০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা

নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ

নরওয়ের বড়দিন মানেই আলো, উৎসব আর পারিবারিক টেবিলে বসে দীর্ঘ আড্ডা। সেই টেবিলেই আবার ফিরছে এক সময় প্রায় হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী খাবার লুটেফিস্ক। স্বচ্ছ জেলির মতো দেখতে, তীব্র গন্ধের এই মাছ বহু বছর ধরে নরওয়েজিয়ানদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই পুরোনো স্বাদের প্রতি।

শৈশবের আতঙ্ক থেকে নস্টালজিয়ার টানে
শুকনো সাদা মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করে বানানো লুটেফিস্ক এক সময় নরওয়ের বড়দিনের প্রধান খাবার ছিল। অনেকের শৈশবের স্মৃতিতে এটি ছিল বিরক্তির নাম, আবার কারও কাছে পারিবারিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রুচি বদলেছে। এক সময় যে খাবার এড়িয়ে চলতেন অনেকেই, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটিই হয়ে উঠছে উৎসবের নস্টালজিক প্রতীক।

কমে যাওয়া জনপ্রিয়তা, নতুন করে আগ্রহ
বর্তমানে বড়দিনের প্রধান খাবার হিসেবে নরওয়েতে লুটেফিস্ক বেছে নেন খুব অল্প মানুষ। ভেড়ার মাংস কিংবা শূকরের মাংস বেশি জনপ্রিয়। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তরুণদের মধ্যে নিজেদের খাবারের ইতিহাস জানার আগ্রহ বেড়েছে। এর ফলেই রেস্তোরাঁয় ও পারিবারিক আয়োজনে আবার জায়গা করে নিচ্ছে লুটেফিস্ক।

Jessica Furseth, pictured with her grandmother, grew up in Norway and ate lutefisk every Christmas Eve during her younger years.

কঠিন স্বাদই শক্তি
লুটেফিস্কের গঠন, গন্ধ ও স্বাদ সহজে ভালো লাগার মতো নয়। তবুও খাদ্য গবেষকদের মতে, আধুনিক খাদ্যধারায় ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জিং স্বাদই অনেক সময় আকর্ষণ তৈরি করে। অদ্ভুতত্বই এই খাবারের নতুন শক্তি হয়ে উঠছে।

ঐতিহ্যের গল্প আর ইতিহাস
লুটেফিস্কের উৎপত্তি নিয়ে নিশ্চিত ইতিহাস নেই। তবে শত শত বছর আগে খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনে এই পদ্ধতির জন্ম। সময়ের সঙ্গে এটি দৈনন্দিন খাবার থেকে বড়দিনের আচারিক খাবারে পরিণত হয়। কঠিন সময়ের স্মৃতি, সীমিত উপকরণ আর অপচয় না করার মানসিকতাই গড়ে তুলেছে এই খাদ্যসংস্কৃতি।

Norwegians typically celebrate Christmas on December 24.

নতুন সাজে পুরোনো খাবার
আজকের লুটেফিস্ক আর আগের মতো একঘেয়ে নয়। মাখন, আলু, মটরশুঁটি, বেকনের সঙ্গে নানা স্বাদের সংযোজন এই খাবারকে করেছে উৎসবমুখর। কোথাও আবার আধুনিক রান্নার ছোঁয়ায় যোগ হচ্ছে নতুন স্বাদ। এই পরিবর্তনই তরুণদের টানছে ঐতিহ্যবাহী খাবারের দিকে।

প্রজন্মের সেতুবন্ধন
লুটেফিস্ক শুধু একটি খাবার নয়, এটি পারিবারিক স্মৃতি আর প্রজন্মের সংযোগ। মা, নানি কিংবা দাদির হাত ধরে শেখা রান্নার রীতি আজও পরিবারের গল্প হয়ে টিকে আছে। স্বাদের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে একসঙ্গে বসে কাটানো সময় আর স্মৃতির উত্তরাধিকার।

জনপ্রিয় সংবাদ

নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ

নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ

০৪:০০:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নরওয়ের বড়দিন মানেই আলো, উৎসব আর পারিবারিক টেবিলে বসে দীর্ঘ আড্ডা। সেই টেবিলেই আবার ফিরছে এক সময় প্রায় হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী খাবার লুটেফিস্ক। স্বচ্ছ জেলির মতো দেখতে, তীব্র গন্ধের এই মাছ বহু বছর ধরে নরওয়েজিয়ানদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই পুরোনো স্বাদের প্রতি।

শৈশবের আতঙ্ক থেকে নস্টালজিয়ার টানে
শুকনো সাদা মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করে বানানো লুটেফিস্ক এক সময় নরওয়ের বড়দিনের প্রধান খাবার ছিল। অনেকের শৈশবের স্মৃতিতে এটি ছিল বিরক্তির নাম, আবার কারও কাছে পারিবারিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রুচি বদলেছে। এক সময় যে খাবার এড়িয়ে চলতেন অনেকেই, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটিই হয়ে উঠছে উৎসবের নস্টালজিক প্রতীক।

কমে যাওয়া জনপ্রিয়তা, নতুন করে আগ্রহ
বর্তমানে বড়দিনের প্রধান খাবার হিসেবে নরওয়েতে লুটেফিস্ক বেছে নেন খুব অল্প মানুষ। ভেড়ার মাংস কিংবা শূকরের মাংস বেশি জনপ্রিয়। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তরুণদের মধ্যে নিজেদের খাবারের ইতিহাস জানার আগ্রহ বেড়েছে। এর ফলেই রেস্তোরাঁয় ও পারিবারিক আয়োজনে আবার জায়গা করে নিচ্ছে লুটেফিস্ক।

Jessica Furseth, pictured with her grandmother, grew up in Norway and ate lutefisk every Christmas Eve during her younger years.

কঠিন স্বাদই শক্তি
লুটেফিস্কের গঠন, গন্ধ ও স্বাদ সহজে ভালো লাগার মতো নয়। তবুও খাদ্য গবেষকদের মতে, আধুনিক খাদ্যধারায় ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জিং স্বাদই অনেক সময় আকর্ষণ তৈরি করে। অদ্ভুতত্বই এই খাবারের নতুন শক্তি হয়ে উঠছে।

ঐতিহ্যের গল্প আর ইতিহাস
লুটেফিস্কের উৎপত্তি নিয়ে নিশ্চিত ইতিহাস নেই। তবে শত শত বছর আগে খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনে এই পদ্ধতির জন্ম। সময়ের সঙ্গে এটি দৈনন্দিন খাবার থেকে বড়দিনের আচারিক খাবারে পরিণত হয়। কঠিন সময়ের স্মৃতি, সীমিত উপকরণ আর অপচয় না করার মানসিকতাই গড়ে তুলেছে এই খাদ্যসংস্কৃতি।

Norwegians typically celebrate Christmas on December 24.

নতুন সাজে পুরোনো খাবার
আজকের লুটেফিস্ক আর আগের মতো একঘেয়ে নয়। মাখন, আলু, মটরশুঁটি, বেকনের সঙ্গে নানা স্বাদের সংযোজন এই খাবারকে করেছে উৎসবমুখর। কোথাও আবার আধুনিক রান্নার ছোঁয়ায় যোগ হচ্ছে নতুন স্বাদ। এই পরিবর্তনই তরুণদের টানছে ঐতিহ্যবাহী খাবারের দিকে।

প্রজন্মের সেতুবন্ধন
লুটেফিস্ক শুধু একটি খাবার নয়, এটি পারিবারিক স্মৃতি আর প্রজন্মের সংযোগ। মা, নানি কিংবা দাদির হাত ধরে শেখা রান্নার রীতি আজও পরিবারের গল্প হয়ে টিকে আছে। স্বাদের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে একসঙ্গে বসে কাটানো সময় আর স্মৃতির উত্তরাধিকার।