০১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত সন্ত্রাস দমনে অপ্রবেশ্য নিরাপত্তা বলয়, সংঘটিত অপরাধে সর্বমুখী আঘাতের ঘোষণা অমিত শাহের ইসরায়েলের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডকে, আফ্রিকার শিংয়ে নতুন ভূরাজনৈতিক ঢেউ চীনা যুদ্ধবিমানের প্রধান ক্রেতা হিসেবে পাকিস্তানের উত্থান, পেন্টাগনের প্রতিবেদনে স্পষ্ট বার্তা পাকিস্তানে সৌর বিদ্যুতের উত্থান, নারীরা কি কেবল দর্শক চৌদ্দ দেশের কণ্ঠে একসুর, পশ্চিম তীরে নতুন ইহুদি বসতি সম্প্রসারণে ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা

ইউএই মরুভূমির পাঁচশ মিটার ওপরে নিঃশব্দ উড়াল, রাস আল খাইমায় হট এয়ার বেলুনের ভেতরের গল্প শুরু হচ্ছে

ভোরের আলো ফোটার ঠিক আগে রাস আল খাইমার মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে বিশাল এক ঝুড়ির ভেতরে ওঠা। মাথার ওপর রঙিন কাপড়ের এক বিশাল গম্বুজ ধীরে ধীরে ফুলে উঠছে। নিয়ন্ত্রণ বলতে কিছু নেই, নেই কোনো স্টিয়ারিং কিংবা ব্রেক। শুধু বাতাস আর তাপের ওপর ভর করে শুরু হচ্ছে এক নিঃশব্দ উড়াল। প্রথমে ভয়, তারপর ধীরে ধীরে বিস্ময়ে বদলে যাওয়া সেই অনুভূতিই এই হট এয়ার বেলুন ভ্রমণের আসল আকর্ষণ।

এই অভিজ্ঞতার আয়োজন করেছে রাস আল খাইমাভিত্তিক অ্যাকশনফ্লাইট। জনপ্রতি প্রায় এক হাজার দিরহাম খরচে অংশ নেওয়া যায় এই উড়ালে। সূর্য ওঠার আগেই নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে বলা হয় যাত্রীদের। রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে চার চাকার গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় মরুভূমির ভেতরে। ঝোপঝাড় পেরিয়ে ছোট একটি খামার এলাকা, সেখান থেকে খোলা প্রান্তর। অপেক্ষার সময় গরম কফি, চা আর বিস্কুটে শুরু হয় দিনের প্রস্তুতি।

উড্ডয়নের আগে প্রস্তুতি
খোলা প্রান্তরে মাটিতে শুয়ে থাকে বেলুনের বিশাল কাপড়। পাইলট জে পি লেমেয়ার যাত্রীদের সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা দেন। একটি বেলুনে পাইলটসহ প্রায় বিশজন উঠতে পারেন। সবার জন্য দেওয়া হয় নিরাপত্তা বেল্ট, যা ঝুড়ির ভেতরে আটকানো থাকে। গ্যাস বার্নার চালু হতেই প্রচণ্ড শব্দে গরম বাতাস ভরে ওঠে বেলুনে। ধীরে ধীরে ঝুড়ি সোজা হয়ে দাঁড়ায়, আর বোঝার আগেই মাটি ছেড়ে আকাশে ভেসে ওঠে বেলুন।

Inside RAK'S hot air balloon that soars 500M over the UAE desert -  PressReader

বাতাসের স্রোতেই পথচলা
হট এয়ার বেলুনের নেই কোনো দিকনির্দেশক যন্ত্র। পাইলট শুধু তাপ নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চতা বদলাতে পারেন। ভিন্ন উচ্চতায় ভিন্ন বাতাসের স্রোত ধরেই এগিয়ে যায় বেলুন। কখনো মরুভূমির বালিয়াড়ির কয়েক মিটার ওপর দিয়ে উড়ে চলা, আবার কখনো প্রায় পাঁচশ মিটার ওপরে উঠে অন্য স্রোত ধরার চেষ্টা। পুরো যাত্রায় শব্দহীন ভেসে চলা, শুধু মাঝে মাঝে বার্নারের গর্জন নীরবতা ভাঙে।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে বদলে যাওয়া দৃশ্য
আকাশে উঠতেই সূর্যের প্রথম আলো পড়ে মরুভূমির বুকে। যত দূর চোখ যায়, শুধু বালিয়াড়ি আর বালিয়াড়ি। দূরে ছোট ছোট বিন্দুর মতো দেখা যায় উটের দল। দিগন্তে ধীরে ধীরে আলো ছড়ায় হাজর পর্বতমালার ওপর, যা উত্তর-পূর্ব আমিরাত পেরিয়ে ওমান পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দৃশ্য অনেকের জন্য জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকে।

আকাশে আরও রোমাঞ্চ
উড়ন্ত অবস্থায় দূরে দেখা মেলে দুজনের ছোট একটি বিমান। সেটিও অ্যাকশনফ্লাইটের অংশ। বেলুনের চারপাশে ঘুরে ঘুরে আকাশে দুঃসাহসিক কসরত দেখাতে থাকে বিমানটি। নিচে নিস্তব্ধ মরুভূমি, ওপরে রোমাঞ্চকর আকাশযাত্রা, দুয়ের মিশেলে অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে আরও গভীর।

নির্দিষ্ট গন্তব্যহীন অবতরণ
প্রায় এক ঘণ্টা পর অবতরণের প্রস্তুতি শুরু হয়। বেলুনের ওপরে থাকা ভেন্ট খুলে ধীরে ধীরে গরম বাতাস বের করে দেওয়া হয়। নেমে আসে বেলুন। বালুর ওপর দু-একটি নরম ধাক্কার পর শেষ হয় যাত্রা। নেই কোনো রানওয়ে, নেই নির্দিষ্ট গন্তব্য। যেখানে বাতাস নামিয়ে দেয়, সেখানেই শেষ হয় উড়াল। নিঃশব্দে মরুভূমিতে ফিরে আসাই এই ভ্রমণের শেষ গল্প।

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই

ইউএই মরুভূমির পাঁচশ মিটার ওপরে নিঃশব্দ উড়াল, রাস আল খাইমায় হট এয়ার বেলুনের ভেতরের গল্প শুরু হচ্ছে

১১:৫৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ভোরের আলো ফোটার ঠিক আগে রাস আল খাইমার মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে বিশাল এক ঝুড়ির ভেতরে ওঠা। মাথার ওপর রঙিন কাপড়ের এক বিশাল গম্বুজ ধীরে ধীরে ফুলে উঠছে। নিয়ন্ত্রণ বলতে কিছু নেই, নেই কোনো স্টিয়ারিং কিংবা ব্রেক। শুধু বাতাস আর তাপের ওপর ভর করে শুরু হচ্ছে এক নিঃশব্দ উড়াল। প্রথমে ভয়, তারপর ধীরে ধীরে বিস্ময়ে বদলে যাওয়া সেই অনুভূতিই এই হট এয়ার বেলুন ভ্রমণের আসল আকর্ষণ।

এই অভিজ্ঞতার আয়োজন করেছে রাস আল খাইমাভিত্তিক অ্যাকশনফ্লাইট। জনপ্রতি প্রায় এক হাজার দিরহাম খরচে অংশ নেওয়া যায় এই উড়ালে। সূর্য ওঠার আগেই নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে বলা হয় যাত্রীদের। রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে চার চাকার গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় মরুভূমির ভেতরে। ঝোপঝাড় পেরিয়ে ছোট একটি খামার এলাকা, সেখান থেকে খোলা প্রান্তর। অপেক্ষার সময় গরম কফি, চা আর বিস্কুটে শুরু হয় দিনের প্রস্তুতি।

উড্ডয়নের আগে প্রস্তুতি
খোলা প্রান্তরে মাটিতে শুয়ে থাকে বেলুনের বিশাল কাপড়। পাইলট জে পি লেমেয়ার যাত্রীদের সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা দেন। একটি বেলুনে পাইলটসহ প্রায় বিশজন উঠতে পারেন। সবার জন্য দেওয়া হয় নিরাপত্তা বেল্ট, যা ঝুড়ির ভেতরে আটকানো থাকে। গ্যাস বার্নার চালু হতেই প্রচণ্ড শব্দে গরম বাতাস ভরে ওঠে বেলুনে। ধীরে ধীরে ঝুড়ি সোজা হয়ে দাঁড়ায়, আর বোঝার আগেই মাটি ছেড়ে আকাশে ভেসে ওঠে বেলুন।

Inside RAK'S hot air balloon that soars 500M over the UAE desert -  PressReader

বাতাসের স্রোতেই পথচলা
হট এয়ার বেলুনের নেই কোনো দিকনির্দেশক যন্ত্র। পাইলট শুধু তাপ নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চতা বদলাতে পারেন। ভিন্ন উচ্চতায় ভিন্ন বাতাসের স্রোত ধরেই এগিয়ে যায় বেলুন। কখনো মরুভূমির বালিয়াড়ির কয়েক মিটার ওপর দিয়ে উড়ে চলা, আবার কখনো প্রায় পাঁচশ মিটার ওপরে উঠে অন্য স্রোত ধরার চেষ্টা। পুরো যাত্রায় শব্দহীন ভেসে চলা, শুধু মাঝে মাঝে বার্নারের গর্জন নীরবতা ভাঙে।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে বদলে যাওয়া দৃশ্য
আকাশে উঠতেই সূর্যের প্রথম আলো পড়ে মরুভূমির বুকে। যত দূর চোখ যায়, শুধু বালিয়াড়ি আর বালিয়াড়ি। দূরে ছোট ছোট বিন্দুর মতো দেখা যায় উটের দল। দিগন্তে ধীরে ধীরে আলো ছড়ায় হাজর পর্বতমালার ওপর, যা উত্তর-পূর্ব আমিরাত পেরিয়ে ওমান পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দৃশ্য অনেকের জন্য জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকে।

আকাশে আরও রোমাঞ্চ
উড়ন্ত অবস্থায় দূরে দেখা মেলে দুজনের ছোট একটি বিমান। সেটিও অ্যাকশনফ্লাইটের অংশ। বেলুনের চারপাশে ঘুরে ঘুরে আকাশে দুঃসাহসিক কসরত দেখাতে থাকে বিমানটি। নিচে নিস্তব্ধ মরুভূমি, ওপরে রোমাঞ্চকর আকাশযাত্রা, দুয়ের মিশেলে অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে আরও গভীর।

নির্দিষ্ট গন্তব্যহীন অবতরণ
প্রায় এক ঘণ্টা পর অবতরণের প্রস্তুতি শুরু হয়। বেলুনের ওপরে থাকা ভেন্ট খুলে ধীরে ধীরে গরম বাতাস বের করে দেওয়া হয়। নেমে আসে বেলুন। বালুর ওপর দু-একটি নরম ধাক্কার পর শেষ হয় যাত্রা। নেই কোনো রানওয়ে, নেই নির্দিষ্ট গন্তব্য। যেখানে বাতাস নামিয়ে দেয়, সেখানেই শেষ হয় উড়াল। নিঃশব্দে মরুভূমিতে ফিরে আসাই এই ভ্রমণের শেষ গল্প।