১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
চীনের মুনশট এআই: সীমিত চিপ ব্যবহার করেও মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে পাল্লা পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৩) মালয়েশিয়ার এআই বুম দেশটিকে জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যতে আটকে দিতে পারে জুলাই জাতীয় সনদ: ভোটের দিনই গণভোট করার চিন্তা সরকারের, থাকবে একাধিক প্রশ্ন শারজাহ বইমেলায় কবিতার মাধ্যমে মানসিক শান্তি—‘পয়ট্রি ফার্মেসি’ অনন্য উদ্যোগ ১,০০০ বছর পুরনো পবিত্র কুরআনের দুর্লভ অনুলিপি পিনাট বাটারের তুলনায় আরও পুষ্টিকর ও বহুমুখী বাদাম বাটার প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২২) গুগল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস্টমাস আইল্যান্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা জাপানে উপকূলীয় ভূমির ক্ষয়জনিত কারণে সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম ক্ষতিগ্রস্ত

ইশকুল (পর্ব-০৩)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • 65
আর্কাদি গাইদার

প্রথম পরিচ্ছেদ

ঘণ্টাঘরের মিনারের মাথায় উঠতে ভারি ভালো লাগত আমার। একমাত্র ইস্টারের সময়ই বাচ্চাদের ঘণ্টাঘরে উঠতে দেয়া হত। ওপরে যেতে অন্ধকার সরু সরু, সি’ড়ি বেয়ে উঠতে হত অনেকটা। দেয়ালে পাথরের কুলুঙ্গির ভিতর থেকে শোনা যেত পায়রার মিষ্টি-মিষ্টি বকবকম। সি’ড়িতে এত অসংখ্য বাঁক থাকত যে উঠতে গিয়ে মাথা ঘুরত। ঘণ্টাঘরের ওপর থেকে দেখতে পাওয়া যেত পুরো শহর: পাহাড়ের নিচে দিয়ে বয়ে-যাওয়া তেশা নদী, পুরনো ময়দা-কল, ছাগুলে দ্বীপ, ঝোপঝাড়, তার আরও ওধারে খাদের খোয়াই আর শহর-ঘেরা নীল বনরেখা।
আমার বাবা ছিলেন দ্বাদশ সাইবেরিয়ান রাইফেল রেজিমেন্টের সৈনিক। ওই রেজিমেন্ট ছিল তখন জার্মান ফ্রন্টের রিগা আঞ্চলিক অংশে।
ব্যবহারিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন। আমার মা ছিলেন হাসপাতালে ডাক্তারের সহকারী। সবসময়ে ব্যস্ত থাকতেন তিনি। আমি বেড়ে উঠেছিলুম নিজের মতো করে একরকম। প্রতি সপ্তায় ক্লাসের রিপোর্ট-কার্ড সই করাতে মা-র কাছে নিয়ে যেতুম। বিভিন্ন বিষয়ের নম্বরের ওপর চোখ বুলোতে বুলোতে ড্রইং কিংবা হাতের লেখায় খারাপ নম্বর দেখলে মাথা নাড়তেন মা,বলতেন:
‘এ কী!’
আমার কী দোষ, মা? আঁকতে না পারলে আমি কী করব? মাস্টারমশাইকে আমি ঘোড়া এ’কে দেখালুম, তা তিনি বললেন, এটা ঘোড়া নয় শুয়োর। পরের বার ওই আঁকাটাই তাঁকে দেখিয়ে বললুম, শুয়োর এ’কেছি, মাস্টারমশাই। কিন্তু তিনি চটে উঠে বললেন, এটা শুয়োরও নয়, ঘোড়াও নয়, এটা যে কী তা শয়তানই জানে। আমার দ্বারা শিল্পী হওয়া হবে না, মা।’
‘আচ্ছা, আচ্ছা, ঠিক আছে। কিন্তু হাতের লেখায় আবার গণ্ডগোল কেন? দেখি তো তোমার এক্সারসাইজ-খাতা। হায় হায়, এ কী বিতিকিচ্ছি ব্যাপার! প্রত্যেক লাইনে, কালি ধ্যাবড়ানো, আবার পাতার ফাঁকে একটা থ্যাঁতলানো গুবরে-পোকা। উহ, কী জঘন্য!’
জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের মুনশট এআই: সীমিত চিপ ব্যবহার করেও মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে পাল্লা

ইশকুল (পর্ব-০৩)

০৮:০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
আর্কাদি গাইদার

প্রথম পরিচ্ছেদ

ঘণ্টাঘরের মিনারের মাথায় উঠতে ভারি ভালো লাগত আমার। একমাত্র ইস্টারের সময়ই বাচ্চাদের ঘণ্টাঘরে উঠতে দেয়া হত। ওপরে যেতে অন্ধকার সরু সরু, সি’ড়ি বেয়ে উঠতে হত অনেকটা। দেয়ালে পাথরের কুলুঙ্গির ভিতর থেকে শোনা যেত পায়রার মিষ্টি-মিষ্টি বকবকম। সি’ড়িতে এত অসংখ্য বাঁক থাকত যে উঠতে গিয়ে মাথা ঘুরত। ঘণ্টাঘরের ওপর থেকে দেখতে পাওয়া যেত পুরো শহর: পাহাড়ের নিচে দিয়ে বয়ে-যাওয়া তেশা নদী, পুরনো ময়দা-কল, ছাগুলে দ্বীপ, ঝোপঝাড়, তার আরও ওধারে খাদের খোয়াই আর শহর-ঘেরা নীল বনরেখা।
আমার বাবা ছিলেন দ্বাদশ সাইবেরিয়ান রাইফেল রেজিমেন্টের সৈনিক। ওই রেজিমেন্ট ছিল তখন জার্মান ফ্রন্টের রিগা আঞ্চলিক অংশে।
ব্যবহারিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন। আমার মা ছিলেন হাসপাতালে ডাক্তারের সহকারী। সবসময়ে ব্যস্ত থাকতেন তিনি। আমি বেড়ে উঠেছিলুম নিজের মতো করে একরকম। প্রতি সপ্তায় ক্লাসের রিপোর্ট-কার্ড সই করাতে মা-র কাছে নিয়ে যেতুম। বিভিন্ন বিষয়ের নম্বরের ওপর চোখ বুলোতে বুলোতে ড্রইং কিংবা হাতের লেখায় খারাপ নম্বর দেখলে মাথা নাড়তেন মা,বলতেন:
‘এ কী!’
আমার কী দোষ, মা? আঁকতে না পারলে আমি কী করব? মাস্টারমশাইকে আমি ঘোড়া এ’কে দেখালুম, তা তিনি বললেন, এটা ঘোড়া নয় শুয়োর। পরের বার ওই আঁকাটাই তাঁকে দেখিয়ে বললুম, শুয়োর এ’কেছি, মাস্টারমশাই। কিন্তু তিনি চটে উঠে বললেন, এটা শুয়োরও নয়, ঘোড়াও নয়, এটা যে কী তা শয়তানই জানে। আমার দ্বারা শিল্পী হওয়া হবে না, মা।’
‘আচ্ছা, আচ্ছা, ঠিক আছে। কিন্তু হাতের লেখায় আবার গণ্ডগোল কেন? দেখি তো তোমার এক্সারসাইজ-খাতা। হায় হায়, এ কী বিতিকিচ্ছি ব্যাপার! প্রত্যেক লাইনে, কালি ধ্যাবড়ানো, আবার পাতার ফাঁকে একটা থ্যাঁতলানো গুবরে-পোকা। উহ, কী জঘন্য!’