মালয়েশিয়ায় সরকারি সেবা নিতে যেখানে একসময় মাসের পর মাস এমনকি বছরের অপেক্ষা ছিল, সেখানে এখন অনেক ক্ষেত্রেই মিনিটে মিলছে অনুমোদন। লালফিতার জট কমাতে চালু হওয়া بيرোক্রেটিক রেড টেপ সংস্কার উদ্যোগের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে সরকারি দপ্তর ও ব্যবসা-বাণিজ্যে। মালয়েশিয়া প্রোডাক্টিভিটি করপোরেশন জানিয়েছে, এই সংস্কারের ফলে ইতিমধ্যে তিন শতাধিক প্রকল্প সরাসরি উপকৃত হয়েছে এবং সাশ্রয় হয়েছে প্রায় দুই বিলিয়ন রিঙ্গিত।
সরকারি কাউন্টারে দ্রুততার নতুন অধ্যায়
মালয়েশিয়া প্রোডাক্টিভিটি কর্পোরেশনের উপ মহাপরিচালক ডা. মাজরিনা মোহামেদ ইব্রামসাহ জানান, আবেদন ও নথিপত্র প্রক্রিয়া সহজ করাই ছিল এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, রাজ্য সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জুড়ে এক হাজারের বেশি প্রকল্প নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েক শত প্রকল্প ইতিমধ্যে শেষ হওয়ায় পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে সময় ও খরচ দুটোই কমেছে।
মিনিটে কাজ শেষ, বদলেছে পরিকল্পনার ধারা
কাস্টমস বিভাগে চালু হওয়া স্মার্ট জিপিবি ব্যবস্থায় যে কাজ আগে তিন দিন লাগত, এখন তা শেষ হচ্ছে মাত্র এক মিনিটে। প্রবাসী কর্মীদের অনুমোদনের ক্ষেত্রেও সময় কমে এসেছে কয়েক মাস থেকে মাত্র কয়েক দিনে। কর্মকর্তাদের মতে, এগুলো ছোটখাটো উন্নতি নয়, বরং বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনার ধরনই পাল্টে দিচ্ছে।

প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা
এই সংস্কারের বড় চালিকা শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। স্বল্প জনবল থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক আবেদন দ্রুত যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায়। ফলে দেরি কমছে, খরচও বাড়াতে হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি দপ্তরের অভিজ্ঞতাও আগের তুলনায় অনেক সহজ ও স্বচ্ছ হয়ে উঠছে।
আন্তর্জাতিক সূচকে উন্নতি ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য
এই সংস্কারের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচকেও। সাম্প্রতিক মূল্যায়নে মালয়েশিয়ার অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। সামনে সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় একক কর্মদক্ষতা মানদণ্ড চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে দেশজুড়ে একইভাবে সংস্কার কার্যকর হয়। লক্ষ্য একটাই, সরকারি কাজ যেন আর ধৈর্যের পরীক্ষা না হয়ে সত্যিকারের সেবা হয়ে ওঠে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















