ইভানপাহ সৌর-থার্মাল স্থাপনা, যা একসময় বড় উদ্ভাবনের প্রতীক হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল। সম্পাদকীয়টি এটিকে “স্ট্র্যান্ডেড অ্যাসেট” হিসেবে দেখছে—যে সম্পদ থেকে লাভজনক বা প্রতিযোগিতামূলক আউটপুট পাওয়া কঠিন, তবু তার খরচ বিলের মাধ্যমে বহন করতে হয়।
মূল প্রশ্ন হলো রাজ্যের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ম্যান্ডেট এবং ইউটিলিটিগুলোর ক্রয়নীতি। দীর্ঘমেয়াদি পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (PPA) প্রাথমিক পর্যায়ের প্রকল্পকে স্থিতি দেয়, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেটিই ভোক্তার ওপর স্থায়ী ব্যয় চাপিয়ে দিতে পারে। গত এক দশকে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের খরচ কাঠামো বদলালেও, পুরনো কোনো প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক কাঠামো ইউটিলিটিকে বাধ্য করতে পারে আগের দামে বিদ্যুৎ কিনতে।

এটি নবায়নযোগ্য শক্তির প্রয়োজনীয়তা অস্বীকারের আলোচনা নয়। সম্পাদকীয়টি মূলত বলছে, নীতির নকশা ও প্রণোদনার কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ—কারণ গ্রিড বদলাচ্ছে, স্টোরেজ বাড়ছে, চাহিদা ব্যবস্থাপনা উন্নত হচ্ছে, এবং “রিলায়েবিলিটি”র সংজ্ঞাও বদলাচ্ছে। যে প্রকল্প একসময় ‘ডেমোনস্ট্রেশন’ হিসেবে অর্থবহ ছিল, সেটিই পরে রাজনৈতিক প্রতীকে পরিণত হয়: বন্ধ করলে ব্যর্থতা স্বীকারের মতো দেখায়, আর চালিয়ে গেলে অর্থনৈতিক অযৌক্তিকতা টিকে থাকে।
ইভানপাহের সুনাম-ঝুঁকিও আছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আলোচিত সৌর-থার্মাল প্রকল্পগুলোর একটি ছিল, কনসেন্ট্রেটেড সোলার পাওয়ার নিয়ে বড় প্রত্যাশা জড়িত ছিল। যখন এমন প্রকল্প সমস্যায় পড়ে, সমালোচকেরা এটিকে “গ্রিন ট্রানজিশন অতিরিক্ত ব্যয়বহুল” প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন। সমর্থকেরা বলেন, প্রাথমিক প্রকল্প প্রযুক্তিকে পরিণত করে, শেখার খরচ বাস্তব।
এখানে আরেকটি বড় টানাপোড়েন হলো জলবায়ু লক্ষ্য বনাম ভোক্তার সক্ষমতা। ক্যালিফোর্নিয়ার নীতি অনেক সময় জাতীয় মডেল হিসেবে দেখানো হয়, কিন্তু বিদ্যুতের উচ্চ মূল্য রাজনৈতিকভাবে দুর্বল জায়গা। মানুষ যদি পরিবর্তনকে শুধু “বাড়তি বিল” হিসেবে অনুভব করে, তাহলে দ্রুত ডিকার্বনাইজেশনের সামাজিক সমর্থন ধরে রাখা কঠিন হয়।

পরবর্তী ধাপের নীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে
বৃহত্তর প্রশ্ন হলো—পুরনো ‘ক্লিন’ সম্পদ কীভাবে পরিচালিত হবে, যখন নতুন প্রযুক্তি দ্রুত যোগ হচ্ছে। একটি পথ হলো চুক্তি পুনর্গঠন: ইউটিলিটি চুক্তি বাইআউট বা নতুন শর্তে খরচ কমানোর চেষ্টা করতে পারে। আরেকটি পথ হলো পরিকল্পিত অবসর—যদি নতুন সোলার-প্লাস-স্টোরেজ একই চাহিদা কম দামে পূরণ করতে পারে, তবে পুরনো প্ল্যান্ট ধাপে ধাপে বন্ধ করা।
এটি জবাবদিহিতার প্রশ্নও তোলে: পূর্বাভাস ভুল হলে ক্ষতি কে বহন করবে। যদি পুরোটা বিনিয়োগকারী বহন করে, ফাইন্যান্সিং কঠিন হতে পারে। আর যদি ভোক্তা বহন করে, আস্থা ক্ষয়ে যায়। বড় আকারের পুঁজি প্রবাহ ছাড়া ট্রানজিশন সম্ভব নয়, তাই ক্রয়নীতি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইভানপাহ বিতর্ক মনে করিয়ে দেয়, শক্তি পরিবর্তন কেবল প্রযুক্তির গল্প নয়। এটি চুক্তি, নিয়ন্ত্রক সিদ্ধান্ত, প্রণোদনা এবং “পুরনো সমাধান” কখন বদলাতে হবে—সেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেরও গল্প।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















