০৬:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
চীনের বায়োফার্মা উত্থান: ইভি শিল্পের সাফল্যের প্রতিধ্বনি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ ভারতে লেন্সকার্টের শেয়ার বাজারে সূচনা দিনে পতন চীনের স্বনির্ভরতার নতুন অধ্যায় , নতুন কারখানা নির্মাণে ইয়াংজি মেমোরি টেকনোলজি রমজান ২০২৬: রোজা শুরু ফেব্রুয়ারি ১৭ থেকে ১৯-এর মধ্যে, ঈদুল ফিতর ২০ মার্চ হাটহাজারীতে ২৪ ঘণ্টায় তিন অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার: এলাকায় চাঞ্চল্য বিশ্ববাজারে শেয়ারমূল্য বৃদ্ধি: মার্কিন সরকারের শাটডাউন সমাপ্তির আশায় উল্লাস, প্রযুক্তিখাতে উদ্বেগ অব্যাহত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন হবে না: জামায়াত আমিরের ঘোষণা বিদেশগামী শ্রমিকদের কল্যাণে গালফ প্রদেশ কাউন্সিল ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠক কৃষিজমি রক্ষায় জরুরি আইন প্রণয়নের আহ্বান ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী: পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব কাঠামোয় কীভাবে বড় পরিবর্তন আনবে

ইশকুল (পর্ব-৫২)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
  • 64

আর্কাদি গাইদার

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘না, ওসব কিছুটি করা চলবে না। বোস্ দেখি চুপ করে।’

নিঃশব্দে পাশের ঘরে ঢুকে আমি তানিয়ার মাথার রুমালটা নিয়ে ফিরে এলুম।

‘কই, প্র্যাটা আনলি না?’

‘বোকামো করিস না তো! প্র্যাম্ নিয়ে গিয়ে করবি কী শুনি? ইয়েগর মামা সত্যিকার গাড়িতে তোকে ঘুরিয়ে আনবেন, দেখিস।’

তেশা নদীর ধার ঘে’ষে ইভানো‌স্কোয়েতে যাবার পথ। বোনটা আমার সারাটা পথ নাচতে নাচতে চলল। আর মিনিটে মিনিটে থামতে লাগল, কখনও-বা গাছের ডাল কুড়োতে, আবার কখনও-বা হাঁসেদের জলে হুটোপাটি করা দেখতে। আর পেছনে পেছনে আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগলুম আমি। ভোরবেলার টাটকা বাতাস, হেমন্তের হলুদ-সবুজ মাঠের পর মাঠ, চরতে-ব্যস্ত গরুগুলোর গলায়-বাঁধা পেতলের ঘুন্টির একঘেয়ে টুংটাং আওয়াজ আমার শরীর-মন জুড়িয়ে দিল।

নাছোড়বান্দা যে-চিন্তা, যে-সন্দেহটা আমায় আগের সারা রাত জ্বালিয়েছে সেটা এখন মনের মধ্যে ভালো করে জে’কে বসল। আর সেটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টাও করলুম না।

জানলা দিয়ে ছুটে-আসা মাটির ঢেলাটার কথা মনে পড়ল আমার। ওটা হাওয়ায় উড়ে এসে পড়ে নি নিশ্চয়। বাগানের মাটি থেকে অত বড় একটা মাটির চাঙড় বাতাস কি অত ওপরে তুলতে পারে? ওটা নিশ্চয়ই বাবার কাজ, বাবা ওটা ছুড়েছিলেন আমাদের জানান দিতে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বাবা লুকিয়ে ছিলেন বাগানে, ফেস্কার চলে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। আমার বোন বাবাকে দেখুক, তাও উনি চান নি। কারণ বাচ্চা মেয়ে তো, ভয় ছিল সব জানাজানি করে দিতে পারে। যে-সব সৈন্য ছুটিতে বাড়ি আসে তারা এভাবে লোকের কাছ থেকে নিজেদের লুকিয়ে রাখে না।

তবে কি… নাঃ, এ-ব্যাপারে অন্য কোনোরকম ধারণা করার কোনো সুযোগ নেই। আমার বাবা ফৌজ থেকে পালিয়েছেন।

ফেরার পথে ইশকুল ইনস্পেক্টরের একেবারে সামনাসামনি পড়ে গেলুম।

কড়া সুরে উনি বললেন, ‘এ কী ব্যাপার, গোরিকভ? এখন ক্লাস চলছে আর তুমি ইশকুলের বাইরে যে?’

উত্তরটা যে কত হাস্যকর শোনাচ্ছে তা হিসেব না করেই যন্ত্রের মতো বললুম, ‘আমার অসুখ।’

‘অসুখ?’ ইনস্পেক্টর সন্দেহ প্রকাশ করলেন। ‘কী বলছ তুমি? অসুস্থ হলে লোকে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে না, বিছানায় শুয়ে থাকে।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের বায়োফার্মা উত্থান: ইভি শিল্পের সাফল্যের প্রতিধ্বনি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

ইশকুল (পর্ব-৫২)

০৮:০০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘না, ওসব কিছুটি করা চলবে না। বোস্ দেখি চুপ করে।’

নিঃশব্দে পাশের ঘরে ঢুকে আমি তানিয়ার মাথার রুমালটা নিয়ে ফিরে এলুম।

‘কই, প্র্যাটা আনলি না?’

‘বোকামো করিস না তো! প্র্যাম্ নিয়ে গিয়ে করবি কী শুনি? ইয়েগর মামা সত্যিকার গাড়িতে তোকে ঘুরিয়ে আনবেন, দেখিস।’

তেশা নদীর ধার ঘে’ষে ইভানো‌স্কোয়েতে যাবার পথ। বোনটা আমার সারাটা পথ নাচতে নাচতে চলল। আর মিনিটে মিনিটে থামতে লাগল, কখনও-বা গাছের ডাল কুড়োতে, আবার কখনও-বা হাঁসেদের জলে হুটোপাটি করা দেখতে। আর পেছনে পেছনে আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগলুম আমি। ভোরবেলার টাটকা বাতাস, হেমন্তের হলুদ-সবুজ মাঠের পর মাঠ, চরতে-ব্যস্ত গরুগুলোর গলায়-বাঁধা পেতলের ঘুন্টির একঘেয়ে টুংটাং আওয়াজ আমার শরীর-মন জুড়িয়ে দিল।

নাছোড়বান্দা যে-চিন্তা, যে-সন্দেহটা আমায় আগের সারা রাত জ্বালিয়েছে সেটা এখন মনের মধ্যে ভালো করে জে’কে বসল। আর সেটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টাও করলুম না।

জানলা দিয়ে ছুটে-আসা মাটির ঢেলাটার কথা মনে পড়ল আমার। ওটা হাওয়ায় উড়ে এসে পড়ে নি নিশ্চয়। বাগানের মাটি থেকে অত বড় একটা মাটির চাঙড় বাতাস কি অত ওপরে তুলতে পারে? ওটা নিশ্চয়ই বাবার কাজ, বাবা ওটা ছুড়েছিলেন আমাদের জানান দিতে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বাবা লুকিয়ে ছিলেন বাগানে, ফেস্কার চলে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। আমার বোন বাবাকে দেখুক, তাও উনি চান নি। কারণ বাচ্চা মেয়ে তো, ভয় ছিল সব জানাজানি করে দিতে পারে। যে-সব সৈন্য ছুটিতে বাড়ি আসে তারা এভাবে লোকের কাছ থেকে নিজেদের লুকিয়ে রাখে না।

তবে কি… নাঃ, এ-ব্যাপারে অন্য কোনোরকম ধারণা করার কোনো সুযোগ নেই। আমার বাবা ফৌজ থেকে পালিয়েছেন।

ফেরার পথে ইশকুল ইনস্পেক্টরের একেবারে সামনাসামনি পড়ে গেলুম।

কড়া সুরে উনি বললেন, ‘এ কী ব্যাপার, গোরিকভ? এখন ক্লাস চলছে আর তুমি ইশকুলের বাইরে যে?’

উত্তরটা যে কত হাস্যকর শোনাচ্ছে তা হিসেব না করেই যন্ত্রের মতো বললুম, ‘আমার অসুখ।’

‘অসুখ?’ ইনস্পেক্টর সন্দেহ প্রকাশ করলেন। ‘কী বলছ তুমি? অসুস্থ হলে লোকে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে না, বিছানায় শুয়ে থাকে।’