আমি আমার বাদিকের ডানার নিচে রানওয়ের বাতি দেখতে পেলাম- তাই কো-পাইলটকে পাওয়ার সাপ্লাই ‘অফ’ করে দিতে বললাম…
বর্ষার মৌসুমেও ১৩৪৫তম “এয়ার ট্রান্সপোর্ট কমান্ড” (এটিসি)-এর উড্ডয়ন বা ফ্লাইট-অপারেশনকে প্রচুর নাস্তানাবুদ অবস্থায় পড়তে হয়েছে। একবার প্রবল বৃষ্টির মধ্যে উড্ডয়নের সময়, লেফটেন্যান্ট আলফ্রেড ল্যাং-এর মুখে কুর্মিটোলার একটি অভিজ্ঞতার কাহিনি শুনেছি: “সি-১০৯” জ্বালানি ও সাপ্লাই ভর্তি প্লেন নিয়ে কুর্মিটোলা থেকে “চেংটু”-তে যাই, “চেংটু”-তে-“মিয়িতকিয়িনা” পর্যন্ত যাওয়ার মতো পরিমাণ জ্বালানি রেখে সবটুকু ওখানেই রেখে আসি আমরা।
কিন্তু “মিয়িতকিয়িনা” ছাড়তে না ছাড়তেই আমরা “হেড-উয়িন্ডসের” মধ্যে পড়ে যাই এবং বর্ষার বিষম ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যে কুর্মিটোলায় ফিরে আসি। বড়ো রকমের সমস্যা হয়নি তবে “সি-১০৯” প্লেনের সামনের জানালায় কোনো (উয়িন্ডস্ক্রীন) ওয়াইপার ছিল না। ফলে হয়েছে কি জানো?
অবতরণকালে “ডাউন উয়িন্ড”-এ কোনো সমস্যা হচ্ছিল না, কিন্তু সমস্যা হয় যে চূড়ান্ত পর্যায়ে, অবতরণকালে ওয়াইপারবিহীন জানালা দিয়ে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। আমি বার ছয়েক ‘মাথার উপরে’ চক্কর দিলাম, কোনো সুবিধে করতে পারছিলাম না। এমন সময় ইঞ্জিনিয়ার বলল, “লেফটেন্যান্ট… মিটার দেখাচ্ছে যে ট্যাঙ্কে ফোঁটামাত্র জ্বালানি নেই, ওকে আপনি নিচেয় নামিয়ে আনুন।”
কি আর করা, পরবর্তী চক্করের সময় আমি খুব নিচে নেমে এলাম, “ল্যান্ডিং গীয়ার” আলগা করে দিলাম, আমি আমার বাদিকের ডানার নিচে রানওয়ের বাতি দেখতে পেলাম- তাই কো-পাইলটকে পাওয়ার সাপ্লাই ‘অফ’ করে দিতে বললাম এবং কো-পাইলট তা পালন করল। আমি প্রথমে বামদিকের এবং তারপরে ডানদিকের “রাডার” (হাল) বন্ধ করলাম।
আমাদের প্লেনটি ভেজা রানওয়ে ধরে যাচ্ছিল। অবশেষে প্লেনটি থামল এবং মাটিতে নামলাম। আমি ইঞ্জিনিয়ারকে জ্বালানি ট্যাঙ্কে কতোটুকু তেল রয়েছে- মেপে দেখতে বললাম। ফিরে এসে ইঞ্জিনিয়ার বললেন যে “লেফটেন্যান্ট, ট্যাঙ্কে যা তেল রয়েছে তা দিয়ে (তেল মাপার) স্টিকের তলা পর্যন্ত সহজে ভেজেনি”।
(চলবে)
নাঈম হক 


















