ওয়াশিংটন থেকে আসা এক গুরুত্বপূর্ণ মামলাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধকতায় ভুগছেন কি না, তা নির্ধারণে আইকিউ পরীক্ষার ভূমিকা কতটা হওয়া উচিত, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিচারপতিরা। তবে এই রায়ের প্রভাব শুধু মৃত্যুদণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে আশঙ্কা করছে প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মী সংগঠনগুলো।
মামলার মূল প্রশ্ন
আলাবামা থেকে আসা এই মামলায় আদালত বিবেচনা করছে, যখন একজন ব্যক্তির একাধিক আইকিউ পরীক্ষার ফলাফলের বেশির ভাগই সত্তরের ওপরে থাকে, কিন্তু সব নয়, তখন কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতদিন আদালত বলেছে, একটি মাত্র আইকিউ স্কোরের ওপর ভর করে কাউকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নন বলে ঘোষণা করা যায় না। ত্রুটির সম্ভাবনা এবং ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনে কার্যক্ষমতার দিকটিও বিবেচনায় নিতে হবে।
অধিকারকর্মীদের উদ্বেগ
প্রতিবন্ধী অধিকার সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, যদি আদালত শুধু নির্দিষ্ট একটি সংখ্যার ওপর জোর দেয়, তাহলে এর প্রভাব পড়তে পারে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা সহায়তা ও আয়ভিত্তিক সরকারি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কর্মক্ষম বয়সী যাঁরা বিশেষ সহায়তা ভাতা পান, তাঁদের একটি বড় অংশই এই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধকতার কারণেই যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

ক্লিনিক্যাল সংজ্ঞা বনাম সংখ্যা
দ্য আর্ক নামের একটি জাতীয় সংগঠনের আইন উপদেষ্টা শিরা ওয়াকশলাগের মতে, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধকতা কোনো সংখ্যা নয়, এটি একটি অবস্থা। তাঁর ভাষায়, ক্লিনিক্যাল সংজ্ঞা থেকে সরে গেলে ভবিষ্যতে আদালত ও সরকারি সংস্থাগুলো এই বিষয়টি কীভাবে ব্যাখ্যা করবে, তা নিয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি হবে।
বিচারপতিদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি
আদালতের শুনানিতে বিচারপতি কেতনজি ব্রাউন জ্যাকসন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সত্যে পৌঁছাতে হলে একজন ব্যক্তির জীবনের নানা দিক বিবেচনা করা জরুরি। অন্যদিকে বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো মত দেন, নির্দিষ্ট মানদণ্ড থাকলে মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত মামলায় ধারাবাহিকতা ও পূর্বানুমেয়তা বজায় রাখা সহজ হবে।
দূরপ্রসারী প্রভাবের আশঙ্কা
অধিকারকর্মীদের দাবি, মৃত্যুদণ্ডের মামলা মোট বুদ্ধিপ্রতিবন্ধকতা নির্ধারণের খুবই সামান্য অংশ। কিন্তু এই রায় যদি দৃষ্টান্ত হয়ে যায়, তাহলে সারা দেশে ভবিষ্যৎ মামলার রায় এবং সরকারি নীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। ওয়াকশলাগের মতে, ক্লিনিক্যাল সংজ্ঞা থেকে সরে যাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত হতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















