০১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইশকুল (পর্ব-১৯)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
  • 19
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

আমি কিন্তু এ-সব কথা মোটেই বিশ্বাস করি নি। প্রথমত, আমাদের শহর থেকে সীমান্ত পর্যন্ত কেউ টেলিফোন লাইন পাততে পারত না। দ্বিতীয়ত, আজামাসে এমন কী সামরিক গোপন খবর তৈরি হচ্ছিল কিংবা সৈন্য-চলাচল ঘটছিল, যা শত্রুকে জানানো যেতে পারত? সত্যি কথা বলতে কি, ওখানে সৈন্য ছিল যে তাই বলা যেত না। ছিল তো একজন অফিসারের আর্দালি নিয়ে জনা সাতেক লোকের একটা দল। আর ছিল রেল-স্টেশনে সামরিক সরাইখানার ঘাঁটিতে চারজন রুটি তৈরির কারিগর।

তা, তারা ছিল নামেই সৈন্য। আসলে তারা অতি-সাধারণ রুটির কারিগর ছাড়া আর কিছু ছিল না। তাছাড়া, যুদ্ধের কয়েক বছরে শহরে মাত্র একবারই সৈন্য-চলাচল ঘটেছিল যখন সামরিক অফিসার বালাগুশিন পিরিয়াতিনদের ওখান থেকে বাসিউগিনদের বাড়িতে বাসাবদল করেছিলেন। এছাড়া আর কখনও কোনো ফৌজী নড়াচড়ার লক্ষণ দেখা যায় নি।

আর মাস্টারমশাইয়ের রাহাজানি করার গুজবটা ছিল একেবারে ডাহা মিথ্যে। আসলে পেতৃকা জোলোতুখিনই খবরটা রটিয়েছিল। আর সকলেই জানত, ও ছিল দুনিয়ার সব-সেরা মিথ্যেবাদী। ও যদি কখনও তিন কোপেক ধার নিত, পরে নির্ঘাত দিব্যি গেলে বলত সব শোধ করে দিয়েছে। কিংবা কারো কাছ থেকে ধার-নেয়া ছিপগাছা বড়শি ছাড়াই ফেরত দিয়ে বেমালুম বড়শি নেয়ার কথা অস্বীকার করত।

তাছাড়া, ইশকুলের মাস্টারমশাই আবার রাস্তায় ডাকাতি করেন, কে কবে এমনধারা কথা শুনেছে? আমাদের স্যারের মুখটা মোটেই ডাকাতের মতো দেখতে ছিল না, হাঁটতেনও তিনি অদ্ভুত মজার ধরনে। তাছাড়া মাস্টারমশাই লোকটি ছিলেন দয়ালু, চেহারা ছিল হাড়-জিরজিরে আর কেবলই কেশে কেশে সারা হতেন।

স্টেশনের দিকে দৌড়তে দৌড়তে ফেক্কা আর আমি অবশেষে পৌঁছলুম খাদটায়। আর কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে আমি ফেকাকে শেষপর্যন্ত জিজ্ঞেস করলুম: ‘না, সত্যি, ফেদুকা, মাস্টারমশাই কেন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বল্ না রে? উনি নাকি শত্রুর চর ছিলেন, ডাকাত ছিলেন? এসব একেবারেই বাজে কথা, তাই না?’

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

ইশকুল (পর্ব-১৯)

০৮:০০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

আমি কিন্তু এ-সব কথা মোটেই বিশ্বাস করি নি। প্রথমত, আমাদের শহর থেকে সীমান্ত পর্যন্ত কেউ টেলিফোন লাইন পাততে পারত না। দ্বিতীয়ত, আজামাসে এমন কী সামরিক গোপন খবর তৈরি হচ্ছিল কিংবা সৈন্য-চলাচল ঘটছিল, যা শত্রুকে জানানো যেতে পারত? সত্যি কথা বলতে কি, ওখানে সৈন্য ছিল যে তাই বলা যেত না। ছিল তো একজন অফিসারের আর্দালি নিয়ে জনা সাতেক লোকের একটা দল। আর ছিল রেল-স্টেশনে সামরিক সরাইখানার ঘাঁটিতে চারজন রুটি তৈরির কারিগর।

তা, তারা ছিল নামেই সৈন্য। আসলে তারা অতি-সাধারণ রুটির কারিগর ছাড়া আর কিছু ছিল না। তাছাড়া, যুদ্ধের কয়েক বছরে শহরে মাত্র একবারই সৈন্য-চলাচল ঘটেছিল যখন সামরিক অফিসার বালাগুশিন পিরিয়াতিনদের ওখান থেকে বাসিউগিনদের বাড়িতে বাসাবদল করেছিলেন। এছাড়া আর কখনও কোনো ফৌজী নড়াচড়ার লক্ষণ দেখা যায় নি।

আর মাস্টারমশাইয়ের রাহাজানি করার গুজবটা ছিল একেবারে ডাহা মিথ্যে। আসলে পেতৃকা জোলোতুখিনই খবরটা রটিয়েছিল। আর সকলেই জানত, ও ছিল দুনিয়ার সব-সেরা মিথ্যেবাদী। ও যদি কখনও তিন কোপেক ধার নিত, পরে নির্ঘাত দিব্যি গেলে বলত সব শোধ করে দিয়েছে। কিংবা কারো কাছ থেকে ধার-নেয়া ছিপগাছা বড়শি ছাড়াই ফেরত দিয়ে বেমালুম বড়শি নেয়ার কথা অস্বীকার করত।

তাছাড়া, ইশকুলের মাস্টারমশাই আবার রাস্তায় ডাকাতি করেন, কে কবে এমনধারা কথা শুনেছে? আমাদের স্যারের মুখটা মোটেই ডাকাতের মতো দেখতে ছিল না, হাঁটতেনও তিনি অদ্ভুত মজার ধরনে। তাছাড়া মাস্টারমশাই লোকটি ছিলেন দয়ালু, চেহারা ছিল হাড়-জিরজিরে আর কেবলই কেশে কেশে সারা হতেন।

স্টেশনের দিকে দৌড়তে দৌড়তে ফেক্কা আর আমি অবশেষে পৌঁছলুম খাদটায়। আর কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে আমি ফেকাকে শেষপর্যন্ত জিজ্ঞেস করলুম: ‘না, সত্যি, ফেদুকা, মাস্টারমশাই কেন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বল্ না রে? উনি নাকি শত্রুর চর ছিলেন, ডাকাত ছিলেন? এসব একেবারেই বাজে কথা, তাই না?’