শুয়াতেমালা ও হাইতির নীল উৎপাদন বিলুপ্তির কারণ যদিও আভ্যন্তরীণ তবুও এই বিলুপ্তির পেছনে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রসমূহের অন্তঃকলহ কম দায়ী নয়। মধ্য আমেরিকা থেকে স্পেনীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিলুপ্তির পর বেআইনীভাবে ব্যবসা শুরু করে বৃটেন ও উত্তর আমেরিকা। বিশ্ববাজারে তখন হাইতির নীল আন্তর্জাতিক চোরাকারবারিরা নিয়ে আসত। স্পেন ও ফরাসী উপনিবেশে নীল উৎপাদন বন্ধ হওয়ার ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা ও মুনাফা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি এড়ায়নি।
“হাইতির এক ফরাসী নীল ব্যবসায়ী ১৭৯৩ সালে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ঐক্যের আহবান জানায়। ইংরাজদের নির্মম শোষণ ও জঘন্য নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বের অন্য সব জাতি ঐক্যবদ্ধ হোন। বৃটেন তার অতৃপ্ত ক্ষুধা মেটাবার জন্য আক্রমণ করেছে খোদ বিশ্ববাণিজ্যেকে। আসুন এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা একত্রিত হই। আমাদের উর্বরা জমিতে উৎপাদিত শস্যের ভস্ম থেকে আবার উৎপাদিত হোক সোনার ফসল।
উত্তর আমেরিকার নীল: এক দুর্লভ হাতছানি
এখন যে অঞ্চল আমাদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অঞ্চল বলে পরিচিত সেখানেও বাণিজ্যিকভাবে নীল চাষ করা হত। কিন্তু নীলের বদলে আরও লাভজনক কিছু আবাদ করার আশায় তা পরিত্যাগ করা হয়। ১৭২০ ও ১৭৩০ সালের দিকে বৃটিশ চাহিদার ফলে আবার নীল চাষের পুনঃপ্রবর্তন করা হয়, কেননা তখনকার দিনে বৃটেনের প্রধান নীল সরবরাহকারী বৃটিশ ক্যারিবিয়ানরা নীল চাষ ছেড়ে দেয়। নতুন এই চাহিদার প্রতি সাড়া দিয়ে উত্তর আমেরিকায় বাণিজ্যিকভাবে নীল উৎপাদন শুরু হয়। ওই সময়ে আমেরিকায় নীলচাষ করা লাভজনক ব্যবসায়ে পরিণত হওয়ার কারণ হল জমির মালিকরা খুব সহজে আফ্রিকার ক্রীতদাস ও গোলামদের সরবরাহ পেত।
Leave a Reply