০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ভারতের পানি সংকটের ছায়ায় পানীয় শিল্প: রাজস্থানে জল নিয়ে বাড়ছে ঝুঁকি ও অসন্তোষ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৭) আমির খসরুর আসন পরিবর্তন, তার আসনে মনোনয়ন পেলেন সাঈদ নোমান এনসিপি ছাড়লেন তাসনিম জারা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সিলেটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নিষিদ্ধ বিড়িসহ যুবক গ্রেপ্তার একীভূত পাঁচ ব্যাংকের আমানত উত্তোলনে বিলম্ব, এ বছর অর্থ ছাড়ের সুযোগ নেই নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন: ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৩৫ বস্তা টাকা ও স্বর্ণালংকার ঘন কুয়াশায় ঢাকায় আটটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হলো

ভারতের পানি সংকটের ছায়ায় পানীয় শিল্প: রাজস্থানে জল নিয়ে বাড়ছে ঝুঁকি ও অসন্তোষ

ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, বাড়তে থাকা শিল্প উৎপাদন আর ক্রমশ কমে আসা পানির জোগান—এই তিনের সংঘাতে নতুন করে চাপের মুখে পড়েছে পানীয় ও মদ প্রস্তুতকারক বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বিশেষ করে রাজস্থানের মতো শুষ্ক রাজ্যে জল ব্যবস্থাপনা এখন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে

পানির অভাব আর শিল্পের চাপ

ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় সতেরো শতাংশ মানুষ বাস করলেও দেশের কাছে রয়েছে বিশ্বের মাত্র চার শতাংশ মিঠা পানি। সেই বাস্তবতায় রাজস্থানের পরিস্থিতি আরও জটিল। রাজ্যের বড় অংশ থর মরুভূমিতে পড়ায় ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। সরকারিভাবে দেখা যাচ্ছে, অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের হার প্রাকৃতিক পুনর্ভরণের ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। এই অবস্থায় শিল্প, কৃষি, পর্যটন ও গৃহস্থালি ব্যবহারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।

Workers pack alcohol bottles inside the bottling unit of Diageo, in Alwar

আইনের বাধ্যবাধকতা ও কারখানার বাস্তবতা

ভারতের আইনে রাজ্যের বাইরে মদ পরিবহনে কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় আন্তর্জাতিক পানীয় কোম্পানিগুলোকে প্রতিটি রাজ্যে আলাদা উৎপাদন ইউনিট স্থাপন করতে হয়। ফলে পানির ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও রাজস্থানে কারখানা চালু রাখা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হেইনেকেন, কার্লসবার্গ ও ডিয়াজিওর মতো সংস্থাগুলো জল দক্ষতা বাড়ানো, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং ব্যবহৃত পানির পুরোটা পুনরায় প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগের কথা বলছে।

আলওয়ারে বাড়ছে স্থানীয় ক্ষোভ

রাজস্থানের শিল্প শহর আলওয়ারে পানির সংকট সবচেয়ে স্পষ্ট। এখানে অনেক গ্রামে সপ্তাহে মাত্র একদিন পাইপলাইনের পানি আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, পানীয় শিল্পের কারখানাগুলো দিনে লক্ষ লক্ষ লিটার ভূগর্ভস্থ পানি তুললেও সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ অপেক্ষা আর বাড়তি খরচের মুখে পড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ এই সংকটের জন্য সরাসরি শিল্প কারখানাগুলোকে দায়ী করছেন, যদিও আদালত নিযুক্ত পরিদর্শক দল নিয়ম লঙ্ঘনের প্রমাণ পায়নি।

Women use a water tanker to fill buckets of water, in Alwar

আদালতের নজরদারি ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি

পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনকারী এলাকায় নতুন শিল্পের অনুমতি না দিতে এবং পুরোনো অনুমতিগুলো কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে ভবিষ্যতে পানীয় শিল্পের সম্প্রসারণ আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট প্রকল্পের পাশাপাশি বড় পরিসরের অবকাঠামোগত উদ্যোগ ছাড়া এই সংকট কাটানো কঠিন।

A general view of a pond which was disilted by Diageo, in Alwar

 

A worker fills alcohol bottles, in Alwar

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের পানি সংকটের ছায়ায় পানীয় শিল্প: রাজস্থানে জল নিয়ে বাড়ছে ঝুঁকি ও অসন্তোষ

ভারতের পানি সংকটের ছায়ায় পানীয় শিল্প: রাজস্থানে জল নিয়ে বাড়ছে ঝুঁকি ও অসন্তোষ

০৩:০০:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, বাড়তে থাকা শিল্প উৎপাদন আর ক্রমশ কমে আসা পানির জোগান—এই তিনের সংঘাতে নতুন করে চাপের মুখে পড়েছে পানীয় ও মদ প্রস্তুতকারক বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বিশেষ করে রাজস্থানের মতো শুষ্ক রাজ্যে জল ব্যবস্থাপনা এখন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে

পানির অভাব আর শিল্পের চাপ

ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় সতেরো শতাংশ মানুষ বাস করলেও দেশের কাছে রয়েছে বিশ্বের মাত্র চার শতাংশ মিঠা পানি। সেই বাস্তবতায় রাজস্থানের পরিস্থিতি আরও জটিল। রাজ্যের বড় অংশ থর মরুভূমিতে পড়ায় ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। সরকারিভাবে দেখা যাচ্ছে, অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের হার প্রাকৃতিক পুনর্ভরণের ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। এই অবস্থায় শিল্প, কৃষি, পর্যটন ও গৃহস্থালি ব্যবহারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।

Workers pack alcohol bottles inside the bottling unit of Diageo, in Alwar

আইনের বাধ্যবাধকতা ও কারখানার বাস্তবতা

ভারতের আইনে রাজ্যের বাইরে মদ পরিবহনে কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় আন্তর্জাতিক পানীয় কোম্পানিগুলোকে প্রতিটি রাজ্যে আলাদা উৎপাদন ইউনিট স্থাপন করতে হয়। ফলে পানির ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও রাজস্থানে কারখানা চালু রাখা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হেইনেকেন, কার্লসবার্গ ও ডিয়াজিওর মতো সংস্থাগুলো জল দক্ষতা বাড়ানো, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং ব্যবহৃত পানির পুরোটা পুনরায় প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগের কথা বলছে।

আলওয়ারে বাড়ছে স্থানীয় ক্ষোভ

রাজস্থানের শিল্প শহর আলওয়ারে পানির সংকট সবচেয়ে স্পষ্ট। এখানে অনেক গ্রামে সপ্তাহে মাত্র একদিন পাইপলাইনের পানি আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, পানীয় শিল্পের কারখানাগুলো দিনে লক্ষ লক্ষ লিটার ভূগর্ভস্থ পানি তুললেও সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ অপেক্ষা আর বাড়তি খরচের মুখে পড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ এই সংকটের জন্য সরাসরি শিল্প কারখানাগুলোকে দায়ী করছেন, যদিও আদালত নিযুক্ত পরিদর্শক দল নিয়ম লঙ্ঘনের প্রমাণ পায়নি।

Women use a water tanker to fill buckets of water, in Alwar

আদালতের নজরদারি ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি

পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনকারী এলাকায় নতুন শিল্পের অনুমতি না দিতে এবং পুরোনো অনুমতিগুলো কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে ভবিষ্যতে পানীয় শিল্পের সম্প্রসারণ আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট প্রকল্পের পাশাপাশি বড় পরিসরের অবকাঠামোগত উদ্যোগ ছাড়া এই সংকট কাটানো কঠিন।

A general view of a pond which was disilted by Diageo, in Alwar

 

A worker fills alcohol bottles, in Alwar