মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে চলমান যুদ্ধ অবসানের আশার মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেন ড্রোন দিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এর একটি বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে। অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি। ইউক্রেন এই দাবি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে একে শান্তি আলোচনা বানচালের অপচেষ্টা বলে মন্তব্য করেছে। এ নিয়ে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ ও পাল্টা অস্বীকার
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, নভগোরোদ অঞ্চলে অবস্থিত পুতিনের একটি আবাস লক্ষ্য করে দীর্ঘপাল্লার ড্রোন পাঠানো হয়েছিল। সব ড্রোন আকাশ প্রতিরক্ষায় ভূপাতিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর নেই। তবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এমন কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে এবং প্রতিশোধমূলক হামলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগটিকে সম্পূর্ণ বানানো বলে উড়িয়ে দেন। তাঁর ভাষায়, শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি ঠেকাতেই এমন বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ফোনালাপে পুতিন তাঁকে এই অভিযোগের কথা বলেছেন এবং তিনি এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁর মতে, এমন সময়ে কোনো পক্ষের বাড়িতে হামলার কথা বলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে। তবু তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে শান্তি চুক্তি কাছাকাছি রয়েছে, যদিও ভূখণ্ড সংক্রান্ত বিষয়গুলো এখনো জটিল।
আলোচনার টেবিলে কঠোর অবস্থান
অভিযোগের পর রাশিয়া জানায়, আলোচনায় তাদের অবস্থান নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রুশ সেনাবাহিনীকে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে তৎপর থাকার নির্দেশ দেন পুতিন। ক্রেমলিনের দাবি, পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের অবশিষ্ট অংশ থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে। ইউক্রেনের অবস্থান হলো, বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামাতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো ছাড় নয়।
ভূখণ্ড সংকটই মূল বাধা
শান্তি প্রস্তাবের কেন্দ্রে রয়ে গেছে ভূখণ্ড প্রশ্ন। রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, যার মধ্যে ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে। ইউক্রেন এসব অঞ্চলকে নিজের সার্বভৌম ভূখণ্ড হিসেবে ধরে রেখেছে। জেলেনস্কি জানান, দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়। ইউরোপীয় দেশগুলোর বড় ভূমিকার কথাও উঠে এসেছে, যদিও রাশিয়া বিদেশি সেনা মোতায়েনকে অগ্রহণযোগ্য বলছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















