কৃষি ও কৃষক
চতুর্থ অধ্যায়
কৃষকের সমস্যাকে অবহেলা করলে যেকোন মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ অবস্থার উদ্ভব হতে পারে তা প্রশাসনের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠল। তাই ভবানী সেন পরবর্তীকালে মন্তব্য করেছেন
The great agrarian struggles of 1946-47 had lid the spark which kindled the fire of land reform in the hearts of all progressive elements’.
স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে সুন্দরবনের কৃষকদের সামনে এই সমস্যাগুলি তীব্র ছিল এবং তা সমাধানের সাথে সুন্দরবনের কৃষি ও কৃষকের উন্নতির প্রশ্ন জড়িয়ে আছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠল।
ক) আমূল ভূমি সংস্কার, প্রকৃত চাষির হাতে জমি দেবার এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের জমি থেকে উচ্ছেদের প্রশ্নটা রইল।
খ) কৃষি ও কৃষকের উন্নতির প্রশ্নে প্রয়োজনীয় চাষের সরঞ্জাম হাল বলদ সেচ প্রভৃতির বিষয়টা তীব্র হল।
গ) সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য নদী মজে যাবার ফলে জলনিকাশি সংকট দেখা দিল এবং অনেকগুলি বড় বড় বিল যেখানে একদিন সোনার ফসল ফলত তা জলাভূমি আবার কোথাও জলকরে পরিণত হল। সুতরাং সুষ্ঠু জলনিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টা গুরুত্ব পেল।
ঘ) নদী-বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। জমিদাররা দীর্ঘকাল ধরে এ ব্যাপারে
অবহেলা করেছে তার ফলে প্রতিনিয়ত নদীর বাঁধ ভেঙে শস্যহানি ঘটাত।
ঙ) যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। কলকাতার এত কাছে থাকা সত্ত্বেও আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। সুন্দরবনের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নদীই ছিল প্রধান অবলম্বন। দ্রুত পরিবহণের মধ্য দিয়ে চাষির ফসল শহরে আনার ব্যবস্থা করতে পারলে ফসলের ন্যায্য দাম কিছুটা চাষি পেতে পারে।