০১:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইশকুল (পর্ব-২৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • 19

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

দামী একজন সহকারীকে হারানোর ভয়ে শেষপর্যন্ত রাজি হয়ে গেলুম। শুধু প্রস্তাব করলুম, পালা করে আমরা অ্যাডমিরাল হব একদিন ফেক্কা, একদিন আমি।

শেষপর্যন্ত এইভাবে রফা হল।

দুটো ধনুক তৈরি করলুম আমরা। ডজনখানেক তাঁরও বানিয়ে নিলুম। তারপর রওনা দিলুম বনের মধ্যে। আমাদের সঙ্গে বেশ কিছু ‘ব্যাঙবাজি’ও ছিল। ‘ব্যাঙবাজি’ হল, গোল-করে-পাকানো একটা কাগজের নলের মধ্যে পটাশিয়াম ক্লোরেট আর কাঠকয়লার গুড়ো ঠেসে একটুকরো সুতো দিয়ে শক্ত-করে-বাঁধা একরকম বাজি।

আমাদের তীরের আগায় ওই ‘ব্যাঙবাজি’ বে’ধে বাজির পলতের আগুন ধরাতে লাগলুম। তীরগুলো সজোরে আকাশে ওঠার পর ‘ব্যাঙবাজি’ সব আকাশে ফাটতে লাগল আর সবসুদ্ধ আগুনে-সাপের মতো এ’কেবে’কে এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করতে লাগল। দাঁড়কাক আর কাকেরা তো তাই দেখে ভয় পেয়ে তুমুল সোরগোল শুরু করে দিলে।

বনটা ছিল কবরখানার ঠিক পাশেই। ঘন জঙ্গল, অসংখ্য গর্ত’ আর ছোট-ছোট পুকুরে ভরা। হলদে শাপলা, সোনালি ঝুমকো ফুল আর ফার্ন’গাছে ছেয়ে ছিল বনের সবুজ ছায়াঢাকা জায়গাগুলো।

প্রাণভরে খেলার পর পাঁচিল বেয়ে উঠে আমরা কবরখানার এক নির্জন কোণে এসে নামলুম। অতক্ষণ ধরে খেলার উত্তেজনার পর এই শান্ত, স্তব্ধ পরিবেশ আমাদের দেহমন যেন জুড়িয়ে দিল। পাতার আড়ালে লুকনো পাখিদের ডাক মাঝে-মাঝে নিস্তব্ধতা ভেঙে দিচ্ছিল। চাপা গলায় কথা বলতে-বলতে আমরা এক টুকরো পোড়ো জমির ওপর দিয়ে হেটে চললুম। আমাদের চারপাশে কবরের মাটির ঢিবি, কোনো- কোনোটা মাটির ওপর সামান্য একটু মাথা জাগিয়ে ছিল মাত্র।

 

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

ইশকুল (পর্ব-২৪)

০৮:০০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

দামী একজন সহকারীকে হারানোর ভয়ে শেষপর্যন্ত রাজি হয়ে গেলুম। শুধু প্রস্তাব করলুম, পালা করে আমরা অ্যাডমিরাল হব একদিন ফেক্কা, একদিন আমি।

শেষপর্যন্ত এইভাবে রফা হল।

দুটো ধনুক তৈরি করলুম আমরা। ডজনখানেক তাঁরও বানিয়ে নিলুম। তারপর রওনা দিলুম বনের মধ্যে। আমাদের সঙ্গে বেশ কিছু ‘ব্যাঙবাজি’ও ছিল। ‘ব্যাঙবাজি’ হল, গোল-করে-পাকানো একটা কাগজের নলের মধ্যে পটাশিয়াম ক্লোরেট আর কাঠকয়লার গুড়ো ঠেসে একটুকরো সুতো দিয়ে শক্ত-করে-বাঁধা একরকম বাজি।

আমাদের তীরের আগায় ওই ‘ব্যাঙবাজি’ বে’ধে বাজির পলতের আগুন ধরাতে লাগলুম। তীরগুলো সজোরে আকাশে ওঠার পর ‘ব্যাঙবাজি’ সব আকাশে ফাটতে লাগল আর সবসুদ্ধ আগুনে-সাপের মতো এ’কেবে’কে এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করতে লাগল। দাঁড়কাক আর কাকেরা তো তাই দেখে ভয় পেয়ে তুমুল সোরগোল শুরু করে দিলে।

বনটা ছিল কবরখানার ঠিক পাশেই। ঘন জঙ্গল, অসংখ্য গর্ত’ আর ছোট-ছোট পুকুরে ভরা। হলদে শাপলা, সোনালি ঝুমকো ফুল আর ফার্ন’গাছে ছেয়ে ছিল বনের সবুজ ছায়াঢাকা জায়গাগুলো।

প্রাণভরে খেলার পর পাঁচিল বেয়ে উঠে আমরা কবরখানার এক নির্জন কোণে এসে নামলুম। অতক্ষণ ধরে খেলার উত্তেজনার পর এই শান্ত, স্তব্ধ পরিবেশ আমাদের দেহমন যেন জুড়িয়ে দিল। পাতার আড়ালে লুকনো পাখিদের ডাক মাঝে-মাঝে নিস্তব্ধতা ভেঙে দিচ্ছিল। চাপা গলায় কথা বলতে-বলতে আমরা এক টুকরো পোড়ো জমির ওপর দিয়ে হেটে চললুম। আমাদের চারপাশে কবরের মাটির ঢিবি, কোনো- কোনোটা মাটির ওপর সামান্য একটু মাথা জাগিয়ে ছিল মাত্র।