উড়ছি আমরা- দুমদাম “সি-১০৯”-য়ের দু’দুটো ইঞ্জিনই ঠিকঠাকমতো কাজ করা বন্ধ করে দিল, আর দিলো তো দিলো বিমানটি……
অ্যান্থনি আরো বলেন যে “জানো, একবার তো ‘কুনমিং’ থেকে কুর্মিটোলায় ফিরে আসবার সময় ‘সি-১০৯’ তো একেবারেই খালি ছিলো” (অর্থাৎ অবশিষ্ট জ্বালানি বলে কিছু ছিল না, একেবারেই তলানিতে নেমে গিয়েছিল)। আরেকবার “চীনের দিকে উড়ছিলাম আমরা; বিমানবন্দরের খুব কাছাকাছি আমরা, আমাদের প্লেনটি অবতরণ শুরু করেছে মাত্র- দেখি যে নিচে রানওয়ের দু’ধারে পজিশন নিয়ে চীনের জাতীয়তাবাদী সেনাবাহিনী ও কমিউনিস্ট সেনাবাহিনী গোলাগুলি বিনিময়ে ব্যস্ত”।
১৯৪৫ সালের এপ্রিলের শেষের দিক থেকে অ্যান্থনির গ্রুপ ভারতবর্ষ ও বার্মায় অবস্থানরত চীনা সেনাদেরকে চীনে ফিরিয়ে নেয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, ইত্যবসরে মিত্রবাহিনীর সেনাবল জাপানের বিরুদ্ধে একের পর এক করে প্রতিটি রণাঙ্গণে জাপানিদের হারিয়ে দিচ্ছিল, ফলে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে বার্মায়ও জাপানি বাহিনীর দিন দ্রুত ঘনিয়ে আসছে।
থাকাকালে, অ্যান্থনি সিলভা সাকুল্যে সাতষট্টি বার হিমালয় পর্বতমালার আঠারো মাস স্থায়ী “ট্যুর অব ডিউটি” (তথা বৈরী পরিবেশে)-তে “হাম্পের” উপর দিয়ে ওড়াউড়ি করেছেন এবং প্রতিবারই করেছেন বিভিন্ন ক্রু’দের সঙ্গে। একবার, শুধুমাত্র একবার “হয়েছিলো কি জানো?
ঘাঁটি ত্যাগ করেছি দেড় ঘণ্টা পূর্বে, উড়ছি আমরা- দুমদাম “সি-১০৯”-য়ের দু’দুটো ইঞ্জিনই ঠিকঠাকমতো কাজ করা বন্ধ করে দিল, আর দিলো তো দিলো বিমানটি যখন হিমালয়ের সর্বোচ্চ “হাম্পের” উপর দিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেসময়ে। কি আর করা? আমরা তাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বরাবর একই উচ্চতায় থেকে (অলটিটিউড) গন্তব্যস্থল পর্যন্ত উড়তে বাধ্য হই; অথচ খেয়াল করি যে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূ-খণ্ডের উচ্চতা (অলটিটিউড) কিন্তু ক্রমশ হ্রাস পেয়ে পেয়ে কমে যাচ্ছিল”।
অবশেষে ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যান্থনি ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুমতি পান, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসেন।
(চলবে)
নাঈম হক 


















