০৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
ভারতে লেন্সকার্টের শেয়ার বাজারে সূচনা দিনে পতন চীনের স্বনির্ভরতার নতুন অধ্যায় , নতুন কারখানা নির্মাণে ইয়াংজি মেমোরি টেকনোলজি রমজান ২০২৬: রোজা শুরু ফেব্রুয়ারি ১৭ থেকে ১৯-এর মধ্যে, ঈদুল ফিতর ২০ মার্চ হাটহাজারীতে ২৪ ঘণ্টায় তিন অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার: এলাকায় চাঞ্চল্য বিশ্ববাজারে শেয়ারমূল্য বৃদ্ধি: মার্কিন সরকারের শাটডাউন সমাপ্তির আশায় উল্লাস, প্রযুক্তিখাতে উদ্বেগ অব্যাহত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন হবে না: জামায়াত আমিরের ঘোষণা বিদেশগামী শ্রমিকদের কল্যাণে গালফ প্রদেশ কাউন্সিল ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠক কৃষিজমি রক্ষায় জরুরি আইন প্রণয়নের আহ্বান ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী: পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব কাঠামোয় কীভাবে বড় পরিবর্তন আনবে ভারতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার নতুন পরিকল্পনা, ডিসেম্বরে আসছেন পুতিন

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ০৫)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • 62

ম্যাকসিম গোর্কী

আট

আজকে গ্র্যাণ্ড ডিউক নিকোলাই মাইকেলোভিচ টলস্টয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁকে দেখে বুদ্ধিমান মনে হোলো। তাঁর আচায় ব্যবহারে নম্র দীনতা রয়েছে, তিনি স্বল্পভাষী। চোখদুটিতে সহানুভূতি ত মাখানো। । সুন্দর সুঠাম দেহ; ভাবভংগীতে একটি প্রশান্ত ভাব। লিও নিকোলাইয়েভিচ তাঁর পানে তাকিয়ে সস্নেহ গম্ভীর হ সি হাসলেন, কখনো ফরাসী ভাষায়, কখনো বা ইংরেজিতে কথা বলতে লাগলেন। রুশ ভাষায় বললেন: “কারামজিন লেখেন জারের জন্যে। সলোভিয়ভের রচনা যেমন দীর্ঘ, তেমনি নীরস।

ক্লুচেভ স্কি লেখেন তাঁর নিজের খুশীতে। ক্রুচেভস্কি ভারী ধূর্ত মানুষ, প্রথমে আপনার মনে হবে, তিনি বুঝি আপনার প্রশংসা করছেন, কিন্তু আরো যখন পড়তে থাকবেন, তখন দেখবেন তিনি নিন্দাই করছেন।” কে যেন জাবিয়েলিনের নামটা উল্লেখ করলেন। “জাবিরেলিন, চমৎকার মানুষ। সখের সংকলয়িতা; কাজে আসুক, না আসুক, যা পান তাই তিনি সংকলন ক’রে রাখেন। খাদ্য সম্বন্ধে তিনি এমন বর্ণনা দেন যে কখনো ভালো ক’রে দুটি খেতে পেয়েছেন মনে হয় না। তবু ভারী মজা লাগে তাঁর লেখা পড়তে।”

নয়

তাঁকে দেখে আমার সেই দণ্ডপাণি তীর্থযাত্রীদের কথা মনে পড়ে, যাঁরা পৃথিবীর বুকে পদব্রজে এক আশ্রম থেকে অন্য আশ্রমে, এক ঋষির অস্থি-অবশেষ থেকে অন্য ঋষির অস্থি অবশেষে, সবার কাছে গৃহহীন ও পরিচয়হীন প্রবাসী হ’য়ে সহস্র সহস্র মাইল পথ অতিক্রমণ করছেন। তাঁদের জন্য পৃথিবী নয়, ভগবানও নয়। তাঁরা অভ্যাস- বশে ভগবানের উপাসনা করেন; কিন্তু গোপনে অন্তরের অন্তর থেকে তাঁরা তাঁকে করেন ঘৃণা-আক্রোশ ভরে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি তাঁদের পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত এমনভাবে খেদিয়ে নিয়ে চলেছেন? কেন?

মানুষের দল যেন সমস্ত পথের উপর গাছের গুড়ি, গাছের শিকড়, কিম্বা পাথরের মতো ছড়িয়ে রয়েছে। লোকে তাদের উপর অতর্কিতে এসে পড়ে, কখনো বা তাদের কাছে আঘাতও পায়। অন্যান্য মানুষকে বাদ দিয়ে মানুষের চলে। কিন্তু কোনো মানুষের সংগে তার নিজের কোনো সাদৃশ্য যে নেই, এই কথা ঘোষণা ক’রে অপরকে চমকে দিতেও মানুষের বেশ লাগে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতে লেন্সকার্টের শেয়ার বাজারে সূচনা দিনে পতন

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ০৫)

০৩:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

আট

আজকে গ্র্যাণ্ড ডিউক নিকোলাই মাইকেলোভিচ টলস্টয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁকে দেখে বুদ্ধিমান মনে হোলো। তাঁর আচায় ব্যবহারে নম্র দীনতা রয়েছে, তিনি স্বল্পভাষী। চোখদুটিতে সহানুভূতি ত মাখানো। । সুন্দর সুঠাম দেহ; ভাবভংগীতে একটি প্রশান্ত ভাব। লিও নিকোলাইয়েভিচ তাঁর পানে তাকিয়ে সস্নেহ গম্ভীর হ সি হাসলেন, কখনো ফরাসী ভাষায়, কখনো বা ইংরেজিতে কথা বলতে লাগলেন। রুশ ভাষায় বললেন: “কারামজিন লেখেন জারের জন্যে। সলোভিয়ভের রচনা যেমন দীর্ঘ, তেমনি নীরস।

ক্লুচেভ স্কি লেখেন তাঁর নিজের খুশীতে। ক্রুচেভস্কি ভারী ধূর্ত মানুষ, প্রথমে আপনার মনে হবে, তিনি বুঝি আপনার প্রশংসা করছেন, কিন্তু আরো যখন পড়তে থাকবেন, তখন দেখবেন তিনি নিন্দাই করছেন।” কে যেন জাবিয়েলিনের নামটা উল্লেখ করলেন। “জাবিরেলিন, চমৎকার মানুষ। সখের সংকলয়িতা; কাজে আসুক, না আসুক, যা পান তাই তিনি সংকলন ক’রে রাখেন। খাদ্য সম্বন্ধে তিনি এমন বর্ণনা দেন যে কখনো ভালো ক’রে দুটি খেতে পেয়েছেন মনে হয় না। তবু ভারী মজা লাগে তাঁর লেখা পড়তে।”

নয়

তাঁকে দেখে আমার সেই দণ্ডপাণি তীর্থযাত্রীদের কথা মনে পড়ে, যাঁরা পৃথিবীর বুকে পদব্রজে এক আশ্রম থেকে অন্য আশ্রমে, এক ঋষির অস্থি-অবশেষ থেকে অন্য ঋষির অস্থি অবশেষে, সবার কাছে গৃহহীন ও পরিচয়হীন প্রবাসী হ’য়ে সহস্র সহস্র মাইল পথ অতিক্রমণ করছেন। তাঁদের জন্য পৃথিবী নয়, ভগবানও নয়। তাঁরা অভ্যাস- বশে ভগবানের উপাসনা করেন; কিন্তু গোপনে অন্তরের অন্তর থেকে তাঁরা তাঁকে করেন ঘৃণা-আক্রোশ ভরে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি তাঁদের পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত এমনভাবে খেদিয়ে নিয়ে চলেছেন? কেন?

মানুষের দল যেন সমস্ত পথের উপর গাছের গুড়ি, গাছের শিকড়, কিম্বা পাথরের মতো ছড়িয়ে রয়েছে। লোকে তাদের উপর অতর্কিতে এসে পড়ে, কখনো বা তাদের কাছে আঘাতও পায়। অন্যান্য মানুষকে বাদ দিয়ে মানুষের চলে। কিন্তু কোনো মানুষের সংগে তার নিজের কোনো সাদৃশ্য যে নেই, এই কথা ঘোষণা ক’রে অপরকে চমকে দিতেও মানুষের বেশ লাগে।