কুয়ালালামপুর ও সেলাঙ্গর জুড়ে চালানো ধারাবাহিক অভিযানে মালয়েশিয়ার ফেডারেল পুলিশের মাদক অপরাধ তদন্ত বিভাগ দেড় বিলিয়ন রিঙ্গিতেরও বেশি মূল্যের বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করেছে। পুলিশ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম বৃহৎ মাদক উদ্ধার অভিযান, যেখানে শিল্পমাত্রায় পরিচালিত একাধিক অবৈধ ল্যাবরেটরির সন্ধান মিলেছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছে ছয়জন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান
কুয়ালালামপুর পুলিশ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে মাদক অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান দাতুক হুসেইন ওমর খান জানান, শক্তিশালী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এই সাফল্য এসেছে। মঙ্গলবার প্রথম অভিযান চালানো হয় চেরাস এলাকায়। সেখানে একটি বাড়ি থেকে ছয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। তল্লাশিতে উদ্ধার হয় প্রায় তিন কেজি তরল এমডিএমএ।
পরবর্তী অভিযানে শিল্পমাত্রার ল্যাব
এরপর তামান টেইনটন ভিউ এলাকায় দ্বিতীয় অভিযানে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ সাদা গুঁড়া ও তরল কোকেন এবং নানা ধরনের মাদক প্রক্রিয়াজাত যন্ত্রপাতি। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, সেখানে প্রায় সাতশো আটত্রিশ কেজি সাদা গুঁড়া কোকেন এবং তিন হাজার তিনশো তিন কেজির বেশি তরল কোকেন পাওয়া যায়।

সেলাঙ্গর কেটামিনের বিশাল মজুত
তৃতীয় অভিযান চালানো হয় কাজাং এর সুংগা চুয়া শিল্প এলাকায়। সেখানে প্রায় তিন হাজার কেজির বেশি সাদা গুঁড়া কেটামিন এবং দশ হাজার কেজিরও বেশি তরল কেটামিন উদ্ধার হয়। এরপর কাজাং এর আরেকটি শিল্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে হলুদ প্যাকেটে ভরা প্রায় এক হাজার চারশো কেজি কেটামিন জব্দ করা হয়।
মোট জব্দের ভয়াবহ হিসাব
পুলিশ জানিয়েছে, পুরো অভিযানে প্রায় তিন কেজি এমডিএমএ, চার হাজার কেজির বেশি কোকেন এবং চৌদ্দ হাজার কেজির বেশি কেটামিন উদ্ধার হয়েছে। এই মাদক বাজারে ছড়ালে প্রায় ছয় কোটি পঁচাশি লাখ মানুষের ক্ষতি হতে পারত বলে দাবি পুলিশের।
আন্তর্জাতিক চক্রের ইঙ্গিত
তদন্তে উঠে এসেছে, এই চক্রটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সক্রিয় ছিল। ভাড়া নেওয়া বাড়ি ও ব্যবসায়িক স্থাপনা ব্যবহার করে তারা শিল্পমাত্রায় মাদক উৎপাদন করত। এসব মাদক মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে পাচারের জন্য প্রস্তুত করা হতো এবং এরই মধ্যে একাধিক চালান বিদেশে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।

গ্রেপ্তার ও আইনি ব্যবস্থা
গ্রেপ্তার ছয় জনের মধ্যে একজন মজুতাগারের দায়িত্বে ছিলেন এবং সহকারী রসায়নবিদ হিসেবে কাজ করতেন। অন্য দুজন আবাসিক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা ল্যাব পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বিপজ্জনক মাদক আইনের আওতায় মামলা হয়েছে, যেখানে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সন্দেহভাজনদের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সম্পদ জব্দ
মাদক মামলার পাশাপাশি পুলিশ প্রায় চার লাখ রিঙ্গিত মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি, ফর্কলিফট এবং একটি লরি, যা মাদক পরিবহন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত হতো।
#মালয়েশিয়া #মাদকবিরোধীঅভিযান #মাদকচক্র #পুলিশঅভিযান #আন্তর্জাতিকমাদক #অপরাধসংবাদ
Sarakhon Report 


















