আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
‘আচ্ছা, ফেক্কা, এমন কেন হয় রে যে শুধু সিনিউগিনই সব কিছু মজা লুটবে, গ্রহনক্ষত্র দেখবে, আর অন্যদের বেলায় জুটবে লবডঙ্কা? যেমন ধর্, সিগভ। ওই- যে রে, যে কারখানায় কাজ করে। ও বেচারি তো দুবেলা দু’মুঠো খেতেই পায় না, তারা-দেখা মাথায় থাক। গতকাল ও একতলায় মুচির কাছে পঞ্চাশ কোপেক ধার করতে এসেছিল।’
‘কেন এমন হয় কী করে জানব বল? আমায় ওসব জিজ্ঞেস করিস না। মাস্টারমশাইকে কি পাদ্রিসাহেবকে শুধোস।’
হাঁটতে হাঁটতে বুনো যাইয়ের একটা ছোট্ট ডাল ভেঙে নিল ফেক্কা। তারপর একটু নিচুগলায় বললে:
‘জানিস বাবা বলছিল, শিগগিরই সবকিছু নাকি বদলে অন্যরকম হয়ে যাবে।’
‘কী বদলাবে?’
‘সবকিছু। বুঝেছিস বরিস, খোলাখুলি বাবা আমায় কিছু বলে নি। ওরা ভেবেছিল আমি বুঝি ঘুমোচ্ছি। আমিও ঘুমের ভান করে পড়ে রইলুম। বাবা কারখানার পাহারাদারের সঙ্গে কথা বলছিল, উনিশ শো পাঁচ সালের মতো আবার যে ধর্মঘট হতে যাচ্ছে সেইসব নিয়ে। উনিশ শো পাঁচ সালে কী হয়েছিল জানিস তো?’
‘জানি, একটু-একটু,’ হঠাৎ লজ্জা পেয়ে লাল হয়ে উঠতে-উঠতে জবাব দিলুম।
‘বিপ্লব হয়েছিল তখন। তবে সফল হয় নি। বিপ্লবীদের মতলব ছিল জমিদারদের পুড়িয়ে মারা, সব জমি চাষীদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া আর বড়লোকদের কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিয়ে গরিবদের দেয়া। জানিস, আমি বড়দের কথাবার্তা থেকে সবকিছু জেনেছি।’