০৪:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাপানের আনন্দময় “সাকে ট্রেন”-এ এক যাত্রা সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডে বড় ধরনের ছাঁটাই। লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৌদি- পাকিস্তান সামরিক প্যাক্ট ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব এশিয়ার বিলিয়ন-ডলারের মুনকেক বাজারে নতুন ধারা: দুবাই চকলেট ও পিস্তাচিওর ছোঁয়া শিম্পাঞ্জিদের খাদ্যে অ্যালকোহলের উপস্থিতি ১৯৮৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার আজও মিয়ানমার পেরুর মরুভূমি থেকে আবিষ্কৃত নতুন নগরী: আমেরিকার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হচ্ছে চীনকে সমর্থন ও যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চীনের সিজে-১০০০: বিশ্বের প্রথম হাইপারসনিক ‘প্লেন কিলার’ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে নতুন ধারণা অফ-সিজনে তরমুজ চাষে নড়াইলের কৃষকদের বাম্পার লাভ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৭৩)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
  • 66

শ্রী নিখিলনাথ রায়

আলিবদ্দীর বেগম

যাঁহারা কার্য্যের পশরা মাথায় লইয়া সংসারক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন এবং যাঁহাদের জীবন-তরণী অনন্তপ্রবাহ কার্য্যসাগরে প্রতিনিয়ত ভাস- মান হইতে থাকে, তাঁহাদের ভাগ্যে যদি এক এক জন উপযুক্ত সঙ্গীর মিলন ঘটে, তাহা হইলে সেই সকল কার্যবীরদিগের জীবন তাদৃশ কষ্টকর বোধ হয় না। মহাশ্মশানে শবসাধনের ন্যায় তাঁহারা সংসারের সমস্ত অসাধ্যই সাধন করিতে পারেন। যখন ক্লান্তি বা বিভীষিকা আসিয়া হৃদয় আচ্ছন্ন করে, তখনই উত্তরসাধকগণের “মা ভৈষীঃ মা ভৈষীঃ” রব তাঁহাদের হৃদয়ে আবার শক্তির সঞ্চার করিয়া দেয় এবং উৎসাহের প্রতপ্ত মদিরাপানে তাঁহারা পুনর্ব্বার সিদ্ধিলাভে অগ্রসর হইতে থাকেন।

আবার যদি সেই সহায়তা জীবনের চিরসহচরী সহধর্মিণী হইতে লাভ হয়, তাহা হইলে সুখের আর সীমা থাকে না। যিনি গৃহকার্য্যের সঙ্গিনী, তিনি যদি পার্শ্বে দাঁড়াইয়া দুঃসাধ্য কার্য্যের সহায়তার জন্য প্রস্তুত হন, শবসাধনে প্রবৃত্ত না হয়? তাহা হইলে কে এই সংসার-মহাশ্মশানে কেই বা কাৰ্য্য-মহাপারাবারে আপনার জীবন-তরণী চির-ভাসমান করিতে ইচ্ছা না করে? যাঁহারা শক্তিস্বরূপিণী, তাহারা যদি সেই শক্তি চির-অন্তহিত না রাখিয়া পতিশক্তির সহিত মিলাইয়া দেন, তাহা হইলে, জগতে এমন কোন্ অসাধ্য কাৰ্য্য আছে, বাহা সাধিত হইতে না পারে? যেখানে পতিশক্তি ও পত্নীশক্তির পূর্ণ বিকাশ ঘটিয়াছে, সেই খানে অভূতপূর্ব্ব ঘটনাসকল সংঘটিত হইয়াছে। জগতে এরূপ দৃষ্টান্তের অভাব নাই।

পাশ্চাত্য জগতে কত কত দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক ও রাজনীতিবিদের জীবনে এই উভয় শক্তির মিলন দেখা গিয়াছে। অনেক ধৰ্ম্মবীর ও কর্মবীর এই পবিত্র আশীর্ব্বাদ লাভ করিয়াছেন। ভারতরমণী সাধারণতঃ গৃহাধিষ্ঠাত্রী হইলেও, সময়ে সময়ে কাৰ্য্যবীর পতিদিগের সহায়তা করিতে ত্রুট করেন নাই। তাঁহারা পতির সহিত অরণ্যে ও পর্ব্বতে ভ্রমণ করিয়া, তাঁহাদের দুঃখকষ্টে সঙ্গিনী হইয়াছেন ও তাঁহাদিগকে কর্ত্তব্য কার্য্যে উৎসাহ দিয়া, আপনাদিগের পবিত্র নাম চিরপূজ্য করিয়া গিয়াছেন। রামায়ণ মহাভারত হইতে রাজস্থানের ইতিবৃত্ত পর্য্যন্ত অনেক স্থলে এরূপ দৃষ্টান্ত দেখিতে পাওয়া যায়। যাঁহার। সম্রাজ্ঞী পদে বৃতা হইতেন, তাঁহারা রাজকার্য্যেও সময়ে সময়ে পতিকে উপদেশ প্রদান করিতে ত্রুটি করিতেন না।

ভারত- রমণীগণ গৃহিণী হইয়াও সচিব ও সখীর ন্যায় কার্য্য করিয়াছেন। তাই কালিদাসের মধুর কবিতায় তাঁহারা “গৃহিণী সচিবঃ সখী মিথঃ, প্রিয়শিষ্যা ললিতে কলাবিধৌ” বলিয়া চিত্রিতা হইয়াছেন। আর রাজস্থানের ইতিবৃত্তে তাঁহারা যথার্থ শক্তিরূপিণী হইয়া আপনাদিগের মহাশক্তির ক্রীড়া দেখাইয়াছেন এবং স্বদেশ ও স্বধর্ম্ম রক্ষার জন্য পতির সহায়তা করিয়া, অবশেষে চিতানলে পবিত্র দেহ ভস্মীভূত করিয়াছেন। যে অহাপুরুষ হিন্দুধর্ম রক্ষার জন্য ভারতে অবতীর্ণ হইয়া মোগলদর্প চূর্ণীকৃত করিয়াছিলেন, সেই দেবতুল্য পুণ্যশ্লোক শিবাজীর রাজনৈতিক জীবনেও তাঁহার প্রিয়তমা পত্নীর সহায়তার কথা শুনা যায়। ফলতঃ কি ভারতে,-কি ইউরোপে সর্ব্বত্রই রাশি রাশি মহত্তর ও কষ্টতর কার্য্যে গতিশক্তির ও পত্নীশক্তির মিলন দেখা গিয়াছে।

জাপানের আনন্দময় “সাকে ট্রেন”-এ এক যাত্রা

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৭৩)

১১:০০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

আলিবদ্দীর বেগম

যাঁহারা কার্য্যের পশরা মাথায় লইয়া সংসারক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন এবং যাঁহাদের জীবন-তরণী অনন্তপ্রবাহ কার্য্যসাগরে প্রতিনিয়ত ভাস- মান হইতে থাকে, তাঁহাদের ভাগ্যে যদি এক এক জন উপযুক্ত সঙ্গীর মিলন ঘটে, তাহা হইলে সেই সকল কার্যবীরদিগের জীবন তাদৃশ কষ্টকর বোধ হয় না। মহাশ্মশানে শবসাধনের ন্যায় তাঁহারা সংসারের সমস্ত অসাধ্যই সাধন করিতে পারেন। যখন ক্লান্তি বা বিভীষিকা আসিয়া হৃদয় আচ্ছন্ন করে, তখনই উত্তরসাধকগণের “মা ভৈষীঃ মা ভৈষীঃ” রব তাঁহাদের হৃদয়ে আবার শক্তির সঞ্চার করিয়া দেয় এবং উৎসাহের প্রতপ্ত মদিরাপানে তাঁহারা পুনর্ব্বার সিদ্ধিলাভে অগ্রসর হইতে থাকেন।

আবার যদি সেই সহায়তা জীবনের চিরসহচরী সহধর্মিণী হইতে লাভ হয়, তাহা হইলে সুখের আর সীমা থাকে না। যিনি গৃহকার্য্যের সঙ্গিনী, তিনি যদি পার্শ্বে দাঁড়াইয়া দুঃসাধ্য কার্য্যের সহায়তার জন্য প্রস্তুত হন, শবসাধনে প্রবৃত্ত না হয়? তাহা হইলে কে এই সংসার-মহাশ্মশানে কেই বা কাৰ্য্য-মহাপারাবারে আপনার জীবন-তরণী চির-ভাসমান করিতে ইচ্ছা না করে? যাঁহারা শক্তিস্বরূপিণী, তাহারা যদি সেই শক্তি চির-অন্তহিত না রাখিয়া পতিশক্তির সহিত মিলাইয়া দেন, তাহা হইলে, জগতে এমন কোন্ অসাধ্য কাৰ্য্য আছে, বাহা সাধিত হইতে না পারে? যেখানে পতিশক্তি ও পত্নীশক্তির পূর্ণ বিকাশ ঘটিয়াছে, সেই খানে অভূতপূর্ব্ব ঘটনাসকল সংঘটিত হইয়াছে। জগতে এরূপ দৃষ্টান্তের অভাব নাই।

পাশ্চাত্য জগতে কত কত দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক ও রাজনীতিবিদের জীবনে এই উভয় শক্তির মিলন দেখা গিয়াছে। অনেক ধৰ্ম্মবীর ও কর্মবীর এই পবিত্র আশীর্ব্বাদ লাভ করিয়াছেন। ভারতরমণী সাধারণতঃ গৃহাধিষ্ঠাত্রী হইলেও, সময়ে সময়ে কাৰ্য্যবীর পতিদিগের সহায়তা করিতে ত্রুট করেন নাই। তাঁহারা পতির সহিত অরণ্যে ও পর্ব্বতে ভ্রমণ করিয়া, তাঁহাদের দুঃখকষ্টে সঙ্গিনী হইয়াছেন ও তাঁহাদিগকে কর্ত্তব্য কার্য্যে উৎসাহ দিয়া, আপনাদিগের পবিত্র নাম চিরপূজ্য করিয়া গিয়াছেন। রামায়ণ মহাভারত হইতে রাজস্থানের ইতিবৃত্ত পর্য্যন্ত অনেক স্থলে এরূপ দৃষ্টান্ত দেখিতে পাওয়া যায়। যাঁহার। সম্রাজ্ঞী পদে বৃতা হইতেন, তাঁহারা রাজকার্য্যেও সময়ে সময়ে পতিকে উপদেশ প্রদান করিতে ত্রুটি করিতেন না।

ভারত- রমণীগণ গৃহিণী হইয়াও সচিব ও সখীর ন্যায় কার্য্য করিয়াছেন। তাই কালিদাসের মধুর কবিতায় তাঁহারা “গৃহিণী সচিবঃ সখী মিথঃ, প্রিয়শিষ্যা ললিতে কলাবিধৌ” বলিয়া চিত্রিতা হইয়াছেন। আর রাজস্থানের ইতিবৃত্তে তাঁহারা যথার্থ শক্তিরূপিণী হইয়া আপনাদিগের মহাশক্তির ক্রীড়া দেখাইয়াছেন এবং স্বদেশ ও স্বধর্ম্ম রক্ষার জন্য পতির সহায়তা করিয়া, অবশেষে চিতানলে পবিত্র দেহ ভস্মীভূত করিয়াছেন। যে অহাপুরুষ হিন্দুধর্ম রক্ষার জন্য ভারতে অবতীর্ণ হইয়া মোগলদর্প চূর্ণীকৃত করিয়াছিলেন, সেই দেবতুল্য পুণ্যশ্লোক শিবাজীর রাজনৈতিক জীবনেও তাঁহার প্রিয়তমা পত্নীর সহায়তার কথা শুনা যায়। ফলতঃ কি ভারতে,-কি ইউরোপে সর্ব্বত্রই রাশি রাশি মহত্তর ও কষ্টতর কার্য্যে গতিশক্তির ও পত্নীশক্তির মিলন দেখা গিয়াছে।