ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, ভূমি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। তাই ভূমিসেবা প্রদান করতে হলে সর্বোচ্চ সততা, দায়িত্বশীলতা ও গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল ভূমিসেবা চালুর ফলে একদিকে যেমন সেবাগ্রহীতাদের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে তেমনি নতুন কিছু চ্যালেঞ্জও সামনে এসেছে। অনলাইন নামজারি, খতিয়ান ও ভূমি কর ব্যবস্থাপনার মতো উদ্যোগগুলো সফল করতে হলে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সচেতনতা অপরিহার্য। সাধারণ মানুষের সচেতনতাই ডিজিটাল ভূমিসেবার প্রকৃত সাফল্যের চাবিকাঠি।
মঙ্গলবার রাজধানীর ভূমি ভবনের সভাকক্ষে ভূমিসেবা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে আয়োজিত মতবিনিময় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অটোমেটেড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম তুলে ধরেন অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী।

ভূমি সম্পদের গুরুত্ব ও অংশীজনের ভূমিকা
সিনিয়র সচিব বলেন, ভূমি মানুষের জীবনের অন্যতম মৌলিক সম্পদ। এই খাতে অংশীজনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ অনেকাংশে কমে আসে। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া আরও বাস্তবসম্মত হয় এবং জবাবদিহি বৃদ্ধি পায়। তিনি উল্লেখ করেন, ভূমি জরিপ, অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ন্যায্য অধিকার বিবেচনায় নিলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সহজ হয় এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগও কমে যায়।
জনবান্ধব ও স্বচ্ছ ভূমিসেবার প্রয়োজন
তিনি আরও বলেন, ভূমিসেবা ব্যবস্থাকে জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে হলে অংশীজনদের অংশগ্রহণকে নীতিগত অঙ্গীকারে পরিণত করতে হবে। অংশগ্রহণমূলক ভূমি শাসনই দীর্ঘদিনের জমে থাকা ভূমি সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এর মাধ্যমে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে এবং টেকসই উন্নয়নের পথ আরও সুগম হবে।

বহুমাত্রিক অংশীজনের সম্পৃক্ততার আহ্বান
সিনিয়র সচিব বলেন, ভূমিসেবার অংশীজন শুধু ভূমি মন্ত্রণালয় বা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাধারণ ভূমিমালিক, প্রান্তিক কৃষক, দলিল লেখক, আইনজীবী, জরিপকারী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এই বহুমাত্রিক অংশীজনদের মতামত ও অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই ভূমিসেবা নিশ্চিত করা কঠিন। তিনি সবাইকে ভূমি অফিস পরিদর্শনের আহ্বান জানান এবং গঠনমূলক পরামর্শ প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এ. জে. এম সালাহউদ্দীন নাগরী, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















