হাতিয়ায় ভয়াবহ সংঘর্ষ
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। মঙ্গলবার সকালে জাগলার চর এলাকায় এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল ও সময়
পুলিশ জানায়, সকাল প্রায় ১০টার দিকে সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। চরটি দুর্গম হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে।
নিহতদের পরিচয়
নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তারা হলেন সামসুদ্দিন, তার ছেলে মোবারক এবং ৪০ বছর বয়সী আলাউদ্দিন, যিনি মহিউদ্দিনের ছেলে। বাকি নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
চরের দখল ও পটভূমি
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, জাগলার চরে বর্তমানে কয়েকশ’ ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। চরটির প্রায় অর্ধেক সরকারি জমি হলেও বাকি অংশ দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হিরণী ইউনিয়নের ফারিদ মেম্বার, যিনি ফারিদ কমান্ডার নামেও পরিচিত, এবং সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিকের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল বছরের পর বছর ধরে এই চর ও নবজাগ্রত জমি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
জমি বিক্রির অভিযোগ
এই গোষ্ঠীটি ভূমিহীনদের কাছে একরপ্রতি প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় জমি বিক্রি করত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
সংঘর্ষের সূত্রপাত
মঙ্গলবার সকালে কাউয়া কামাল, আলাউদ্দিন ও নিজাম মেম্বারের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল চরটির দখল নিতে সেখানে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে ফারিদ ও মুশফিকের সমর্থকেরা মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে পাল্টা হামলা চালায়।
প্রাণহানি ও আহত
সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আলাউদ্দিনকে গুরুতর অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সামসুদ্দিন, তার ছেলে মোবারকসহ ফারিদ-মুশফিক পক্ষের আরও দুজনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল আলম জানান, মোট পাঁচজন নিহত হয়েছে এবং চরটি দুর্গম হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হয়েছে। নতুন করে সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদার
পুলিশের পাশাপাশি কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুরো এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















