আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
সন্ত্রাসবাদীটিকে কেমন বুঝছ?’ এই বলে বাবা হেসে আমার মাথায় হাত বুলোল।’ একটু চুপচাপ থেকে আমি বললুম, ‘ফেক্কা, সন্ত্রাসবাদী কাকে বলে আমি জানি। ওই যে যারা পুলিসের দিকে বোমা ছোড়ে আর বড়লোকদের বিরুদ্ধে লাগে। আচ্ছা, ফেক্কা, বল্ তো আমরা গরিব, না বড়লোক?’
অল্প একটু ভেবে নিয়ে ফেকা জবাব দিল, ‘মাঝামাঝি। আমাদের খুব গরিব বলা চলে না। ধর্, বাবা চাকরি করে। রোজ আমরা পেট ভরে খেতে পাই। রবিবার- রবিবার মা পিঠে বানায়, কোনো কোনো দিন ভাপে ফল সেদ্ধ করেও খেতে দেয়। ভাপে-সেদ্ধ ফল কিন্তু আমার ভী-ষ-ণ ভালো লাগে। তোর?’
‘আমারও। তবে আপেলের চাটুনি আমার আরও ভালো লাগে। বুঝলি, আমারও মনে হয় আমরা মাঝারি অবস্থার লোক। বেবেশিনদের দ্যাখ ওরা একটা আন্ত ফ্যাক্টরির মালিক। ভাস্কার সঙ্গে দেখা করতে আমি একদিন ওদের বাড়ি গিয়েছিলুম। কত-যে ওদের লোকলস্কর, চাকরবাকর, কী বলি! ভাস্কার বাবা না ভাস্কাকে একটা জ্যান্ত ঘোড়া উপহার দিলেন। শুনলুম ওকে নাকি টাট্টুঘোড়া বলে।’
‘ওহ, ওদের তো সবকিছুই আছে,’ ফেকা সায় দিল। ‘গাদা গাদা টাকা আছে ওদের। ওই সিনিউগিন ব্যাপারী? ও তো ওর বাড়ির ছাদে একটা উঁচু গম্বুজ বানিয়ে গম্বুজে আবার একটা টেলিস্কোপ বসিয়েছিল। পয়লা নম্বরের ধাপ্পাবাজ একটা! যখন সংসারে অরুচি ধরে যায় তখন ও নাকি ওই গম্বুজে উঠে যায় আর চাকররা ওখানেই ওকে খাবার আর বোতল দিয়ে আসে… আর গম্বুজেই ও বসে থাকে সারা রাত, বসে বসে গ্রহনক্ষত্র দ্যাখে।
সেদিন ও নাকি ইয়ার-দোস্তদের নিয়ে ওখানেই মদের আসর বসিয়েছিল আর সেই অবস্থায় টেলিস্কোপে দেখাদেখি করতে গিয়ে একটা কাচ না কী যেন ভেঙে ফেলে। ব্যাস, এখন সব দেখাদেখি বন্ধ, নাও ঠেলা!’