০১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইশকুল (পর্ব-২৯)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • 20

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

‘ভয় পেয়েছিলি না হাতি! এমনিই। ছিলি তো হাড়জ্বালানে রামকাঁদুনে ছেলে, আবার কী। ভয় পাওয়ার বয়েস হয়েছিল নাকি তখন যে ভয় পাবি? এক রাত্রে ফৌজী পুলিস এল আমাদের বাড়ি তল্লাসি করতে। কিসের খোঁজে, জানি না। তবে সে-সময়ে বাড়ি-বাড়ি ওরা নিয়ম করে খানাতল্লাসি চালাত। সেরাত্রে আমাদের বাড়িতে সবকিছু ওলটপালট, নয়ছয় করে দিলে ওরা, কিন্তু কিচ্ছু পেলে না।

অফিসারটি ছিল যেন বিনয়ের অবতার। তোকে একটা আঙুল দিয়ে কাতুকুতু দিতে লাগল। তুই তো হেসেই কুটিপাটি। অফিসার বললে, ‘চমৎকার খোকা আপনার’। বলে খেলার ছলে তোকে কোলে তুলে নিল। ওদিকে একজন সৈন্যকে চোখ টিপে দিতে সে তোর দোলনাটা তল্লাসি করতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ তুই পেচ্ছাপ করে দিলি। হি-হি, একেবারে অফিসারের পোশাকের ওপর!

আমি তোকে ওর কোল থেকে নিয়ে তাড়াতাড়ি অফিসারের হাতে একখানা কাঁথা তুলে দিলুম জামা মোছার জন্যে। কী কান্ড, একেবারে আনকোরা নতুন পোশাক পরে এসেছিল লোকটা, আর তুই কিনা বিলকুল সব ভিজিয়ে দিলি, মায় ট্রাউজার্স, এমন কি তরোয়ালখানা পর্যন্ত। একেবারে পুরোপুরি নাইয়ে দিলি লোকটাকে। এমনি দুষ্টু বাঁদর ছিলি তুই!’ পুরনো কথা মনে পড়ায় মা তো হেসেই অস্থির।

বাধা দিলুম, ‘তুমি তো বেশ মা, অন্য ব্যাখ্যান আরম্ভ করলে দেখি।’ রীতিমতো চটে গেছি আমি তখন। ‘আমি তোমায় জিজ্ঞেস করলুম বিপ্লবের কথা, আর তুমি শুরু করলে যতসব আবোলতাবোল গম্পো…’

‘আঃ, ক্ষ্যামা দাও দেখি। জালিয়ে মারলি একেবারে!’ এই বলে মা আলোচনায় ইতি টেনে দিলেন।

কিন্তু আমার মুখে কষ্টের ছাপ লক্ষ্য করে থমকে গেলেন তিনি। পরে একগোছা চাবি বের করে আমায় দিয়ে বললেন:

‘আমি কিছু বলব না। যা, এই চাবি দিয়ে ভাঙাচোরা জিনিসপত্তরের ঘরটা খোল। ওখানে একটা বড় বাক্স দেখতে পাবি। তার মধ্যে ওপর দিকে দেখবি নানা ধরনের বাতিল জিনিসপত্তর। ওগুলোর নিচে তোর বাবার এক বস্তা বই আছে।

তার মধ্যে ওই বিষয়ে বই আছে কিনা খোঁজ কর গিয়ে। সেগুলো যদি তোর বাবা ছি’ড়ে না ফেলে থাকেন তাহলে তার মধ্যে উনিশ শো পাঁচ সম্বন্ধে একটা-না- একটা বই পেয়ে যাবি।’

 

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

ইশকুল (পর্ব-২৯)

০৮:০০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

‘ভয় পেয়েছিলি না হাতি! এমনিই। ছিলি তো হাড়জ্বালানে রামকাঁদুনে ছেলে, আবার কী। ভয় পাওয়ার বয়েস হয়েছিল নাকি তখন যে ভয় পাবি? এক রাত্রে ফৌজী পুলিস এল আমাদের বাড়ি তল্লাসি করতে। কিসের খোঁজে, জানি না। তবে সে-সময়ে বাড়ি-বাড়ি ওরা নিয়ম করে খানাতল্লাসি চালাত। সেরাত্রে আমাদের বাড়িতে সবকিছু ওলটপালট, নয়ছয় করে দিলে ওরা, কিন্তু কিচ্ছু পেলে না।

অফিসারটি ছিল যেন বিনয়ের অবতার। তোকে একটা আঙুল দিয়ে কাতুকুতু দিতে লাগল। তুই তো হেসেই কুটিপাটি। অফিসার বললে, ‘চমৎকার খোকা আপনার’। বলে খেলার ছলে তোকে কোলে তুলে নিল। ওদিকে একজন সৈন্যকে চোখ টিপে দিতে সে তোর দোলনাটা তল্লাসি করতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ তুই পেচ্ছাপ করে দিলি। হি-হি, একেবারে অফিসারের পোশাকের ওপর!

আমি তোকে ওর কোল থেকে নিয়ে তাড়াতাড়ি অফিসারের হাতে একখানা কাঁথা তুলে দিলুম জামা মোছার জন্যে। কী কান্ড, একেবারে আনকোরা নতুন পোশাক পরে এসেছিল লোকটা, আর তুই কিনা বিলকুল সব ভিজিয়ে দিলি, মায় ট্রাউজার্স, এমন কি তরোয়ালখানা পর্যন্ত। একেবারে পুরোপুরি নাইয়ে দিলি লোকটাকে। এমনি দুষ্টু বাঁদর ছিলি তুই!’ পুরনো কথা মনে পড়ায় মা তো হেসেই অস্থির।

বাধা দিলুম, ‘তুমি তো বেশ মা, অন্য ব্যাখ্যান আরম্ভ করলে দেখি।’ রীতিমতো চটে গেছি আমি তখন। ‘আমি তোমায় জিজ্ঞেস করলুম বিপ্লবের কথা, আর তুমি শুরু করলে যতসব আবোলতাবোল গম্পো…’

‘আঃ, ক্ষ্যামা দাও দেখি। জালিয়ে মারলি একেবারে!’ এই বলে মা আলোচনায় ইতি টেনে দিলেন।

কিন্তু আমার মুখে কষ্টের ছাপ লক্ষ্য করে থমকে গেলেন তিনি। পরে একগোছা চাবি বের করে আমায় দিয়ে বললেন:

‘আমি কিছু বলব না। যা, এই চাবি দিয়ে ভাঙাচোরা জিনিসপত্তরের ঘরটা খোল। ওখানে একটা বড় বাক্স দেখতে পাবি। তার মধ্যে ওপর দিকে দেখবি নানা ধরনের বাতিল জিনিসপত্তর। ওগুলোর নিচে তোর বাবার এক বস্তা বই আছে।

তার মধ্যে ওই বিষয়ে বই আছে কিনা খোঁজ কর গিয়ে। সেগুলো যদি তোর বাবা ছি’ড়ে না ফেলে থাকেন তাহলে তার মধ্যে উনিশ শো পাঁচ সম্বন্ধে একটা-না- একটা বই পেয়ে যাবি।’