রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতির প্রধান ভরকেন্দ্র তেল। সেই অর্থপ্রবাহে ছেদ টানতেই এবার সমুদ্রে সাহসী কৌশলে নামল ইউক্রেন। কৃষ্ণসাগর ও ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার তথাকথিত ছায়া জাহাজে একের পর এক হামলার মাধ্যমে কিয়েভ স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—তেলের টাকা বন্ধ হলে যুদ্ধের ইঞ্জিনও থেমে যাবে।
সমুদ্রে বিস্তার নেওয়া সংঘাত
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেন চার দফায় রাশিয়ার ছায়া বহরের তেলবাহী জাহাজে আঘাত হানে। তিনটি জাহাজ কৃষ্ণসাগরে এবং একটি জাহাজ ভূমধ্যসাগরে আক্রান্ত হয়, যা ইউক্রেনের উপকূল থেকে বহু দূরে। এই হামলাগুলো প্রকাশ্যে স্বীকার করে ইউক্রেন দেখিয়েছে যে সমুদ্রে সংঘাতের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।

ছায়া বহর কেন লক্ষ্য
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়া বহু পুরোনো ও মালিকানা গোপন রাখা জাহাজ দিয়ে তেল পরিবহন করছে। এই ছায়া বহর ভারত ও চীনের মতো দেশে তেল পাঠিয়ে রাশিয়ার রাজস্ব ধরে রাখছে। ইউক্রেনের ধারণা, এই নেটওয়ার্কে আঘাত হানতে পারলে আলোচনার টেবিলে মস্কোর ওপর চাপ বাড়বে।
ড্রোন ও নৌবাহিনীর সমন্বয়
ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার দাবি, নৌবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত দ্রুতগতির ড্রোন ব্যবহার করে জাহাজগুলো অচল করা হয়েছে। আক্রান্ত জাহাজগুলো তখন খালি ছিল, তবে সেগুলো রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের দিকে যাচ্ছিল তেল তুলতে।

মস্কোর প্রতিক্রিয়া ও হুমকি
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলাকে জলদস্যুতা আখ্যা দিয়ে পাল্টা জবাবের হুমকি দিয়েছেন। তার বক্তব্য, এসব আঘাতে রাশিয়ার অবস্থান বদলাবে না। তবে একই সঙ্গে ইউক্রেনের বন্দর ও সেখানকার জাহাজগুলো লক্ষ্য করার ইঙ্গিতও দেন তিনি।
ইউরোপের উদ্বেগ ও অর্থনৈতিক প্রভাব
এই হামলায় বৈধ জাহাজের বিমা খরচ হঠাৎ বেড়ে গেছে। তুরস্কসহ আশপাশের দেশগুলো আশঙ্কা করছে, সংঘাত আরও বিস্তৃত হলে নৌপথে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ঝুঁকি বাড়বে।

আলোচনার পথে চাপ তৈরির চেষ্টা
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু জাহাজে আঘাত দিয়ে রাশিয়ার তেল রপ্তানি পুরোপুরি থামানো কঠিন। তবে শোধনাগার, তেল প্ল্যাটফর্ম ও ছায়া বহরের ওপর ধারাবাহিক চাপ রাশিয়ার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ইউক্রেন এই চাপকেই আলোচনার পথে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে দেখছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















