ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার রাতেই তিনি ঢাকায় পৌঁছান বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতি ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সর্বশেষ অবস্থা সরাসরি জানতেই তাকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তলবের পেছনের প্রেক্ষাপট
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মধ্যে আলোচনা হয়। ওই আলোচনার পরই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক পর্যালোচনার জন্য হাইকমিশনারকে ঢাকায় তলব করা হয়।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বাড়তে থাকা টানাপড়েন
ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই সম্পর্কের টানাপড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা একাধিকবার স্বীকার করেছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চাপ ও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড এবং ময়মনসিংহে পোশাক শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যার ঘটনার পর ছড়ানো নানা উত্তেজনামূলক গুজব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ভিসা সেবা বন্ধ ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
দিল্লিতে বিক্ষোভ এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হুমকির ঘটনার পর দিল্লিসহ আরও দুটি সহকারী মিশনে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকা এবং পাল্টা হিসেবে ভারতে সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
পাল্টাপাল্টি তলবে নতুন উত্তেজনা
এই সব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঢাকা ও দিল্লিতে দুই দেশের হাইকমিশনারদের পাল্টাপাল্টি তলব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। গত দুই সপ্তাহে দুই দেশ দুবার করে একে অপরের কূটনীতিককে তলব করে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছে। সর্বশেষ ২৩ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ওই দিনই বিকেলে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে। একই দিনে দুই দেশের দূতকে একযোগে পাল্টাপাল্টি তলবের ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















