০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইশকুল (পর্ব-০৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • 19
আর্কাদি গাইদার
প্রথম পরিচ্ছেদ
“আচমকা কালি ধেবড়ে গেছে, তো আমি কী করব। আর ওই গুবরে পোকাটার জন্যে আমার কী দোষ? আমি তো আর ইচ্ছে করে পোকাটাকে পাতার ফাঁকে পুরে রাখি নি। বোকা পোকাটা কী করে যেন পাতার ফাঁকে ঢুকে চেপ্টে রয়েছে, তার জন্যে আমার দোষ হল? হাঃ, হাতের লেখা নিয়েও আবার মাথা ঘামাতে হবে, ওটা নাকি আবার বিজ্ঞান। আমি মোটেই লেখক হতে চাই না।’
‘তাহলে কী হতে চাও, শুনি?’ রিপোর্ট-কার্ডে সই করতে-করতে মা কড়াভাবে শুধোলেন, ‘কাড়ের বাদশা? ইনস্পেক্টর আবার কার্ডে’ লিখে দিয়েছেন ফায়ার- প্লেসের চিমনি বেয়ে তুমি স্কুলের ছাদে উঠেছিলে। কী মতলব তোমার? চিমনি- পৌঁছা ঝাড়ুদারের কাজ শিখতে চাও নাকি?’
‘না-না-না। আমি শিল্পী হতে চাই না, লেখক হতে চাই না, চিমনি-পৌঁছা ঝাড়ুদারও হতে চাই না। আমি নাবিক হব।’
‘কেন, নাবিক কেন?’ থতমত খেয়ে মা শুধোলেন।
‘আর কিচ্ছুটি নয়। সব ঠিক করে ফেলেছি। বুঝতে পারছ না, কী দারুণ
মজার কাজ?’
তবু মা মাথা নাড়লেন।
‘যত সব বিদঘুটে খেয়াল! আর কখনও যদি বাজে-বাজে নম্বর বাড়িতে এনেছ তো দেখাব মজা। এমন মার দেব না যে তোমার নাবিক হওয়া বের করে দেব।’ আহা, বললেই হল! মা আমাকে যেন কতই মারছেন। আমার গায়ে কোনোদিন একটা আঙুলও ছোঁয়ান নি তিনি। একবার শুধু আমাকে বাড়ির যে-ঘরে ভাঙাচোরা জিনিসপত্র থাকত সেই ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলেন। কিন্তু তার জন্যে পরদিন সারা দিন ধরে মাংসর পিঠে নিয়ে অনেক সাধাসাধি করেছেন আর সিনেমায় যাওয়ার জন্যে বিশ কোপেক পর্যন্ত, দিয়েছেন। আহা, ওইরকম আমাকে যদি আরও কয়েক দিন বন্ধ করে রাখতেন মা।

ইশকুল (পর্ব-০৪)

০৮:০০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
আর্কাদি গাইদার
প্রথম পরিচ্ছেদ
“আচমকা কালি ধেবড়ে গেছে, তো আমি কী করব। আর ওই গুবরে পোকাটার জন্যে আমার কী দোষ? আমি তো আর ইচ্ছে করে পোকাটাকে পাতার ফাঁকে পুরে রাখি নি। বোকা পোকাটা কী করে যেন পাতার ফাঁকে ঢুকে চেপ্টে রয়েছে, তার জন্যে আমার দোষ হল? হাঃ, হাতের লেখা নিয়েও আবার মাথা ঘামাতে হবে, ওটা নাকি আবার বিজ্ঞান। আমি মোটেই লেখক হতে চাই না।’
‘তাহলে কী হতে চাও, শুনি?’ রিপোর্ট-কার্ডে সই করতে-করতে মা কড়াভাবে শুধোলেন, ‘কাড়ের বাদশা? ইনস্পেক্টর আবার কার্ডে’ লিখে দিয়েছেন ফায়ার- প্লেসের চিমনি বেয়ে তুমি স্কুলের ছাদে উঠেছিলে। কী মতলব তোমার? চিমনি- পৌঁছা ঝাড়ুদারের কাজ শিখতে চাও নাকি?’
‘না-না-না। আমি শিল্পী হতে চাই না, লেখক হতে চাই না, চিমনি-পৌঁছা ঝাড়ুদারও হতে চাই না। আমি নাবিক হব।’
‘কেন, নাবিক কেন?’ থতমত খেয়ে মা শুধোলেন।
‘আর কিচ্ছুটি নয়। সব ঠিক করে ফেলেছি। বুঝতে পারছ না, কী দারুণ
মজার কাজ?’
তবু মা মাথা নাড়লেন।
‘যত সব বিদঘুটে খেয়াল! আর কখনও যদি বাজে-বাজে নম্বর বাড়িতে এনেছ তো দেখাব মজা। এমন মার দেব না যে তোমার নাবিক হওয়া বের করে দেব।’ আহা, বললেই হল! মা আমাকে যেন কতই মারছেন। আমার গায়ে কোনোদিন একটা আঙুলও ছোঁয়ান নি তিনি। একবার শুধু আমাকে বাড়ির যে-ঘরে ভাঙাচোরা জিনিসপত্র থাকত সেই ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলেন। কিন্তু তার জন্যে পরদিন সারা দিন ধরে মাংসর পিঠে নিয়ে অনেক সাধাসাধি করেছেন আর সিনেমায় যাওয়ার জন্যে বিশ কোপেক পর্যন্ত, দিয়েছেন। আহা, ওইরকম আমাকে যদি আরও কয়েক দিন বন্ধ করে রাখতেন মা।