জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চলে আবারও ঘনাল আতঙ্ক। গভীর রাতে দরজা ভেঙে বাসিন্দাদের বের করে দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি নামিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো একটি বহুতল আবাসিক ভবন। এক মুহূর্তে ঘরহারা হয়ে পড়লেন শতাধিক ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ ।
সিলওয়ানে ভাঙনের রাত
পুরনো শহরের কাছের সিলওয়ান এলাকায় সোমবার ভোরে শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। চারতলা ওই ভবনে ছিল এক ডজনের মতো ফ্ল্যাট। বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দরজা ভেঙে ঢুকে কর্তৃপক্ষ জানায়, কেবল জামাকাপড় বদলানো আর জরুরি কাগজ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। পাঁচ সন্তানের বাবা ঈদ শাওয়ার জানান, কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় পরিবার নিয়ে তাকে গাড়িতেই রাত কাটাতে হবে।
একশ মানুষের মাথার ওপর ছাদ নেই
ভবনটিতে প্রায় একশ মানুষ বসবাস করতেন। সকাল গড়াতেই তিনটি বুলডোজার ভবনের বড় অংশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। চারপাশের সড়ক ঘিরে রাখা হয়, ছাদে অবস্থান নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের কাপড়চোপড় ও আসবাব।
অনুমতির অজুহাত, বিতর্কের কেন্দ্রে নীতি
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, ভবনটি অনুমতি ছাড়া নির্মিত এবং এটি অবসর ও ক্রীড়া ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত এলাকায় ছিল। পৌরসভা জানায়, আদালতের পুরোনো আদেশ অনুযায়ীই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এটি পূর্ব জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার ধারাবাহিক নীতির অংশ।
মানবাধিকার সংগঠনের সতর্কতা
স্থানীয় দুইটি মানবাধিকার সংগঠন জানায়, চলতি বছরে এটি সবচেয়ে বড় ধ্বংস অভিযান। তাদের হিসাবে, শুধু এই ঘটনায়ই প্রায় একশ পরিবার ঘর হারাল। অভিযোগ করা হয়, বৈঠক ডাকার কথা থাকলেও কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ভাঙন চালানো হয়েছে।
ব্যথা আর অনিশ্চয়তা
ভবন ভাঙার দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। এক বাসিন্দা জানান, সেখানে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীও ছিলেন। এই উচ্ছেদ শুধু ঘর নয়, মানুষের জীবনের নিরাপত্তাবোধও কেড়ে নিচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















