১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে সাহিত্য প্রচারে শারজাহের ভূমিকা: সংস্কৃতি ও জ্ঞানের সেতুবন্ধন ‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ উত্তর জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা ও রেল চলাচলে বিঘ্ন” জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার”

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১৪)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
  • 62

শ্রী নিখিলনাথ রায়

যে এই সময়ে তিনি নন্দকুমারের প্রকৃত চরিত্রসম্বন্ধে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। আমরা এ স্থলে তাহার সংক্ষিপ্ত মৰ্ম্ম প্রদান করিতেছি। নন্দকুমারের পরম শত্রু হেষ্টিংসের নিকট হইতে তাঁহার প্রকৃত চরিত্রের কিঞ্চিৎ আভাস পাওয়া যে অতীব বিস্ময়কর, তাহাতে সন্দেহ নাই। হেষ্টিংস এই সময়ে নন্দকুমারের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন বলিয়া, তাঁহার প্রকৃত চরিত্রের কথা কিঞ্চিৎ প্রকাশ করিয়াছিলেন। নন্দকুমার- চরিত্রের প্রতি যাঁহাদের ঘৃণা আছে, তাঁহারাও হেষ্টিংসের মন্তব্যটি একটু মনোযোগ সহকারে পাঠ করিবেন।

হেষ্টিংস এই রূপ লিখিয়াছিলেন যে, “নন্দকুমার প্রকৃত কর্মচারী ও মন্ত্রীর ন্যায় স্বীয় প্রভুর কল্যাণের ও ক্ষমতা- বৃদ্ধির জন্য বৈদেশিকগণের সাহায্যগ্রহণের ও কোম্পানীর ক্ষমতাহ্রাসের চেষ্টা করিয়াছিলেন। নবাব মীর জাফর তাঁহাকে যথেষ্ট বিশ্বাস করিতেন। মীরজাফর কখনও তাঁহাকে অবিশ্বাস্য বলিয়া তাঁহার প্রতি দোষারোপ করেন নাই। নন্দকুমার যে সমস্ত রাজনৈতিক ব্যাপারে লিপ্ত ছিলেন, তৎসমুদায় কেবল তাহার প্রভুর মঙ্গল ও ক্ষমতা বৃদ্ধির, উদ্দেশেই সংসাধিত হইত। মীর জাফরের মঙ্গলের সহিত তাঁহার নিজের স্বার্থের যে সংস্রব ছিল না, এমন নহে।

তাহারও কিঞ্চিৎ মিশ্রণ ছিল। মীর জাফর, তাঁহার প্রতি যে কিরূপ সন্তুষ্ট ছিলেন, তাঁহার রাজত্বের প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁহাকে যেরূপ রাজসম্মানে ‘সম্মানিত করিয়াছিলেন, তদ্বারা তাহা যথেষ্টরূপে সপ্রমাণ হয়। নন্দকুমারের দ্বারা যে সকল কাৰ্য্য সংসাধিত হইয়াছে, তাহার অধিকাংশ আমাদের বিরুদ্ধ হইলেও, সত্য কথা বলিতে গেলে, ইহা তাঁহার পক্ষে কোন মতে নিন্দনীয় নহে; বরং প্রশংসনীয়। তিনি স্বীয় প্রভুর স্বাধীনতাবিস্তারের জন্য বাদশাহের নিকট হইতে সনন্দ আনাইয়াছিলেন এবং পাছে তাঁহার ক্ষমতার হ্রাস হয়, তজ্জন্য মহম্মদ রেজা খাঁর নিয়োগ সম্বন্ধে আপত্তি করিয়াছিলেন”।

বাস্তবিক নন্দকুমার সম্বন্ধে বিবেচক ব্যক্তিমাত্রেরই এই মত। তাঁহার শত্রুপক্ষীয়গণ মনে মনে ইহাই বিশ্বাস করিতেন। কিন্তু আপনাদিগের জেদ ও খাতির রক্ষার জন্য তাঁহার অযথা নিন্দা করিয়া গিয়াছেন। নন্দ- কুমারের প্রতি হেষ্টিংসের বিদ্বেষভাব সেই সময়ে প্রশমিত হওয়ায়, তিনি তাঁহার চরিত্র সম্বন্ধে প্রকৃত কথাই প্রকাশ করিয়াছিলেন। পরম শত্রু হেষ্টিংসের কথা তদীয় চরিত্রের মহত্ত্ব প্রতিপাদনের পক্ষে অল্প প্রামাণ্য নহে। রেজা খাঁকে নিষ্কৃতি পাইতে দেখিয়া, জনসাধারণে আশ্চর্যান্বিত হইল। ‘নন্দকুমারও হেষ্টিংসচরিত্র বিশেষরূপে উপলব্ধি করিলেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

 গুগল প্লে ও ইউটিউবের নতুন কেনা সিনেমা আর পড়বে না মুভিজ অ্যানিওয়্যারে

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১৪)

১১:০০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

যে এই সময়ে তিনি নন্দকুমারের প্রকৃত চরিত্রসম্বন্ধে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। আমরা এ স্থলে তাহার সংক্ষিপ্ত মৰ্ম্ম প্রদান করিতেছি। নন্দকুমারের পরম শত্রু হেষ্টিংসের নিকট হইতে তাঁহার প্রকৃত চরিত্রের কিঞ্চিৎ আভাস পাওয়া যে অতীব বিস্ময়কর, তাহাতে সন্দেহ নাই। হেষ্টিংস এই সময়ে নন্দকুমারের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন বলিয়া, তাঁহার প্রকৃত চরিত্রের কথা কিঞ্চিৎ প্রকাশ করিয়াছিলেন। নন্দকুমার- চরিত্রের প্রতি যাঁহাদের ঘৃণা আছে, তাঁহারাও হেষ্টিংসের মন্তব্যটি একটু মনোযোগ সহকারে পাঠ করিবেন।

হেষ্টিংস এই রূপ লিখিয়াছিলেন যে, “নন্দকুমার প্রকৃত কর্মচারী ও মন্ত্রীর ন্যায় স্বীয় প্রভুর কল্যাণের ও ক্ষমতা- বৃদ্ধির জন্য বৈদেশিকগণের সাহায্যগ্রহণের ও কোম্পানীর ক্ষমতাহ্রাসের চেষ্টা করিয়াছিলেন। নবাব মীর জাফর তাঁহাকে যথেষ্ট বিশ্বাস করিতেন। মীরজাফর কখনও তাঁহাকে অবিশ্বাস্য বলিয়া তাঁহার প্রতি দোষারোপ করেন নাই। নন্দকুমার যে সমস্ত রাজনৈতিক ব্যাপারে লিপ্ত ছিলেন, তৎসমুদায় কেবল তাহার প্রভুর মঙ্গল ও ক্ষমতা বৃদ্ধির, উদ্দেশেই সংসাধিত হইত। মীর জাফরের মঙ্গলের সহিত তাঁহার নিজের স্বার্থের যে সংস্রব ছিল না, এমন নহে।

তাহারও কিঞ্চিৎ মিশ্রণ ছিল। মীর জাফর, তাঁহার প্রতি যে কিরূপ সন্তুষ্ট ছিলেন, তাঁহার রাজত্বের প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁহাকে যেরূপ রাজসম্মানে ‘সম্মানিত করিয়াছিলেন, তদ্বারা তাহা যথেষ্টরূপে সপ্রমাণ হয়। নন্দকুমারের দ্বারা যে সকল কাৰ্য্য সংসাধিত হইয়াছে, তাহার অধিকাংশ আমাদের বিরুদ্ধ হইলেও, সত্য কথা বলিতে গেলে, ইহা তাঁহার পক্ষে কোন মতে নিন্দনীয় নহে; বরং প্রশংসনীয়। তিনি স্বীয় প্রভুর স্বাধীনতাবিস্তারের জন্য বাদশাহের নিকট হইতে সনন্দ আনাইয়াছিলেন এবং পাছে তাঁহার ক্ষমতার হ্রাস হয়, তজ্জন্য মহম্মদ রেজা খাঁর নিয়োগ সম্বন্ধে আপত্তি করিয়াছিলেন”।

বাস্তবিক নন্দকুমার সম্বন্ধে বিবেচক ব্যক্তিমাত্রেরই এই মত। তাঁহার শত্রুপক্ষীয়গণ মনে মনে ইহাই বিশ্বাস করিতেন। কিন্তু আপনাদিগের জেদ ও খাতির রক্ষার জন্য তাঁহার অযথা নিন্দা করিয়া গিয়াছেন। নন্দ- কুমারের প্রতি হেষ্টিংসের বিদ্বেষভাব সেই সময়ে প্রশমিত হওয়ায়, তিনি তাঁহার চরিত্র সম্বন্ধে প্রকৃত কথাই প্রকাশ করিয়াছিলেন। পরম শত্রু হেষ্টিংসের কথা তদীয় চরিত্রের মহত্ত্ব প্রতিপাদনের পক্ষে অল্প প্রামাণ্য নহে। রেজা খাঁকে নিষ্কৃতি পাইতে দেখিয়া, জনসাধারণে আশ্চর্যান্বিত হইল। ‘নন্দকুমারও হেষ্টিংসচরিত্র বিশেষরূপে উপলব্ধি করিলেন।