পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
নতুন উদ্যোক্তা খুঁজে বের করতে হবে উচ্চ শ্রেণীর পরিচালকবর্গের মধ্যে থেকে। নিজের কাজের খুঁটিনাটি সম্পর্কে এরা যেমন ভাল জানে তেমনি গোটা উৎপাদন কার্যক্রম সম্পর্কে একটা ধারণা আছে। বাংলাদেশে এরা যে নগণ্য শুধু তাই নয় সেখানে তারা তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছে থেকে যথেষ্ঠ পরিমাণে সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। যথেষ্ঠ পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা না দেয়া হলে তারা কেউ বাংলাদেশ ছাড়তে রাজি হবে না। প্রধান কর্মাধক্ষের বেতন মাসিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা (১০০০ থেকে ১২৫০ ফ্রাংক) এবং মুনাফার উপর পাঁচ থেকে শতকরা সাড়ে পাঁচ ভাগ কমিশন। একটি ভাল নীলকুঠিতে বেতনের চেয়ে কমিশন বেশি।
স্পষ্টতঃই বোঝা যায়, ভাল বেতন ও এ রকম নিশ্চিত কাজের জায়গা ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া এক বিরাট আত্মত্যাগ। বিশেষভাবে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে যে দেশকে তারা তাদের দ্বিতীয় আশ্রয়স্থল হিসাবে গ্রহণ করেছে যে দেশের রীতিনীতির সঙ্গে তার খাপ খাইয়ে নিয়েছে, অন্য অজানা অচেনা দেশে তারা যেতে চাইবে কেন? সে দেশের আবহাওয়া যে তারা সহ্য করতে পারবে, এমন নাও তো হতে পারে। বঙ্গদেশের ফরাসী কর্তৃপক্ষ যখন সেনেগালে পাঠাবার জন্য নীলকুঠির অভিজ্ঞ পরিচালকের খোঁজ করেন তখন তারা এসব বিষয়ে জানতে পারেন। বঙ্গদেশ থেকে তাদের লোক খোঁজার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। অন্ততঃপক্ষে আমি যতদিন বঙ্গদেশে ছিলাম তখনকার অবস্থা বলছি।
নীলচাষ প্রবর্তন করার জন্য বাংলাদেশ থেকে লোক না পাওয়ার ব্যাপারটাকে আমি বলব ছোট ধরনের ব্যর্থতা। আসল কথা হল নীলগাছ ভিন্ন রকমের মাটি ও ভিন্ন রকমের আবহাওয়ায় জন্মাবে কিনা সে সম্পর্কে প্রথমে নিশ্চিত হওয়া। সরকারকে আগে নিশ্চিত হতে হবে যে নীলগাছ আসলেই জন্মাবে কি না। নীলের ফলন দেখে ঠিক করতে হবে কোন মাটি নীলের উপযুক্ত আর কোন মাটি নয়। সেখানে বন্যা হয় কিনা, হলে কখন হয়।
Leave a Reply